জাহাঙ্গীর হোসেন, স্টাফ রিপোর্টার : শেরপুরের নকলায় স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষ্যে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় কতৃক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার ‘বীর নিবাস’ পাচ্ছেন প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা আক্রাম হোসেনের স্ত্রী অসচ্ছল সখিনা বেগম (৭০)।
সখিনা বেগমের বাড়ি উপজেলার ৪ নম্বর গৌড়দ্বার ইউনিয়নের গৌড়দ্বার গ্রামে।
২৬ জানুয়ারি বুধবার দুপুরে বীর নিবাস নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোস্তাফিজুর রহমান।
এসময় উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা শফিকুল ইসলাম জিন্নাহ, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল মুনসুর ও রহমত আলী, পৌর মেয়র হাফিজুর রহমান লিটন, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান সারোয়ার আলম তালুকদার, উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) আরেফিন পারভেজ, সমাজসেবা কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম, সু্বধিাভোগী সখিনা বেগম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
জানা যায় স্বাধীনতার পরবর্তী সময়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা আক্রাম হোসেন একটি কুঁড়েঘরে বাস করে মাছ ধরে তা বাজারে বিক্রি করে পরিবারপরিজন নিয়ে খেয়ে না খেয়ে মানবেতর জীবনযাপন করতেন। ২০০৮ সনে আক্রাম হোসেন মারা গেলে একমাত্র সন্তান মনোয়ারা বেগমকে (৩২) নিয়ে দু:খের সাগরে ভাসতে থাকেন সখিনা। তারপর স্বামীর মুক্তিযোদ্ধা ভাতা থেকে অল্প অল্প করে জমানো টাকা দিয়ে গৌড়দ্বার মৌজায় ৯ শতক জমি কিনলেও একটি ঘর করার মত সামর্থ ছিলনা সখিনার। একমাত্র মেয়ে মনোয়ারা বেগমের বিয়ে হয়েছে ময়মনসিংহের ফুলপুরের সিংহেশ্বর ভাটপাড়া গ্রামের দেলুয়ার হোসেনের (৪০) সাথে। কিন্তু স্বামীর আর্থিক দৈন্যদশার কারণে মনোয়ারা বর্তমানে মায়ের কাছেই থাকেন। দেলুয়ার নকলা পৌরশহরে একটি হোটেলে কাজ করেন। তাদের ঘরে রয়েছে লামিয়া আক্তার মীম নামে পাঁচ বছর বয়সী এক কন্যা সন্তান। মনোয়ারা নিরক্ষর হলেও সে তার মেয়েকে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করতে চান।
সখিনা বেগম জানান স্বামী মরার পর থেকে মাইয়াডারে নিয়া বহুত কষ্ট করছি। টেহার লাইগ্যা হেরে ইস্কলে দিবার পাইছি না। আইজ আল্লাহ আমগর দিকে ফিইরা চাইছে। শেকের বেডি শেক হাছিনার ঘরে থাইক্যা বাহি জীবনডা পার করবার চাই।
উপজেলা প্রকপ্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম বলেন উপজেলায় ৪৯ জন অসচ্ছল বীর মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা, প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বিধবা স্ত্রী ও সন্তানদের সামাজিক মর্যাদা বৃদ্ধি ও আর্থ-সামাজিক অবস্থান উন্নয়নের জন্য একটি করে একতলা পাকা ঘর নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। এসব ঘরে ২টি বেড, ১টি ড্রয়িং, ১টি ডাইনিং, ১টি কিচেন রুমসহ, ২টি টয়লেট ও ১টি সেমি বারান্দা থাকবে। ৭৩২ বর্গফুটের এ ঘরটি নির্মাণ খরচ ধরা হয়েছে ১৩ লক্ষ ৪৫ হাজার টাকা।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোস্তাফিজুর রহমান জানান ৪৯টি ঘরের মধ্যে প্রথম ধাপে গনপদ্দী, উরফা, গৌড়দ্বার, টালকী, চরঅষ্টধর, বানেস্বর্দী, পাঠাকাটা ও চন্দ্রকোনা ইউনিয়নে ১২টি ঘরের কাজ শুরু করা হয়েছে। দ্বিতীয় ধাপে আরও ৩৭টি ঘরের নির্মাণ কাজ শুরু করা হবে। কাজ শেষ হলে সেগুলো সু্বধিাভোগীদের মাঝে হস্তান্তর করা হবে বলে জানান মোস্তাফিজুর রহমান।