স্টাফ রিপোর্টার, নকলা : নরসিংদীর শিবপুর উপজেলার ইটাখোলা নামক স্থান থেকে ডাকাতি হওয়া ৬০ ড্রাম (১৫ হাজার লিটার) সয়াবিন তেলের মধ্যে তেল ভর্তি ২০টি ড্রাম ও বিক্রি হয়ে যাওয়া ৪০টি তেলের খালি ড্রাম শেরপুরের নকলা থেকে উদ্ধার এবং ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে নরসিংদী জেলা গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল।
২ মার্চ বুধবার রাতে নকলা থানা পুলিশের সহায়তায় নকলা পৌরশহরের উত্তর রাজার ওমামা অয়েল মিল থেকে এসব উদ্ধার এবং মিল মালিক ওয়ালি উল্লাহকে (৪৫) গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশ।
ওয়ালি উল্লাহ নকলা উপজেলার নকলা ইউনিয়নের নকলা উত্তর গ্রামের আব্দুল খালেকের পুত্র। সে জাতীয়পার্টি নকলা উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক বলে জানা গেছে।
গোয়েন্দা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) নজরুল ইসলাম জানান ৯ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ৮টার দিকে নারায়নগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার মোড়াপাড়া গঙ্গানগর এলাকার গে¬াবাল ইডিবেল অয়েল লিমিটেড থেকে ৬০ ড্রাম সয়াবিন তেল ভর্তি একটি ট্রাক ( নং – ঢাকা মেট্রো ট – ২৪ – ০৬১৩) কিশোরগঞ্জের বাজিতপুরের উদ্দেশ্যে রওয়ানা করে। তেলের মালিক ছিলেন বাজিতপুরের মিরাপুর গ্রামের গোলাপ মিয়ার পুত্র তেল ব্যবসায়ি মশিউর রহমান (৩১)।
রাত সাড়ে ১০টার দিকে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে নরসিংদীর শিবপুর উপজেলার ভৈরভ এলকায় মাইক্রোবাসে করে হাতে ওয়াকিটকি, সিগনাল লাইট, হ্যান্ডকাফসহ র্যাবের কটি পরিহিত ডাকাত দল তেলের ড্রাম বোঝাই ট্রাকটি তাদের নিয়ন্ত্রণে নেয়। এসময় তারা ট্রাকের চালক রফিকুল ইসলাম (৪২) ও হেলপার রানা মিয়াকে (২০) হাত-পা ও মুখ বেঁধে বেধম মারধর করে জোরপূর্বক মাইক্রোবাসে উঠিয়ে ট্রাকটি কিশোরগঞ্জের নান্দাইল হয়ে ১০ ফেব্রুয়ারি ভোরে নকলায় এনে ওমামা অয়েল মিলের মালিক ওয়ালি উল্লাহর কাছে তেলভর্তি ড্রামগুলো বিক্রি করে দেয়। পরবর্তীতে খালি ট্রাক এবং ট্রাকের চালক ও হেলপারকে টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলায় রাস্তার পাশে ফেলে মাইক্রোবাসে করে পালিয়ে যায় ডাকাতদল।
তেলের মালিক মশিউর রহমান বিষয়টি নিয়ে ১১ ফেব্রুয়ারি শিবপুর থানায় মামলা (নং-৮) করলে জড়িতদের গ্রেপ্তার ও তেল উদ্ধারের জন্য ২০ ফেব্রুয়ারি নরসিংদী জেলা গোয়ন্দা পুলিশের কাছে মামলাটি হস্তান্তর করেন আদালত।
পরবর্তীতে বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে আন্ত:জেলা ডাকাতদলের ৪ সদস্যকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশ এবং তাদের দেওয়া তথ্যমতে নকলায় ওমামা অয়েল মিল থেকে তেল ভর্তি ২০টি ড্রামসহ বিক্রি হয়ে যাওয়া ৪০টি তেলের খালি ড্রাম এবং মিল মালিক ওয়ালি উল্লাহকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশ।
গোয়েন্দা পুলিশের এসআই নজরুল ইসলাম আরও জানান গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় চুরি, ডাকাতি, ছিনতাইসহ একাধিক মামলা রয়েছে। তাদের সাথে ওমামা অয়েল মিল মালিক ওয়ালি উল্লাহর যোগসাজশ থাকায় প্রায়ই তারা চুরি-ডাকাতি করা তেল এখানে এনে বিক্রি করত।
ওমামা অয়েল মিল মালিক ওয়ালি উল্লাহ বলেন সয়াবিন তেল ভর্তি ড্রামগুলো তিনি বিক্রির জন্য কিনে ছিলেন। তবে ক্রয় সংক্রান্ত কোন কাগজপত্র তিনি দেখাতে পারেন নি।