স্টাফ রিপোর্টার : ময়মনসিংহের ধোবাউড়া থেকে অজ্ঞাত লাশের পরিচয় শনাক্ত করে ডিবি পুলিশ। একই সাথে হত্যায় জড়িত প্রধান আসামী আব্দুর রাজ্জাককে গাজীপুর থেকে বুধবার সন্ধ্যায় গ্রেফতার করে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ। গ্রেফতারকৃত রাজ্জাক প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যায় দায় স্বিকার করে বলে পুলিশ জানায়।
পুলিশ সুপার আহমার উজ্জামান জানান, গত ১৫ মার্চ জেলার ধোবাউড়ার টাংগাটি গোয়াতলা থেকে অজ্ঞাত তরুনির লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। লাশের পরিচয় সনাক্ত ও হত্যাকান্ডে জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতারে মামলাটি ডিবির কাছে হস্তান্তর করা হয়।
ডিবির ওসি সফিকুল ইসলাম জানান, হত্যাকান্ডের খবর পেয়েই পুলিশ সুপারের নির্দেশে ডিবি পুলিশ লাশ সনাক্ত করণে কাজ শুরু করে। লাশের পরিহিত প্যান্টের পকেটে পাওয়া জন্ম নিবন্ধনের ফটোকপি ও ব্যবহৃত মোবাইল ফোনের সুত্রধরে নিহত তরুনীর পরিচয় সনাক্ত করা হয়। নিহত তরুণীর নাম রিবা আক্তার (১৫)। সে নরসিংদীর মাধবদীর খিলাগাও গ্রমের দুলাল মিয়ার মেয়ে। দুলাল মিয়া গাছা এলাকার একজন অটো চালক।
ওসি আরো বলেন, গোপন সুত্রে খবর পেয়ে ডিবি পুলিশের একটি চৌকস টিম বুধবার সন্ধ্যায় মূল আসামী আব্দুর রাজ্জাককে গাজীপুরের গাছা এলাকা থেকে গ্রেফতার করে। সে ময়মনসিংহের ধোবাউড়ার টাংগা মধ্যপাড়া গ্রামের তৈয়ব আলীর ছেলে। গ্রেফতারকৃত রাজ্জাক পুলিশের কাছে জানায়, গাজীপুরের গাছা এলাকায় বসবাসকালীন সময়ে তরুনী রিবা আক্তারের সাথে সর্ম্পক গড়ে উঠে। রিবা আক্তারকে সংবাদকর্মীর চাকুরীর প্রলোভনে আব্দুর রাজ্জাক মন্ডল (৬০) ২ মাস পূর্বে রিবা আক্তারকে বিয়ে করে। রিবা আক্তার বিয়ের পরে রাজ্জাকের কাছে চাকুরী ও স্ত্রীর মর্যাদা পেতে চাপ দেয়।
অপরদিকে রাজ্জাকের সাথে তার সহোদর ভাই আমিনুল ইসলামের সাথে পৈত্রিক সম্পত্তি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধে সহোদর আমিনুল ইসলামকে হত্যা মামলার মত গুরুতর অপরাধে ফাঁসিয়ে দিতে এবং রিবা আক্তারের চাপ থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য তাকে হত্যার পরিকল্পনা করে। এ জন্য আমিনুলের সাথে জমিজমার বিরোধে জড়িত অপর দুইজনকে সাথে নিয়ে রাজ্জাক হত্যাকান্ডের পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনানুযায়ী ১৪ মার্চ আব্দুর রাজ্জাক রিবা আক্তারকে গাজীপুর থেকে ধোবাউড়ায় নিজ বাড়ীতে বেড়ানোর কথা বলে নিয়ে আসে। পরিকল্পনানুযায়ী ধোবাউড়ার গোয়াতলা কংশ নদীর তীরে দুই হত্যাকারীর কাছে রিবাকে হস্তান্তর করে। চক্রটি রিবাকে পালাক্রমে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধে হত্যা করে। হত্যার পর রিবার ব্যবহৃত মোবাইলটি রাজ্জাক নিয়ে যায়। এদিকে আমিনুল ও তার পরিবারের অন্যান্যদেরকে হত্যাকান্ডে ফাঁসাতে লাশের প্যান্টের পকেটে আমিনুল ইসলামের ছেলে শহিদুল্লার ও রিবার জন্ম সনদের ফটোকপি রেখে দেয়। পরে লাশ আমিনুলের বাড়ীর পাশের ধান ক্ষেতে রেখে পালিয়ে যায়। এ ব্যাপারে ধোবাউড়া থানার মামলা নং-০৮, তারিখ-১৬/০৩/২০২২ দায়ের হয়েছে। পুলিশ গ্রেফতারকৃত রাজ্জাকের কাছ থেকে রিবার মোবাইল উদ্ধার করেছে বৃহপতিবার রাজ্জাককে আদালতে পাঠিয়েছে পুলিশ। ওসি আরো জানান, হত্যাকান্ডে জড়িত অন্যান্যদের গ্রেফতারে চেষ্ঠা চলছে।