শাহ্ আলম ভূঁইয়া, নিজস্ব প্রতিবেদক, নান্দাইল থেকে:
স্বপ্নটা ভেঙে গেলো। একটি দুর্ঘটনা কেড়ে নিলো সব। স্বপ্ন ভাঙা পরিবারে এখন শোকের মাতম। লাশের অপেক্ষা। কিভাবে আসবে, কবে আসবে প্রবাসী মো. রাকিবের লাশ। জানে না পরিবার।
ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার জাহাঙ্গীরপুর ইউনিয়নের গাঙ্গিনাপাড় গ্রামের মো. চান মিয়া মাত্র ১৩ দিন আগে তার দ্বিতীয় ছেলে মো. রাকিবকে (২৪) সৌদি আরব পাঠান। ছেলেকে সৌদি আরব পাঠাতে চা বিক্রেতা বাবার খরচ হয়েছে সাড়ে তিন লাখ টাকা। টেনেটুনে ৫০ হাজার টাকা যোগাড় করলেও বাকি তিন লাখ টাকা ধারদেনা করতে হয়েছে তাকে।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, রাকিব সৌদি আরবের রিয়াদ পৌছার পর গত ১ জুন তাায়েফে রোড ক্লিনারের কাজ শুরু করে। এ তথ্য নিশ্চিত করে তার ছোট ভাই সাকিব। সাকিব জানান, গত রবিবার সকালে সর্বশেষ রাকিব ফোন করে পরিবারের সবার খোঁজখবর নিয়েছে। এর আগে তার বাবাকে ফোনে জানান, কোনো চিন্তা করো না, কাজ পেয়েছি, মাস শেষে বেতন পেয়েই বাড়িতে টাকা পাঠাবো। ছেলের কথায় বাবার মন ভরে উঠে।
কিন্তু ওই পরিবারের সুখের আমেজে বিষাদ নেমে আসে সৌদি আরব থেকে আসা একটি ফোন পেয়ে। সৌদি প্রবাসী এক বাঙ্গালি রাকিবের বাড়িতে ফোন করে জানান, রবিবার দুপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছে রাকিব। এমন সংবাদে প্রস্তুত ছিল না পরিবারের লোকজন। মাথায় যেন তাদের আকাশ ভেঙে পড়লো। চুরমার হয়ে গেলো তাদের সব আশা, স্বপ্ন।
দেড় বছরের শিশু পুত্র তাসিনকে নিয়ে বিধবা হলো রাকিবের স্ত্রী তানজিনা আক্তার। মা রেজিয়া খাতুনের আর্তনাদ আমার বাবার মুখটা দেখতে চাই। নিজের মাটিতে তাকে কবর দিতে চাই।
শোক শুধু ওই পরিবারে নয়, গোটা এলাকায় বিরাজ করছে।
শোকাহত পরিবারটি এখন তাদের প্রিয় রাকিবুলের লাশের অপেক্ষার প্রহর গুনছে।