ধোবাউড়ায় পাহাড়ি ঢলে প্লাবিত ৫টি ইউনিয়নের শতাধিক গ্রাম

আর্তনাদ করছে পানিবন্দী হাজারও পরিবার

প্রকাশিত: ৮:৫১ অপরাহ্ণ, জুন ১৮, ২০২২

ধোবাউড়া( ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি :
ময়মনসিংহের ধেবাউড়ায় টানা বর্ষনে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে বন্যার দেখা দিয়েছে। এতে উপজেলার পাচটি ইউনিয়নের প্রায় শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।

দক্ষিণ মাইজপাড়া ইউনিয়নের খাগগড়া নামক স্থানে নিতাই নদীর ভাঙ্গনে বীর মুক্তিযোদ্ধা মোকশেদ আলীর বাড়িসহ একাধিক বাড়ি পানিতে ভেসে গেছে। রক্ষা পাইনি এই বাড়িতে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয় কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন বীর নিবাসটিও, যা প্রায় ৮০ শতাংশ কমপ্লিট হয়েছিল। এই ভাঙ্গনে এলাকার প্রায় দশটি পরিবারের ব্যাপক ক্ষতির পাশাপাশি পাচটি টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এছাড়াও ২নং গামারিতলা ইউনিয়নের কামালপুর গ্রামে নিতাই নদীর ভাঙ্গনে প্রায় বিশটি পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

নদীর বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে প্রবল শ্রুতে পানি প্রবেশ করছে নিচু এলাকায় । এতে ঢলের পানিতে প্লাবিত হচ্ছে উপজেলার প্রতিটি গ্রাম । পানিবন্দী হয়ে পড়ছে হাজার হাজার পরিবার। এতে পানিবন্দী অবস্থায় দিন কাটছে সাধারণ কেটে খাওয়া শ্রমজীবী মানুষের। অনেকের ঘরে পানি থাকায় রান্নাবান্না করতে পারছেনা। শুকনো খাবার খেয়ে দিন কাটছে তাদের।

সরেজমিনে গিয়ে স্থানীয়দের কাছ থেকে জানা যায়, শুক্রবার বিকালে উপজেলার দক্ষিণ মাইজপাড়া ইউনিয়নের খাগগড়া গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা মোকশেদ আলীর বাড়ির পাশে,গামারিতলা ইউনিয়নের কামালপুর গ্রামে নিতাই নদীর বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে প্রবল বেগে স্ব স্ব শব্দে পানি ঢুকছে নিচু এলাকায়।

ফলে উপজেলার পোড়াকান্দুলিয়া, দক্ষিণ মাইজপাড়া, গামারিতলা, গোয়াতলা, ধোবাউড়া সদর, বাঘবেড় ইউনিয়নে শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। কয়েক হাজার পরিবার পানিবন্দী অবস্থায় রয়েছে। নিজের জীবনের পাশাপাশি গবাদি পশু নিয়ে পড়েছে বেকায়দায়। ঢলের পানিতে তলিয়ে ভেসে গেছে অসংখ্য পুকুরের মাছ।

তারানগর গ্রামের নজরুল ইসলাম বলেন বন্যার পানিতে আমরা গৃহবন্দী হয়ে আছি, ঘরে চুলা পানির নিচে রান্না করা য়ায না, বাচ্চাদের নিয়ে শুকনো খাবার খেয়ে কোনরকম বেচে আছি।

বেদগাছিয়া গ্রামের সবুজ মিয়া বলেন, আমরা যে কি কষ্টে আছি এটা বলার মত কোন ভাষা নেই, ঘরের মধ্যে পানি।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ইশতিয়াক হোসাইন উজ্জ্বল বলেন বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয় কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন একটি বীর নিবাস মুক্তিযোদ্ধা মোকশেদ আলীর পরিবারকে দেওয়া হয়েছিলো , যা প্রায় ৮০ শতাংশ কমপ্লিট হয়েছিল, দরজা জানালার কাজ চলমান ছিলো। দুঃখের বিষয় পাহাড়ি ঢলে বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে বীর নিবাসটিও নদীগর্ভে চলে গেছে।

এব্যাপারে উপজেলা চেয়ারম্যান ডেভিড রানা চিসিম ও নির্বাহী অফিসার ফোজিয়া নাজনীন জানান, জেলা প্রশাসকের কাছ থেকে আমরা ইতিমধ্যে বন্ধ্যার্তদের জন্য দশ মেট্রিকটন চাল ও একলক্ষ টাকা পেয়েছি, আগামীকাল থেকে শুকানো খাবার, দুটি করে মোমবাতি, পানি পরিষ্কারের ট্যাবলেট সহ ত্রাণ বিতরণ করা হবে।