শাহ্ আলম ভূঁইয়া, নিজস্ব প্রতিবেদক, নান্দাইল থেকে :
মাথার ব্যান্ডেজে লেখা ‘হাড় নেই, চাপ দেবেন না’! গুরুতর আহত সেই আশরাফুল ইসলাম জীবন- মৃত্যুর সাথে লড়াই করে অবশেষে হেরে গেলো।
৮ দিন চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার দিবাগত রাত দেড়টায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান তিনি।
ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার গাংগাইল ইউনিয়নের পূর্ব অরণ্যপাশা গ্রামে তার বাড়ি। আহত আশরাফুল (২০) স্থানীয়ভাবে একটি চায়ের দোকান চালানোর পাশাপাশি একটি কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী।
বিগত শনিবার (১৮ জুন) বিকালে বাড়ির পাশের এক জলাশয়ে ছোট মাছ ধরা নিয়ে আশরাফুলের ছোট ভাই মাসুদের সাথে একই বাড়ির নবী হোসেনের ছোট ছেলে জুনায়েদের ঝগড়া ও হাতাহাতি হয়।
এক পর্যায়ে এ নিয়ে মাসুদের বড় ভাই আশরাফুল ঘটনাস্থলে গেলে প্রতিপক্ষ নবী হোসেন (৬৫) ও তার ছেলে সুমন মিয়া, রুবেল, রিপন, জুনাইদ সহ অন্যান্যরা ধারালো দা, শাবল ও লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা চালায়। উপর্যুপরি আক্রমণে আশরাফুল মাথা সহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুরুতর জখম হয়। এ সময় মাসুদকে কুপিয়ে মারাত্মক আহত করা হয়।
উন্নত চিকিৎসার জন্য আশরাফুলকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে স্থানান্তর করা হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। এরপর অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে মাথা থেকে আশরাফুলের খুলি আলাদা করে ব্যান্ডেজ করা হয়। আলাদা করা খুলি সংরক্ষণ করা হয় সাভারের একটি ল্যাবরেটরিতে। তার মাথায় ৪৪টার মত সেলাই দেওয়া হয়েছিল। তখন চিকিৎসকরা জানিয়েছিলেন ৩ মাস পরে অবস্থার উন্নতি হলে আবার অস্ত্রোপচার করে তার খুলি সংযুক্ত করা হবে। এরমধ্যে আহত হয়ে আশরাফুলের ছোট ভাই মাসুদও ময়মনসিংহ মেডিকেলে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
সরজমিন গিয়ে জানা যায়, ঘটনার পরদিন রাত থেকে নবী হোসেন সহ তার পরিবারের লোকজন ঘরের দরজায় তালা লাগিয়ে সবাই বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র চলে গেছেন।
নান্দাইল মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মিজানুর রহমান আকন্দ জানান, এ ঘটনায় গত ২৩ জুন ৭ জনকে আসামি করে থানায় মামলা হয়েছে। তার মধ্যে রুবেল মিয়া নামে এক আসামি গ্রেফতার করা হয়েছে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় আশরাফুল মারা যাওয়ায় এখন ওই মামলাটিই হত্যা মামলা হিসেবে রূপান্তরিত হবে।