কেন্দুয়া (নেত্রকোণা) প্রতিনিধি :
নেত্রকোণার কেন্দুয়ায় নয়ন মিয়া নামে এক স্কুল শিক্ষার্থীকে নৃশংস খুন হয়েছে।
এঘটনাটি রোববার (৬ নভেম্বর) রাতে কেন্দুয়া উপজেলার পানগাও গ্রামে ঘটে।
খবর পেয়ে রোববার সকালে পানগাও গ্রামের মঞ্জু মিয়ার নির্মাণাধীন বাড়ি থেকে নিহত নয়নের মৃতদেহ উদ্ধার করে থানা পুলিশ।
নিহত নয়ন মিয়া (১২) পানগাও গ্রামের অটোচালক ওয়াদুদ মিয়ার ছেলে ও স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র।
পুলিশ ও পরিবার সুত্রে জানা যায়, শনিবার সন্ধা রাতে জীবিকা তাগিদে নিহতের নয়নে বাবা ছিলেন
বাড়ির বাহিরে আর মা পোষাক কর্মী ছিলেন বাপের বাড়িতে। নয়ন মিয়া সন্ধা রাতে গোয়াল ঘরে কয়েল জ্বালানোর সময় প্রতিবেশী সবুজ মেম্বারের ছেলে মোরশাহীদ ওরফে মোজাহিদ ডেকে নিয়ে যায়। রাতে বাবা ওয়াদুদ মিয়া বাড়ি এসে গভীর রাত পর্যন্ত ছেলেকে খোঁজাখুঁজি না পেয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। সকালে প্রতিবেশি ডাক-চিৎকার শুনে ঘটনাস্থলে গিয়ে ওয়াদুদ মিয়া তাঁর ছেলেকে রক্তাক্ত অবস্থায় মৃত পায়। খবর পেয়ে সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যান কেন্দুয়া সার্কেল এসএসপি জোনাঈদ আফ্রাদ ও ওসি আলী হোসেন। ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধারসহ সুরতহাল রিপোর্ট তৈরী করে নেত্রকোণা মর্গে পাঠায় পুলিশ। নিহতের শরীরের বিভিন্ন স্থানে ধারালো অস্ত্রের আঘাতসহ পায়ে রগ কাটা রয়েছে। শিশু নয়নের মৃত্যুতে এলাকায় শোকের আবহ বইছে। একমাত্র পুত্র সন্তানকে হারিয়ে বার বার মুর্ছা যাচ্ছেন গর্ভধারিণী মা। মা-বাবার আহাজারিতে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ছেন প্রতিবেশি ও স্বজননা।
এব্যাপারে নিহতের দাদী জোহুরা খাতুন ও বোন সেতু বলেন,নয়ন মিয়া সন্ধা রাতে গোয়াল ঘরে কয়েল জ্বালানোর সময় প্রতিবেশী সবুজ মেম্বারের ছেলে মোরশাহীদ ওরফে মোজাহিদ এসে ডেকে নিয়ে যায়। রাতে আর বাড়ি ফেরেনি। রাতে তাকে অনেক খোঁজাখুঁজি করেও পাওয়া যায়নি। নিহত নয়নকে ডেকে নিয়ে যাওয়ার সময় তাঁর বোন তাকে ভাত খেয়ে যাওয়ার জন্য বলে ছিলেন জানিয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন তারা। জোহুরা খাতুন আরো বলেন, সবুজ মেম্বার গংদের সাথে পূর্বের একটি খুনের ঘটনায় নিয়ে বিরোধ চলছিল তাদের। আমি ছিলাম ওই মামলার সাক্ষী। আমার নাতিকে বিভিন্ন সময়ে সবুজ মেম্বার ছেলে ভয়ভীতি ও মারধোর করিত। এ নিয়ে সবুজ মেম্বার ও তার স্ত্রী কাছে কয়েকবার বিচারপ্রার্থী হয়েছেন বলে জানান জোহুরা খাতুন। নিহতের বাবা ওয়াদুদ মিয়া জানান,রাতে বাড়িতে এসে সম্ভব্য বিভিন্ন স্থানে অনেক রাত পর্যন্ত খোঁজাখুঁজি করেছি। কোথাও না পেয়ে ভাবছি কারো ঘরে শুয়েছে অথবা মার কাছে চলে গেছে এই ভেবে আমিও শুয়ে পড়ি। সকালে মানুষের ডাক-চিৎকার শুনে গিয়ে আমার ছেলের রক্তাক্ত মৃতদেহ দেখতে পাই। মাথা,শরীরের বিভিন্ন স্থান আঘাতসহ ডান পায়ের রগ কেটে দেয় হত্যাকারীরা। আমার ছেলে এমন কি অপরাধ করেছিল এভাবে হত্যা করতে হবে? প্রতিবেদকের কাছে এমন প্রশ্ন রেখে তিনি তাঁর ছেলে হত্যার দৃষ্টান্তমূলক বিচার চান। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম বাঙ্গালী জানান,এটি একটি নৃশংস হত্যাকান্ড। আমি এই হত্যাকান্ডের দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই। এব্যাপারে কেন্দুয়া থানা ওসি আলী হোসেন জানান,মৃতদেহ উদ্ধারসহ সুরতহাল করে ময়নাতদন্তের জন্য নেত্রকোণা মর্গে পাঠানো হয়েছে। এটি হত্যাকান্ড।
মৃতদেহে অনেকগুলো ধারালো অস্ত্রের আঘাত রয়েছে। নিহত ছেলেটি স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র। খুনিদের ধরতে এলাকায় অভিযান চলছে বলেও জানান তিনি।