স্টাফ রিপোর্টার : ময়মনসিংহ জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) অভিযানে আন্তঃ জেলা গরুচোর চক্রের ৫ সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে ৭টি চোরাই গরু উদ্ধার ও চোরাই গরু বহনে ব্যবহৃত ২টি পিক-আপ উদ্ধার করা হয়েছে। বুধবার নান্দাইলসহ পৃথক এলাকা থেকে তাদেরকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
ডিবির ওসি সফিকুল ইসলাম জানান, গত ২৯ মে গভীর রাতে ভালুকার জামিরদিয়া এলাকার বেলেজিং ইনভেস্টমেন্ট প্রজেক্ট নামক একটি ডেইরী ফার্মে ১০ টি গরু চুরির ঘটনা ঘটে। এ ব্যাপারে ভালুকা মডেল থানায় মামলা নং-৬৫, তারিখ-৩০/০৫/২০২৩ ধারা-৪৫৭/৩৮০ পেনাল কোড রুজু হয়। গরু চুরির সংবাদ পেয়ে দ্রুততার সাথে চোরাই গরু উদ্ধার ও জড়িতদের গ্রেফতারের জন্য পুলিশ সুপার মাছুম আহাম্মদ ভুঞা এর নির্দেশে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের একটি চৌকস টিমকে দায়িত্ব প্রদান করা হয়। ডিবির টিম ধারাবাহিক অভিযান পরিচালনা করে বুধবার জেলার নান্দাইলের কানারামপুর থেকে গরুচোর দলের মূলহোতা রাজীব হোসেন সবুজকে গ্রেফতার করে। সবুজের দেয়া তথ্য মতে কিশোরগঞ্জ সদর থানা এলাকা থেকে একই দিন গভীর রাতে বেলেজিং ইনভেস্টমেন্ট প্রজেক্টের চুরি যাওয়া ৭ টি গরু উদ্ধার এবং কাইয়ুম নামক এক গরু চোরকে গ্রেফতার করে।
পুলিশ আরো জানায়, আন্তঃজেলা গরু চোর চক্রের সদস্য সবুজ ও কাইয়ুমকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, সবুজ ২০ মে কিশোরগঞ্জ কারাগার থেকে গরু ভর্তি ট্রাক ডাকাতি মামলায় জামিনে মুক্ত হয়েই গরুচোর চক্র গঠন করে।বিভিন্ন এলাকায় ছদ্দবেশে ডেইরী ফার্ম ঘুরে ঘুরে গরু চুরির পরিকল্পনা চুড়ান্ত করে এবং পরিকল্পনা অনুযায়ী ২৮ মে রাত প্রায় সাড়ে ১১টায় সবুজের নেতৃত্বে ৯ জন আন্তঃজেলা গরুচোর দুটি পিক-আপভ্যান এবং গৃহ ও দেয়াল ভাঙ্গার বিভিন্ন ধরনের যন্ত্রপাতি-সরঞ্জামাদিসহ ভালুকার জামিরদিয়া এলাকায় আসে।চক্রের সদস্যরা পিক-আপভ্যানসহ ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে অবস্থান করে রাস্তাঘাট নির্জন হওয়ার অপেক্ষা করে। রাতের গভীরতায় রাস্তঘাট নির্জন হলে ২৯ মে রাত প্রায় আড়াইটায় বেলেজিং ইনভেস্টমেন্ট প্রজেক্টে গিয়ে প্রথমে দেয়াল ভেঙ্গে চোরেরা প্রবেশ ও গরু নিয়ে বের হওয়ার পথ তৈরী করে। ডেইরী ফার্মে প্রবেশ করে ১০ টি গরু নিয়ে দুটি পিক-আপ ভ্যানে তুলে কিশোরগঞ্জ জেলা সদর থানা এলাকায় নিয়ে যায়। ডিবির অভিযান দল ধারাবাহিক অভিযান পরিচালনা করে গাজীপুরের কাপাসিয়া এলাকা থেকে গরু বহনে ব্যবহৃত ১টি পিক-আপ সহ মোঃ নাহিদ হোসেনকে, ভালুকার মাস্টারবাড়ী এলাকা থেকে দ্বীন ইসলামকে এবং জামালপুর ও বগুড়ার সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে খাইরুলকে ১টি পিক-আপসহ গ্রেফতার করে।
পুলিশ আরো জানায়,
গ্রেফতারকৃত আসামি রাজিব হাসান সবুজের বিরুদ্ধে ৫টি গরু চুরি এবং ১টি গরু ডাকাতি মামলা, কাইয়ুমের বিরুদ্ধে ২টি গরুভর্তি ট্রাক ডাকাতি এবং ১টি গরু চুরি মামলা, নাহিদের বিরুদ্ধে ২টি গরু চুরি ও ১টি মাদক মামলা, দ্বীন ইসলামের বিরুদ্ধে ১টি মাদক মামলা এবং খায়রুলের বিরুদ্ধে ১টি গরু ডাকাতি ও ১টি মাদক মামলা রয়েছে। পলাতক অন্যান্য গরুচোরদের গ্রেফতার ও অবশিষ্ট চোরাই গরু উদ্ধারের জন্য একাধিক ডিবি টিম অভিযান পরিচালনা করছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।