মনিরুজ্জামান খান মনির ভালুকা থেকে : ময়মনসিংহ জেলার ভালুকায় ৪ জুলাই মঙ্গলবার পৃথক পৃথক স্থান থেকে একই রশিতে মা- মেয়ের ঝুলন্ত লাশ সহ ৫জনের মরদেহ উদ্ধার করেছে ভালুকা মডেল থানা ও ভরাডোবা হাইওয়ে পুলিশ।
ময়মনসিংহের ভালুকায় মা-মেয়ে ও মাদরাসা পড়ূয়া এক কিশোরের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে মডেল থানা পুলিশ। মঙ্গলবার (৪ জুলাই) সকালে পৃথক স্থান থেকে ওই তিনজনের লাশ উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মাগুরা জেলার বাহারবাগ গ্রামের জাহিদ হাসানের স্ত্রী সিনথিয়া আক্তার (২৭) ও সাড়ে তিন বছরের শিশু কন্যা আয়েশাকে নিয়ে উপজেলার জামিরদিয়া দক্ষিণপাড়ার একটি বাসায় ভাড়ায় থেকে পিএ নিট ওয়্যার লিমিটেড নামে একটি কারখানায় সুপারভাইজার পদে চাকরী করতেন। পারিবারিক কলহের জের ধরে সোমবার (৩ জুলাই) রাতে ঘরের ফ্যানের হুকের সাথে রশি পেঁচিয়ে মা ও মেয়ে আত্মহত্যা করেছে। ৯৯৯ নম্বরে খবর পেয়ে পুলিশ দুপুরে নিহত মা মেয়ের লাশ উদ্ধার করে মর্গে প্রেরণ করে।
শুকাতে গিয়ে দু’তলা ভবনের ছাদ থেকে পড়ে নুরুন্নাহার (৪৫) নামে এক গার্মেন্টকর্মীর মৃত্যু হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার (৪ জুলাই) সকালে উপজেলার কাশর গ্রামে। নিহত নুরুন্নাহার ময়মনসিংহের তারাকান্দা উপজেলার আব্দুল মালেকের স্ত্রী।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ময়মনসিংহের তারাকান্দা উপজেলার আব্দুল মালেকের স্ত্রী নুরুন্নাহার ভালুকা উপজেলার কাশর গ্রামে ভাড়া বাসায় থেকে স্থানীয় এ্যাডভান্স ফ্যাক্টরীতে চাকরী করতেন। মঙ্গলবার সকালে তিনি বাসার ছাদে কাপড় শুকাতে গিয়ে অসাবধনাতাবসত দু’তলার ছাদ থেকে নিচে পড়ে গিয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান। পুলিশ নিহতের লাশটি উদ্ধার করে মর্গে প্রেরণ করেছে।
ভালুকা মডেল থানার পরিদর্শক (ওসি) কামাল হোসেন জানান, নিহতের লাশটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।
ময়মনসিংহের ভালুকায় রাস্তাা পারাপারের সময় যাত্রীবাহি বাসচাপায় প্রান্ত ঘোষ (২২) নামে এক গার্মেন্টকর্মী নিহত হয়েছেন। ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল (৪ জুলাই) মঙ্গলবার সকালে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে উপজেলার মেহেরাবাড়ি নামক স্থানে। নিহত প্রান্ত ঘোষ হালুয়াঘাট উপজেলার হাপানিয়া গ্রামের পরিমল ঘোষের ছেলে। তিনি নারায়নগঞ্জে একটি কারখানার শ্রমিক ছিলেন।
ভরাডোবা হাইওয়ে ফাঁড়ির ইনচার্জ রিয়াদ মাহমুদ জানান, ঘটনার সময় উপজেলার মেহেরাবাড়ি এলাকায় প্রান্ত ঘোষ নামে এক ব্যক্তি রাস্তা পাড় হচ্ছিলেন। এ সময় ঢাকাগামী সৌখিন পরিবহণের একটি যাত্রীবাহি বাস তাকে চাপা দিলে ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান। লাশটি উদ্ধার করে ফাঁড়িতে রাখা হয়েছে এবং পরিবারের সাথে যোগাযোগ করা হচ্ছে।
অপরদিকে একইদিন দুপুরে আব্দুল্ল্যাহ (১০) নামে এক মাদরাসার হিফজ পড়ূয়া কিশোরের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহত আব্দুল্লাহ উপজেলার ডাকাতিয়া বিন্নরীপাড়ার আনোয়ার খানের ছেলে। নিহত আব্দুল্লাহ পাশের সখিপুর উপজেলার আড়াইপাড়া এলাকায় একটি মাদরাসায় হিফজ বিভাগের ছাত্র ছিলো।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ডাকাতিয়া বিন্নরীপাড়ার আনোয়ার খানের বড় ছেলে হুজাইফার সাথে ছোট ছেলে আব্দুল্লাহর মোবাইলে গেইম খেলা নিয়ে সকালে কথাকাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে আব্দুল্লাহ বসতঘরের আড়ার সাথে গলায় গামছা পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করে। খোঁজ পেয়ে পরিবারের লোকজন ঝুলন্ত অবস্থা থেকে আব্দুল্লাহকে নামিয়ে ফেলে। পরে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে এবং পরিবারের আবেদনের প্রেক্ষিতে ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশ হস্তান্তর করা হয়।