নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে বিনিয়োগের দাবীতে ময়মনসিংহে নাগরিক সমাবেশ অনুষ্ঠিত

জি-২০ সম্মেলন ও জ্বালানি নিরাপত্তা সপ্তাহ ২০২৩ উপলক্ষ্যে

প্রকাশিত: ৮:৪৩ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ৭, ২০২৩

স্টাফ রিপোর্টার ঃ ময়মনসিংহের শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীন পার্কে ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টায় মাটি বাংলাদেশ, ক্লাইমেট চেঞ্জ নেটওয়ার্ক অব গ্রেটার ময়মনসিংহ (সিসিএনজিএম), কোস্টাল লাইভ লিহুড এন্ড এনভাইরনমেন্টাল একশন নেটওয়ার্ক (ক্লিন) এবং বাংলাদেশ ওয়ার্কিং গ্রুপ অন এক্সটারনালডেব্ট (বিডব্লিউজিইডি)- এর যৌথ উদ্যোগে এক ব্যাতিক্রমধর্মী নাগরিক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সভাবেশে সর্বস্তরের শতাধিক মানুষ অংশ গ্রহণ করেন।


সমাবেশে বক্তারা বলেন, বৈশ্বিক উষ্ণায়নের ফলে জলবায়ু পরিবর্তন এখন বিশ্বব্যাপী নতুন বাস্তবতা। এই গ্রিনহাউজ গ্যাস নিঃসরণের ফলে বৈশ্বিক উষ্ণায়ন আজ ভয়াবহ অবস্থায় পৌছেছে যা আমাদের পৃথিবীর মানব জাতিসহ গোটা জীবজগতের অস্তিত্বকে সংকটাপন্ন করে তুলেছে। বিশ্বে মোট গ্রিনহাউজ গ্যাস নিঃসরণের প্রায় ৭৫-৮০% শতাংশই জি-২০ গ্রুপের সদস্য দেশগুলো করে থাকে। কাজেই, কার্বন নিঃসরণ এবং বৈশ্বিক তাপমাত্রা হ্রাস করণে জি-২০ দেশগুলোর ভূমিকাই সর্বাধিক। জলবায়ু পরিবর্তনে অত্যন্ত ক্ষতিগ্রস্তদেশ হিসেবে বাংলাদেশের মত দেশগুলোতে ক্ষতি পূরণ দিতে এসব দেশ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। কাজেই আসন্ন জি-২০ সম্মেলনে নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে বিনিয়োগের দাবী জোড়েশোড়ে তোলা প্রয়োজন।
আমাদের দেশের মোট বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতার ৮২ শতাংশই গ্যাস, করলা ও ডিজেল ভিত্তিক এবং এর অধিকাংশই আমদা নিনির্ভর। আমাদের দেশের জ্বালানি খাতের ৮০ শতাংশ ব্যবসা-বাণিজ্য এই জি-২০ ভুক্তদেশ সমূহের সাথে, বিশেষত এশিয় অঞ্চলের ৬ টিদেশ যেমন: চীন, জাপান, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, কোরিয়া ও সৌদি আরবের সাথে যারা জি-২০’র অন্তর্ভূক্ত। এসবদেশ তাদের ব্যবসায়িক স্বার্থেই চাইবে যে আমরা তাদের কাছ থেকে কয়লা-গ্যাস-ডিজেল-ফার্নেস অয়েল (যেগুলো জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য দায়ী জীবাষ্ম জ্বালানি) ইত্যাদি কিনে বিদ্যুৎ উৎপাদন করি। কিন্তু এসব দেশের প্রতি আমাদের জোড়দাবী হওয়া উচিত নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে বিনি য়োগ করা।
দেশএখন একটি অর্থনৈতিক সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। আমদানিকৃত জ্বালানি নির্ভর বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর সক্ষমতা ভাড়া (ক্যাপাসিটি চার্জ) এখন দেশের অর্থনীতির গলার ফাঁস হয়ে দাড়িয়েছে। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী গত ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩ জাতীয় সংসদকে জানান যে, গত সাড়ে ১৪ বছরে বেসরকারি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ভাড়া বাবদ ব্যয় হয়েছে ১ লাখ ৪ হাজার ৯২৭ কোটি টাকা। ২০০৯-১০ সালের বিদ্যুৎ খাত এবং এখনকার বিদ্যুৎ খাত এক নয়। তখন জরুরি ভিত্তিতে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য ভাড়া ভিত্তিক বিদুৎ কেন্দ ্রস্থাপনের চুক্তি করা হয়ে ছিলো। চুক্তিগুলো ছিলো ৩ থেকে ৫ বছরের জন্য। কিন্তু এখনো একই শর্তে কেন চুক্তিগুলো নবায়ন করা হচ্ছে তা আমাদের বোধগম্য নয় যেখানে “মুজিব জলবায়ু সমৃদ্ধিপরিকল্পনা” অনুসারে ২০৫০ সালের মধ্যে ১০০% নবায়নযোগ্য জ্বালানি নির্ভর বিদ্যুৎ উৎপাদনের এক সুদুরপ্রসারি পরিকল্পনা আমাদের রয়েছে। সরকার “মুজিব জলবায়ু সমৃদ্ধি পরিকল্পনা” থেকে সরে আসছে কিনা সে বিষয়টি আমাদের কাছে স্পষ্ট নয়। অথচ জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা করে টিকে থাকতে হলে এই পরিকল্পনা আমাদের জন্য আশীর্বাদ স্বরূপ। কাজেই আজকের এই সমাবেশ থেকে “মুজিব জলবায়ু সমৃদ্ধি পরিকল্পনা”র পরিপূর্ণ বাস্তবায়ন এবং এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে জি-২০ দেশ সমূহের সার্বিক সহয়তার জোড় দাবীজানানো হয়।