ময়মনসিংহে কৃষক পদযাত্রায় নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে অর্থায়ন ও বিজলী-কৃষাণ কর্মসূচি গ্রহণের দাবী

প্রকাশিত: ১২:৫৬ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১৩, ২০২৩

স্টাফ রিপোর্টার : ময়মনসিংহে নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে অর্থায়ন ও বিজলী-কৃষাণ কর্মসূচি গ্রহণের দাবীতে একে বর্ণাঢ্য কৃষক পদযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়। বিভিন্ন দাবী সম্বলিত ব্যানার-ফ্যাস্টুন-প্ল্যাকার্ড সজ্জিত পদযাত্রাটি বুধবার ১৩ সেপ্টেম্বর সকাল ১০.৩০ টায় ময়মনসিংহ টাউনহল চত্ত্বর থেকে শুরু হয়ে ময়মনসিংহ শহরস্থ বিভিন্ন সরকারি দপ্তর ও আদালতপাড়া অতিক্রম করে অবশেষে জিরোপয়েন্ট ঘুরে পুণরায় টাউন হলে এসে সমাপ্ত হয়। পদযাত্রা থেকে জীবাষ্ম জ্বালানি বিশেষ করে কয়লা ও এলএনজি নির্ভর বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ করে নবায়নযোগ্য জ্বালানি নির্ভর বিদ্যুৎ উৎপাদনির জন্য বিজলী-কৃষাণ কর্মসূচি গ্রহণের জোড়দাবী জানানো হয়।


মাটি বাংলাদেশ, তৃণমূল উন্নয়ন সংস্থা, ভিএসও ইয়থফোরাম, ক্লাইমেট চেঞ্জ নেটওয়ার্ক ইন গ্রেটার ময়মনসিংহ (সিসিএনজিএম), কোস্টাল লাইভলিহুড এন্ড এনভায়রন মেন্টাল একশন নেটওয়ার্ক (ক্লিন) এবং বাংলাদেশ ওয়ার্কিং গ্রুপ অন এক্সটারনালডেব্ট (বিডব্লিওজিইডি)- এর যৌথ উদ্যোগে পদযাত্রায় কৃষাণ-কৃষাণি এবং বিভিন্ন বেসরকারি ও পরিবেশবাদী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি ছাড়াও ছাত্র-শিক্ষক ও বিভিন্ন পেশাজীবি এবং সর্বস্তরের শতাধিক সচেতন নাগরিক সমাজ পদযাত্রায় অংশগ্রহণ করেন এবং কৃষকদের দাবীর প্রতি সংহতি জানান।

পদযাত্রা শেষে সংক্ষিপ্ত আলোচনায় বক্তারা বলেন বিদ্যুৎ উৎপাদনে জীবাষ্ম জ্বালানির ব্যাপক ব্যবহার বৈশ্বিক উষ্ণায়ন এবং জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য অনেকাংশে দায়ি। প্যারিস চুক্তি অনুসারে পৃথিবীর তাপমাত্রা বৃদ্ধির পরিমাণ ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখতে হলে কয়লা ও অন্যান্য জীবাশ্ম জ্বালানিসহ এলএনজির ব্যবহার বন্ধ কর হবে। এছাড়া জরুরি ভিত্তিতে নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে বিনিয়োগের মধ্য দিয়ে দ্রুততম সময়ের মধ্যে ন্যায্য ও সবুজ জ্বালানিতে রূপান্তর করতে হবে।

বাংলাদেশের আবহাওয়া সৌরবিদ্যুতের জন্য অত্যন্ত উপযোগী। সৌর-বিদ্যুৎ কেন্দ্রে একবার বিনিয়োগ করলে পরবর্তী ২৫ বছর রক্ষণাবেক্ষণ ছাড়া আর কোনো খরচ নেই। জীবাষ্ম জ্বালানি নির্ভর বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য সরকারকে যে বিপুল পরিমাণ ক্যাপাসিটি চার্জ দিতে হয় তা সাশ্রয় হবে। পাশাপাশি কয়লা, ফার্নেস অয়েল, ডিজেল এবং এলএনজি আমদানি-ব্যয়সাশ্রয় হবে যা দেশের অর্থনীতিকে আরো শক্তিশালী করবে।

বক্তারা আরও বলেন, বর্তমান সরকার “মুজিব ক্লাইমেট প্রোসপারিটি প্লান (এমসিপিপি)” প্রণয়ন করে এক যুগান্তকারি পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এমসিপিপিতে ২০৩০ সালের মধ্যে ৩০%, ২০৪১ সালের মধ্যে ৪০% এবং ২০৫০ সালের মধ্যে বিদ্যুৎ উৎপাদনে ১০০% নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার নিশ্চিত করণে যুগান্তকারি লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। এই লক্ষ্য অর্জনের ক্ষেত্রে আমাদের জমির স্বল্পতাকে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা হয় যার সমাধান হিসবে সৌর বিদ্যুতের“এগ্রোভোল্টাইক প্রযুক্তি” বিশ্বব্যাপী দ্রুত সমাদৃত হচ্ছে।

বিজলী-কৃষাণ কর্মসূচি গ্রহণ করা হলে কৃষকের যেমন উৎপাদন খরচ কমবে তেমনি অতিরিক্ত বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রীডে বিক্রী করে কৃষক বাড়তি আয়ও করতে পারবে। পাশাপাশি, “বিজলী-কৃষাণ কর্মসূচি” গ্রহণ করে এই প্রযুক্তির দ্রুত বিস্তার সম্ভব হলে“ মুজিব ক্লাইমেট প্রোসপারিটি প্লান”-এর লক্ষ্য মাত্রা অর্জন সহজতর হবে। কাজেই সভায় বক্তারা পরিবেশ সম্মত খাদ্য ও জ্বালানি নিরাপত্তা অর্জনে “বিজলী-কৃষাণ কর্মসূচি” গ্রহণের জোড় দাবী জানান।