কেন্দুুয়া (নেত্রকোণা) প্রতিনিধি :
নেত্রকোণার কেন্দুুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ রয়েছে। ফলে সময়মতো চিকিৎসাসেবা নিতে পারছেন না উপজেলার প্রায় ৪ লক্ষাধিকেরও বেশি মানুষ। এ অবস্থায় সরকারি এ্যাম্বুলেন্স না পেয়ে জরুরি চিকিৎসাসেবা নিতে এই উপজেলার মানুষের ভরসা এখন বেসরকারি এ্যাম্বুলেন্স, মাইক্রোবাস অথবা সিএনজি চালিত অটোরিকশা।
সরকারি এ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস বন্ধ থাকায় এসব যানবাহনের বাড়তি ভাড়াসহ চরম দুর্ভোগের শিকার হতে হচ্ছে চিকিৎসাসেবা নিতে আসা রোগী ও তাদের স্বজনরা। আবার সময়মতো গাড়ি না পেয়ে মৃত্যুর পথযাত্রী হচ্ছেন অনেকেই।
হাসপাতাল সুত্রে জানা যায়,কেন্দুুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের গুরুতর রোগীদের স্থানান্তর করা হয় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও নেত্রকোণা আধুনিক সদর হাসপাতালে। কেন্দুুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দু’টি এ্যাম্বুলেন্সের মধ্যে একটি অকেজো অপরটি ভাল রয়েছে। অসুস্থতার কারণে এ্যাম্বুলেন্স চালক আবু বকর সিদ্দিক গত ১ আগস্ট চাকুরী ছেড়ে দেওয়ায় পদটি শূন্য হয়। এ্যাম্বুলেন্স চালকের এই পদটি শূন্য হওয়ার দীর্ঘ ৫০ দিন পেরিয়ে গেলেও এখনো কাউকে এই পদে পদায়ন করা হয়নি। যেকারণে হাসপাতালের স্থানান্তরিত রোগীদের পরিবহনের জন্য স্বজনদের ছুটতে হয় প্রাইভেট গাড়ির কাছে আর এই সুযোগ বুঝে প্রাইভেট গাড়িগুলো সরকারি ভাড়ার তুলনায় অনেক বেশি অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে। বিপদে পড়ে বেশি টাকা দিয়েই উন্নত চিকিৎসার জন্য নিয়মিত রোগী পরিবহন করেন রোগীর স্বজনরা।
সমাজকর্মী মামূনুল কবীর খান হলি জানান,১৩ ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা নিয়ে কেন্দুুয়া উপজেলা। এই উপজেলার প্রায় ৪ লক্ষাধিক বসবাসকারী লোকের চিকিৎসার একমাত্র ভরসাস্থল ৫০ শয্যা বিশিষ্ট কেন্দুুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি।
প্রতিদিনই হাসপাতালের বহির্বিভাগ ও জরুরী বিভাগে অন্তত ৫ শতাধিক লোক চিকিৎসা সেবা নিতে আসনে। এরমধ্যে প্রসূতি মা,হৃদরোগী ও মারামারিসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্তদের উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ কিংবা নেত্রকোণা আধুনিক সদর হাসপাতালে রেফার্ড করেন কর্তব্যরত চিকিৎসকরা। এতবড় একটি উপজেলার জন্য মাত্র একটি এ্যাম্বুলেন্স আছে। তাও এখন সেইটার চালানোর লোক নেই। যা খুবই দুঃখজন। এ্যাম্বুলেন্স সার্ভিসটি বন্ধ থাকায় প্রতিনিয়ত রোগীদের নিয়ে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে রোগীর স্বজনরা।
বেসরকারি এ্যাম্বুলেন্স, মাইক্রোবাস ও সিএনজি ব্যবহার করে একদিকে যেমন দ্বিগুণ টাকা গুনতে হচ্ছে অপরদিকে সময়মত গাড়ি না পেয়ে মৃত্যুর পথযাত্রী হচ্ছেন অনেকেই। অনতিবিলম্বে কেন্দুুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ড্রাইভার পদে পদায়ন করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষে সুদৃষ্টি কামনা করেন তিনি।
কেন্দুুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. এবাদুর রহমান জানান,এ্যাম্বুলেন্সের চালক অসুস্থতার কারণে চাকুরী ছেড়ে দেওয়ায় পদটি শুন্য হয়েছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানিয়েছি। আশা করছি খুব দ্রুতই শূন্যপদে পদায়ন করা হবে।