নিজস্ব প্রতিবেদক, নান্দাইল :
আন্দোলনের নামে বিএনপির নৈরাজ্যের প্রতিবাদে ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলা আওয়ামী লীগ গতকাল রবিবার দুপুর একটার দিকে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে। উপজেলার ১৩ টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে নেতাকর্মীরা সদরে এসে কর্মসূচিতে অংশ নেন। বিক্ষোভ মিছিলে অংশ নেওয়া কিছু কর্মীর হাতে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন লেখা সম্বলিত প্ল্যাকার্ড বহন করতে দেখা গেছে।
অন্যদিকে দলটির নারী কর্মীদের মিছিলের সামনে আগ্নেয়াস্ত্র বহনকারী এক ব্যক্তিকে দেখা গেছে। তাঁর পরিচয় সম্পর্কে থানা পুলিশ কিছু বলতে পারেনি।
দলীয় সূত্রে জানা যায়, বিএনপি ও তাঁদের দোসরদের দেশব্যাপী অরাজকতা ও আগুন সন্ত্রাসের প্রতিবাদে নান্দাইল উপজেলা আওয়ামী লীগ এ কর্মসূচি ঘোষণা করে। এছাড়া একটি জাতীয় দৈনিকে ময়মনসিংহ ৯ (নান্দাইল) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মেজর জেনারেল (অব) আব্দুস সালামকে নিয়ে নেতাকর্মীদের ভাষায় নেতিবাচক সংবাদ প্রকাশের প্রতিবাদ জানানো হয়। মিছিলে অংশ নেওয়া কিছু কর্মীর হাতে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে নানা স্লোগান লেখা প্ল্যাকার্ড বহন করতে দেখা গেছে। একটি প্ল্যাকার্ডের লেখা ছিল ‘ বঙ্গবন্ধুর বাংলায় হলুদ সাংবাদিকের ঠাঁই নাই’। অপর একটি প্ল্যাকার্ডে ‘দালালি নয় সৎ পেশাদার সাংবাদিক চাই।’
সূত্রটি আরও জানায়, উপজেলার বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে আগত হাজারো দলীয় নেতাকর্মী ও সমর্থকরা প্রথমে নান্দাইল সরকারি শহীদ স্মৃতি আদর্শ কলেজ মাঠে জড়ো হন। পরে দুপুর একটার দিকে কলেজ থেকে মিছিল করে নান্দাইল পুরান বাজার বাসস্ট্যান্ড সড়কে অবস্থিত দলীয় কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত সমাবেশে যোগ দেন।
আওয়ামী লীগের নারী কর্মীদের মিছিলের নেতৃত্ব দেন মেজর জেনারেল (অব) আবদুস সালামের কন্যা ওয়াহিদা হোসেন। এ সময় তাঁর পাশে জিন্সের প্যান্ট ও কেডস পড়া এক ব্যক্তিকে আগ্নেয়াস্ত্র বহন করতে দেখা গেছে। ওই ব্যক্তিকে মিছিলে সতর্ক অবস্থায় থাকতে দেখা গেছে। অন্যদিকে দলটির সভাপতি আব্দুল সালাম ও সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম পুরুষ কর্মীদের মিছিলের নেতৃত্ব দেন।
পুরান বাজারে আয়োজিত সমাবেশে বক্তব্যে মেজর জেনারেল (অব) আবদুস সালাম বলেন, দল বিপদে পড়তে পারে এমন কোনো কাজ কখনও করিনি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে দলের দায়িত্ব দিয়েছেন। দলকে গুছিয়েছি। যারা অতীতে নান্দাইল উপজেলা আওয়ামী লীগকে ভাঙার চেষ্টা করেছেন, দলের শত শত নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন তাঁদের প্রত্যেকের কথা আমি মাননীয় নেত্রীকে অবহিত করেছি। যারা আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছেন, কুৎসা রটাচ্ছেন তাঁরা একদিন আস্তাকুড়ে নিক্ষিপ্ত হবে বলে জানান তিনি। আওয়ামী লীগের কর্মসূচি উপলক্ষে নান্দাইল পৌরশহরের বিভিন্ন এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সতর্ক অবস্থায় থাকতে দেখা গেছে।
মিছিলে আগ্নেয়াস্ত্র বহনকারী ব্যক্তির বিষয়ে নান্দাইল মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ রাশেদুজ্জমান বলেন, উনি কে আমরা বিষয়টি জানার চেষ্টা করছি।
নান্দাইল উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাে. আমিনুল ইসলাম (শাহান) সাংবাদিকদের জানান, অস্ত্রধারী একজন দেহরক্ষী। তাঁর নাম মাে. কামরুজ্জামান। তিনি বাগেরহাট জেলার কুমারখালী গ্রামের বাসিন্দা। বর্তমানে রাজধানী যাত্রবাড়ি থানার মীর হাজীরবাগ মহল্লায় বসবাস করছেন। কামরুজ্জমান হচ্ছেন নান্দাইল উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মেজর জেনারেল (অব) আব্দুস সালামের কন্যা ওয়াহিদা হােসেনের জামাই (বর) জাহিদ হাসানের (প্রীতম) দেহরক্ষী। অস্ত্রটি বৈধ। এটি লাইসেন্সকৃত। অস্ত্রটি কারও দিকে তাক করা হয়নি। আকারে বড় থাকায় অস্ত্রটি গাড়িতে না রেখে দেহরক্ষী সেটি নিজের সাথে বহন করছিলেন।