শাহ্ আলম ভূঁইয়া, নিজস্ব প্রতিবেদক, নান্দাইল :
ময়মনসিংহের নান্দাইলে চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ছে আমের মুকুলের পাগল করা ঘ্রাণ। ছোট-বড় সব গাছে গাছে আমের মুকুল আসতে শুরু করেছে। বাতাসে মিশে সে ঘ্রাণ মানুষের মন ও প্রাণকে বিমোহিত করছে। ঘ্রাণের পাশাপাশি গাছে গাছে মুকুলের অপরুপ সৌন্দর্য সব বয়সী মানুষকে আনন্দ দিচ্ছে এবং দৃষ্টি কাড়ছে। যেন দুচোখ জুড়িয়ে যায়।
মধুমাসের আগমণী বার্তা শোনাচ্ছে আমের মুকুল। আর মাত্র কয়েক মাস পর আমের মুকুল পরিণত হবে ফলে। তাই ভেবে বেশ উচ্ছাস আমপ্রিয় সবার মনে। আমের মুকুলের মৌ মৌ গন্ধে মাতোয়ারা হয়ে উঠেছে চারিদিকের বাতাস। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এ বছর আমের বাম্পার ফলনের আশা করা যায়।
শীতের জড়তা কাটিয়ে কোকিলের সেই সুমধুর কুহুতানে মাতাল করতে আবারও প্রকৃতিতে ফিরে এসেছে বাংলার বুক মাতাল করা ঋতুরাজ বসন্ত। আমের মুকুলের সৌন্দর্য আর ঘ্রাণে বসন্তকে আরো রঙিন করে তুলছে। ফাগুনের ছোঁয়ায় প্রকৃতিতে লেগেছে আমের মুকুলের মেলা। আমগাছের দিকে তাকালেই বোঝা যায় অপার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে সেজেছে প্রকৃতি।
গাছের প্রতিটি ডালপালা ছেঁয়ে আছে মুকুলে। এ যেন সাদা, বেগুনি হলুদ আর সবুজের মহামিলন। ফুলে ফুলে সেজেছে পুষ্পরানীর সাজে। মৌমাছিরাও আসতে শুরু করেছে মধু আহরণে। মৌমাছির গুঞ্জনে মুখরিত চারপাশ। মুকুলের মৌ মৌ গন্ধে আম চাষীদের চোখে ভাসছে স্বপ্ন।
উপজেলায় দিন দিন বাড়ছে হরেক রকমের সুস্বাদু আমের চাষ। বাগান বা বাড়ির আঙ্গিনায়,পুকুুর পাড়ে ও রাস্তার পাশে আম গাছে মুকুলের মৌ মৌ গন্ধ।
চলার পথে থমকে দাঁড়াচ্ছে পথিক। এপাশ -ওপাশ করে তাকাচ্ছে প্রকৃতির দিকে। পাগল করা ঘ্রাণে হারিয়ে ফেলছে মন।
সরেজমিন উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, গ্রামগুলোর মধ্যে খালি জায়গা, পুকুরপাড়, রাস্তার ধারে ও বাড়ির আঙ্গিনার গাছগুলোতে শোভা পাচ্ছে কেবলই আমের মুকুল। মুকুলে মুকুলে ছেঁয়ে আছে গাছের প্রতিটি ডালপালা। চারদিকে ছড়াচ্ছে সেই মুকুলের সুবাসিত পাগল করা ঘ্রাণ।
গাছে গাছে আমের মুকুলের ছড়াছড়ি। আমের মুকুল পরিচর্যার প্রস্তুতি নিচ্ছেন অনেকেই , আবার কেউ কেউ মুকুলকে রোগ বালাইয়ের আক্রমণ থেকে রক্ষা করতে স্থানীয় কৃষি বিভাগের পরামর্শ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ওষুধ স্প্রে করছেন তারা। যেসব গাছে এখনো মুকুল আসেনি সেসব গাছের পুরো মুকুল ফুটতে আরও কিছুদিন সময় লাগবে।
বাগান মালিকরা জানান, মুকুল আসার পর থেকেই তারা গাছের প্রাথমিক পরিচর্যা শুরু করেছেন। মুকুলকে রোগ বালাইয়ের আক্রমণ থেকে রক্ষা করতে স্থানীয় কৃষি বিভাগের পরামর্শ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ওষুধ স্প্রে করছেন তারা।
উপজেলার দেওয়ানগঞ্জ বাজারে শখের বাগান চাষী মো.ওয়ালিউল্লাহ। তার বাসার ভিতরে প্রায় দুইশত বিভিন্ন জাতের আমের গাছ রয়েছে। প্রতিটি গাছেই চোখ জুড়ানো মুকুল এসেছে। ওয়ালিউল্লাহ বলেন, বিগত দুইবছর ধরেই পরিবার ও আত্মীয় স্বজনের চাহিদা মিটিয়ে অনেক টাকার আম আমি বিক্রি করতে পারি।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার নাদিয়া ফেরদৌসি বলেন, আমরা আম চাষীদের বিভিন্ন পরামর্শ দিচ্ছি। অকালে যেন মুকুল ঝরে না যায় সে ব্যাপারেও প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে আমচাষিদের।
উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মোহাম্মদ আনিসুজ্জামান জানান,এইবার আমের মুকুল এসেছে পর্যাপ্ত। শীতে ঘন কুয়াশা না থাকায় এবং আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এ বছর আমের বাম্পার ফলন হবে। কৃষি অফিস থেকে সব ধরনের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।