স্টাফ রিপোর্টার : সোমবার বিশ্ব পরিবেশ দিবস ২০২৩ উপলক্ষে ময়মনসিংহ পরিবেশ অধিদপ্তর আয়োজনে আলোচনা সভা ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠিত হয়েছে। ময়মনসিংহ জেলা পরিষদের সম্মেলন কক্ষে “প্লাস্টিক দূষণ সমাধানে শামিল হই সকলে” প্রতিপাদ্য নিয়ে উক্ত আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
২০৪১ সালের মধ্যে বাসযোগ্য দেশ গড়ে তোলার ভিশনে পরিবেশ সুরক্ষায় প্লাস্টিক বর্জ্যের ক্ষতিকারক দিক নিয়ে সভায় আলোচনা করা হয়। সভায় পরিবেশের টেকসই উন্নয় লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে প্লাস্টিক পণ্যের ব্যবহার রোধ এবং বিকল্প উদ্ভাবনে দিকনির্দেশনা প্রদান করা হয়। এছাড়া অনুষ্ঠানে বিভিন্ন পর্যায়ে বক্তারা পরিবেশ দূষণ রোধে নিজ নিজ সচেতনতা এবং পারিবারিক ও প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার উপর গুরুত্ব দিয়ে থাকেন।
আলোচনায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য প্রদান করেন ময়মনসিংহের বিভাগীয় কমিশনার মোঃ শফিকুর রেজা বিশ্বাস। তিনি বলেন, প্লাস্টিক ব্যবহারের ফলে পরিবেশের অন্যতম উপাদান মাটি ব্যাপকভাবে দূষণ হচ্ছে এর ফলে মাটির গুণগত মান হারাচ্ছে। তাই পরিবেশ দূষণ রোধ এবং প্লাস্টিক ব্যবহারে সবাইকে ব্যক্তিগত সচেতনতা বৃদ্ধির আহব্বান জানান তিনি। এছাড়াও তিনি আরো বলেন যে, পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার্থে গাছ লাগানো এবং কার্বন নিঃসরণ নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে রাখতে হবে। এতে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম একটি সুন্দর বাসযোগ্য পৃথিবী পেতে পারে।
ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসক মোঃ মোস্তাফিজার রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ডিআইজি, ময়মনসিংহ রেঞ্জ দেবদাস ভট্টাচার্য, সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ ইউসুফ আলী এবং ময়মনসিংহ পুলিশ সুপার মাছুম আহাম্মদ ভূঞা বক্তব্য রাখেন।
আলোচনা সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক দিলরুবা আহমেদ। তিনি বলেন যে ,পরিবেশ সুরক্ষায় সরকার একাধিক আইন করেছে। সুস্পষ্ট শাস্তির বিধান রয়েছে। সরকার সাম্প্রতিক বছরে কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থ্যাপনা বিধিমালা-২০২১, বায়ু দূষণ (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা-২০২২ এবং পরিবেশ সংরক্ষণ বিধিমালা-২০২৩ প্রণয়ন করেছে।তিনি আরো বলেন প্রয়োজনের সকল ক্ষেত্রে পরিবেশ ছাড়পত্র নিতে হবে। এ প্রসঙ্গ তিনি বলেন ২০২৩-২০২৩ অর্থবছরে ময়মনসিংহে বিভাগের চারটি জেলায় ১৯২টি শিল্প প্রতিষ্ঠানকে পরিবেশগত ছাড়পত্র প্রদান ৩০৫ শিল্প প্রতিষ্ঠানের ছাড়পত্র নবায়ন করা হয়েছে। স্বাগত বক্তব্য পানি দূষণ নিয়ন্ত্রণ প্রসঙ্গে দিলরুবা আহমেদ বলেন ২০২৩ সাল পর্যন্ত ইটিপি স্থাপনযোগ্য ৯৫ টি শিল্প প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৮৩টিতে ইটিপি স্থাপন করা হয়েছে। এ সময়ের মধ্যে ৩৬ টি প্রতিষ্ঠানে “জিরো লিকুইড ডিসচার্জ প্ল্যান” গ্রহণ করেছে এবং ৯ টি শিল্প প্রতিষ্ঠানে আইপি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। পরিবেশ সুরক্ষায় অর্থবছরের ২৯ টি মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে ৭৬টি মামলা করা হয়েছে এবং ৩ লক্ষ টাকা জরিমনা ও ৮ টন পলিথিন জদ্ধ করা হয়েছে বলে তিনি আলোচনায় সভায় উল্লেখ করেন।
অনুষ্ঠানের প্রধান আলোচক স্থানীয় সরকার বিভাগের পরিচালক জনাব ফরিদ আহমদ বলেন বাংলাদেশের প্রতিদিন ৩হাজার টন প্লাস্টিক ব্যবহার হয়। প্লাস্টিক দূষণে জনগণের সদিচ্ছা ব্যতীত প্র্রতিরোধ সম্ভব নয় বলে তিনি উল্লেখ করেন।
আলোচনা সভায় পরিবেশ অধিদপ্তর কর্তৃক পূর্বে আয়োজিত শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে চিত্রাংকন প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। এর আগে বিশ্ব পরিবেশ দিবস ২০২৩ উপলক্ষ্যে টাউন হল চত্বর থেকে জেলা পরিষদের কার্যালয় পর্যন্ত একটি র্যালি অনুষ্ঠিত হয়।