ত্রিশাল (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি :
সৎ মায়ের রান্না করা তাল খেতে চেয়েছিল ৬ বছরের শিশু মাজহার। সৎ মা তাল দিতে আপত্তি করায় নিজের মায়ের কাছে বায়না ধরে। নিজের মা সন্তানকে শাসিয়ে নিভৃত করলেও অবুঝ শিশুর মন মানেনা।
তাই সে বাবার কাছে গিয়ে তাল খাওয়ার আবদার করলে বাবা তার সৎ মায়ের কাছ থেকে তালের ব্যবস্থা করে দিলে শিশু মাজহার শান্ত হয়। এ ঘটনায় মাহজারের মা তার বাবার প্রতি ক্ষিপ্ত হয়ে ঝগড়া করে। একই দিন শিশু মাহজার বাড়িতে আসা ফেরিওয়ালার কাছ থেকে বেলুন কিনে দেয়ার বায়না করলে মা মাহমুদা খাতুন রাগান্তিত হয়ে শ্বাসরুদ্ধ করে শিশুকে হত্যা করে খাটের নিচে লুকিয়ে রাখে। ঘটনাটি ঘটেছে ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার কাঁঠাল ইউনিয়নের বালিয়ারপাড় গ্রামে।
জানাযায়, উপজেলার বালিয়ারপাড় গ্রামের রাজিবুল ১২ বছর পূর্বে মাহমুদাকে বিয়ে করলে তার ঘরে দুটি সন্তান হয়। বছর খানেক আগে স্বামীর সঙ্গে ঝগড়া করে মাহমুদা তার বাবার বাড়ি চলে যায়। এই ফাঁকে প্রথম স্ত্রী অনুমতি ছাড়াই রাজিবুল দ্বিতীয় বিয়ে করে কাকলীকে। প্রথম স্ত্রী মাহমুদা কয়েক মাস পর রাজিবের ঘরেই ফিরে আসে।
এক সঙ্গে দুই স্ত্রী নিয়েই চলছিল তার সংসার জীবন। সংসারে শুরু হয় অশান্তি। কাকলীও এখন ৬ মাসের অন্তসত্তা। বুধবার দুপুরে সৎ মায়ের রান্না করার তাল খেতে চায় শিশু মাজহার। সৎ মা তাল দিতে আপত্তি করায় নিজের মায়ের কাছে বায়না ধরে। নিজের মা সন্তানকে শাসিয়ে নিভৃত করলেও অবৃঝ শিশুর মন মানেনা। তাই সে বাবার কাছে গিয়ে তাল আবদার করলে বাবা তার সৎ মায়ের কাছ থেকে তালের ব্যবস্থা করে দিলে শিশু মাজহারের মন শান্ত হয়।
এ ঘটনার পর মাহজারের মা তার বাবার প্রতি ক্ষিপ্ত হয়ে ঝগড়া করে। একই শিশু মাজহার বাড়িতে আসা ফেরিওয়ালার কাছ থেকে বেলুন কিনে দেয়ার বায়না করলে মা মাহমুদা খাতুন রাগান্তিত হয়ে শ্বাসরুদ্ধ করে শিশুকে হত্যা করে লাশ খাটের নিচে লুকিয়ে রাখে। সবাই যখন ছোট মাজহারের খোঁজ করছিল, তখন পাষন্ড মা নিজেও অন্যদের ন্যায় বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি শুরু করে। একপর্যায়ে তিনি নিজেই বলে উঠেন মাজহার খাটের নিচে ঘুমিয়ে আছে।
এসময় শিশু মাজহারের দাদী খাটের নিচ থেকে মাজহারের লাশ উদ্ধার করে। ঘটনাটি জানাজানি হলে এলাকাবাসী ত্রিশাল থানা পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করে। রাতে ত্রিশাল থানা পুলিশ ও ময়মনসিংহ ডিবি পুলিশ নিহতের আপন মা মাহমুদাকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। গতকাল বৃহস্পতিবার আদালতে সন্তান হত্যাকান্ডের ঘটনার বিবরন দেন মাহমুদা।
ত্রিশাল থানার ওসি মাহমুদুল ইসলাম ওই ঘটনার সত্যতার নিশ্চিত করে বলেন, শিশু মাজহারের মাকে গ্রেফতারের পর সন্তানকে হত্যার স্বীকারোক্তীমুলক জবানবন্দী দিয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে বিজ্ঞ ম্যাজিষ্টেটের জবানবন্দির জন্য তাকে আদালতে প্রেরণ করা হয়।