এম.এ খালেক, হালুয়াঘাট(ময়মনসিংহ)প্রতিনিধি :
নিয়মনীতি ও প্রয়োজনীয় নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা ছাড়াই হালুয়াঘাটের পৌর শহরসহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় প্রায় শতাধিক মুদি দোকান, প্লাষ্টিক সামগ্রীর দোকান, ফার্নিচারের দোকান, ফোন-ফ্যাক্সের দোকান, হার্ডওয়ারের দোকান, এমনকি ওষুধের দোকানেও অবাধে বিক্রি হচ্ছে তরলকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাস বা এলপিজি সিলিন্ডার গ্যাস।
জানা যায়, উপজেলার অধিকাংশ এসব দোকানীর এলপি গ্যাস বিক্রির অনুমোদন নেই। আইন কানুন না মেনেই শুধু মাত্র ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ এ জ্বালানির ব্যবসা চলছে অহরহ। এসব দোকানে নেই আগুন নির্বাপক যন্ত্র। বড় কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে জানা নেই প্রতিকারের ব্যবস্থা। ঝুঁকিপূর্ণ এ ব্যবসার কারণে দুর্ঘটনার আসংখ্যা রয়েছে।
সিলিন্ডার গ্যাস বিক্রির জন্য ব্যবসায়ীদের সংরণ রুমের প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ ছাড়াও ট্রেড লাইসেন্স, বিস্ফোরক অধিদপ্তর এবং ফায়ার সার্ভিস থেকে অনুমোদন নিতে হয় কিন্ত অধিকাংশের নেই প্রয়োজনীয় কাগজ পত্রাদি। তথাপি চলচ্ছে বানিজ্য। এ বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসনেরও নেই তেমন কোন কার্যকরী নজরদারি।
এ ধরনের পণ্য সংরণের জন্য বিশেষ গুদামঘরের প্রয়োজন হয়। তা না হলে সিলিন্ডার থেকে গ্যাস বের হয়ে অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটতে পারে। আইন অনুযায়ী যেকোনো ব্যবসায়ী নুন্যতম দুই বছর এবং অনধিক পাঁচ বছরের জেল এবং অনধিক ৫০ হাজার টাকায় দন্ডের বিধান রয়েছে। তবে অধিকাংশ দোকানীর এলপি গ্যাস বিক্রির অনুমোদন নেই। এতে করে সরকার যেমন রাজস্ব হারাচ্ছে। তেমনি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সাধারণ মানুষ।
এছাড়া এসব দোকানে বিভিন্ন সাইজের এলপি গ্যাস সিলিন্ডারের মূল্য তালিকাও নেই। দোকানীদের অনেকেই জানেন না এলপি গ্যাস ব্যবহারের নিয়ম কানুন । বাসা-বাড়িসহ হোটেল ,চায়ের দোকানে দিন দিন জ্বালানি গ্যাসের চাহিদা বাড়ছে। এই চাহিদাকে সামনে রেখে সস্তায় নিম্নমানের রেগুলেটর, গ্যাস সরবরাহ পাইপ ও অনুমোদনহীন বিভিন্ন কোম্পানির ঝুঁকিপূর্ণ চুলা বিক্রির হিড়িক পড়েছে উপজেলার সর্বত্র।
সুযোগ সন্ধানী ব্যবসায়ীরা নাম মাত্র ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে যথাযথ প্রতিষ্ঠানের অনুমোদন না নিয়েই যেখানে সেখানে এলপি গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবসা শুরু করেছেন। বিস্ফোরক অধিদপ্তরের সনদ ছাড়াই এলপি গ্যাস সিলিন্ডারের দোকানে মজুদ করেছেন খুচরা ব্যবসায়ীরা। এসব দোকানে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের এলপি গ্যাসবোঝাই সিলিন্ডার বিক্রি হচ্ছে হরহামেশাই। অবৈধভাবে সিলিন্ডার গ্যাস বিক্রির হিড়িকের কারণে বাসা বাড়ি ও প্রতিষ্ঠানে ঘটছে প্রায় দুর্ঘটনা।
খুচরা এলপি গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তাদের বেশির ভাগই আইনগত বাধ্যবাধকতা সম্পর্কে অবগত। তারপরও তদারকির অভাবে ঝূঁকি জেনেও তারা সনদ ও অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা ছাড়াই ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন। কোনো কোনো েেত্র লাইসেন্সপ্রাপ্তির দীর্ঘসূত্রতা এড়াতে এবং বিভিন্ন কোম্পানির ডিলারদের বিপণন কৌশলে প্ররোচিত হয়ে তার এই ঝুকিপূর্ণ্য ব্যবসা পরিচালনা করছেন।
হালুয়াঘাট ফায়ার সার্ভিস ষ্টাশনের (ভারপ্রাপ্ত ইনর্চাজ) লিডার শফিকুল ইসলাম বলেন, অত্র উপজেলায় প্রায় শতাধিক গ্যাস সিলিন্ডারের দোকান রয়েছে তার মধ্যে কোন দোকানী লাইসেন্স নিয়েছেন কিনা তার জানা নেই। ঝূঁকি জেনেও তারা সনদ ও অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা ছাড়াই ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন। লাইসেন্স করতে অনীহা প্রকাশ করেন ব্যবসায়ীরা। শত ভাগ দোকান অনোমুদনহীন ভাবে অবৈধ ব্যবসা বাণিজ্য পরিচালনা করছেন।
এ বিষয়ে ময়মনসিংহ ফায়ার সার্ভিস ষ্টেশনের লাইসেন্স পরির্দশক মাহাবুব আলম সিদ্দিকী এ প্রতিবেদক কে মুঠোফোনে বলেন, হালুয়াঘাটে এ পর্যন্ত ৪-৫ টি লাইসেন্স প্রদান করা হয়েছিল। নবায়ন না করার কারণে লাইসেন্সগুলি বাতিল করা হয়েছে।
অবৈধ ব্যবসা বাণিজ্য পরিচালনাকারীদের বিরুদ্বে ব্যবস্থা গ্রহনের চেষ্টা করা হলে স্থানীয় প্রভাবশালীদের কারণে আইনগত পদপে গ্রহন করা যায়নি। বিষয়টি স্থানীয় প্রসাশনসহ উর্ধ্বতন কর্তৃপকে অবগত করা হয়েছে।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ রেজাউল করিম বলেন, ঝূঁকি জেনেও অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা ছাড়াই অনুমোদনবিহীন ভাবে যে সমস্ত ব্যক্তিগণ যত্রতত্র এলপি গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি করছেন শিঘ্রই তাদেরকে ডেকে কার্যকর পদপে গ্রহণ করবেন বলে জানান।