নান্দাইল আঞ্চলিক অফিস :
বিদ্যালয়ের নাম কুতুবপুর পিয়ারজান সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়। এটি ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার মোয়াজ্জেমপুর ইউনিয়নের কুতুবপুর গ্রামে অবস্থিত।
বিদ্যালযটি ২০১৩ সালে সরকারী অনুমোদন পেলেও বিদ্যালয়ের নামে কোন ভূমি না থাকার গুরুতর অভিযোগ পাওয়া গেছে।
১৯৭৪ ইং সালে কুতুবপুর গ্রামের আছর আলীর স্ত্রী পিয়ারজান বিবি বিদ্যালয়ের নামে .৫১ শতাংশ ভূমি দান করেন বলে উল্লেখ থাকলেও প্রকৃত পক্ষে দানকৃত ভূমিতে পিয়ারজান বিবির বৈধ কোন স্বত্ব ছিল না। ২০১৩ সালে সারা দেশের সাথে এই বেসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়টি সরকারী করণ করা হয়। সে সময় ওই স্থানে একটি মাদ্রাসার ভূমিতে রাতারাতি একটি দু’চালা টিনের ঘর নির্মাণ করে এটিকে বিদ্যালয় বলে চালিয়ে দেওয়া হয় এবং ৫জন শিক্ষক কর্মরত ছিল বলে দাবি করা হয়।
এদিকে সরকার কর্তৃক এই বিদ্যালয়ের জন্য একটি পাকা ভবন বরাদ্দ করার পর জমির প্রকৃত মালিকরা তাদের নিজস্ব ভূমিতে পাকা ভবন নির্মাণ করতে নিষেধ প্রদান করেন। বর্তমানে জমির প্রকৃত মালিক তফাজ্জল হোসেন সহ ৫ জন বাদি হয়ে নান্দাইল সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে মোকাদ্দমা নং ১৫১/২০১৯ ও ২৩১/২০১৯সন অন্য প্রকার ২টি মামলা দায়ের করেন। মামলা ২টি বর্তমানে বিচারাধীন রয়েছে বলে মামলার বাদী মোঃ তফাজ্জল হোসেন ও অন্যরা জানিয়েছেন।
সরেজমিন দেখা গেছে, কুতুবপুর পিয়ারজান সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে একটি অতি নিম্নমানের ৪০ ফুটের দু’চালা ঘর রয়েছে। বিদ্যালয়ের আঙিনায় কলা গাছ রোপন করা হয়েছে। বিদ্যালয়টিতে চেয়ার-টেবিল, বেঞ্চ তথা আসবাবপত্র নাই বললেই চলে। শুধুমাত্র কাগজপত্র ঠিক রেখে এবং ছাত্র/ছাত্রী সংখ্যা দেখিয়ে ২০১৩ সাল থেকে প্রধান শিক্ষক রোকেয়া খাতুন, সহকারী হালিমা খাতুন, রাবিয়া খাতুন, বাহা উদ্দিন ও খালেদা আক্তার নামে ৫ জন শিক্ষক সরকারী বেতন ভাতা গ্রহণ সহ সকল ধরনের সুযোগ সুবিধা ভোগ করছেন।
অপরদিকে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রোকেয়া খাতুন বিদ্যালয়ের জায়গার মালিক সুরুজ মিয়া, আল আমিন, আবুল ইসলাম, মোঃ মোস্তফা, সোহরাব মিয়ার নামে নান্দাইল মডেল থানায় পরপর ২টি ফৌজদারী মামলা দায়ের করে পরিবারটিকে হয়রানি সহ অর্থনৈতিক ক্ষতি সাধন করে যাচ্ছেন বলেরঅভিযোগ রয়েছে।
নান্দাইল উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো.আলী সিদ্দিক জানান, বিদ্যালয়টি সরকারী করনের সময় যারা দায়িত্বে ছিলেন তাদের চরম অবহেলা রয়েছে। বর্তমানে জায়গা নিয়ে যে সমস্যা তা স্থানীয়ভাবে ফয়সালা করা না হলে উক্ত স্থানে বিদ্যালয়ের পাকা ভবন নির্মাণ করা সম্ভব হবে না। তিনি উক্ত বিষয়ে স্থানীয় নেতৃবৃন্দকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
অপরদিকে বিদ্যালয়ের ভূমির প্রকৃত মালিকগণ দাবি করেন, কুতুবপুর পিয়ারজান সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় শুধু কাগজে পত্রে আছে। বাস্তবে তেমন কোন ছাত্র-ছাত্রী বিদ্যালয়ে নেই। তারা প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে বিষয়টি নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি করছেন।