স্টাফ রিপোর্টার : করোনার ভয়াবহতা ও সংক্রমণরোধে রমজানের আগে ঢিলেঢালা লকডাউন শুরু হলেও পহেলা রমজান থেকে কঠিন লকডাউন চলছে। এ পরিস্থিতিতে শ্রমজীবি, রিক্সা, ভ্যান, চালকসহ একটি শ্রেণী অসহায় হয়ে পড়ে। লকডাউন উপো করে ময়মনসিংহ নগরীতে কিছু কিছু রিক্সা, ভ্যান, অটো চলাচল করলে লকডাইন নিশ্চিত করতে মাঠে থাকা পুলিশ অনেকেেত্রই তাদেরকে পিছনে পাঠিয়ে দিচ্ছে।
এ অবস্থায় রমজানে অসহায়, ভ্যান, অটো, রিক্সা চালক, হতদরিদ্র খেটে খাওয়া মানুষদের ৫ টাকায় ইফতার সামগ্রী সরবরাহ করতে মাঠে নেমেছে। মানবিক পুলিশ সুপার মোহাঃ আহমার উজ্জামান শনিবার বিকালে নগরীর টাউনহল মোড়ে অসহায় মানুষদের মাঝে ৫ টাকায় ইফতার সামগ্রী সরবরাহ আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন।
পুলিশ সুপার বলেন, করোনার কারণে লকডাউনের পাশাপাশি দ্রব্যমুল্যের উর্দ্বগতির পরিস্থিতিতে অসহায়, দুঃস্থ, ভাসমান, দিনমজুর, রিক্সা, ভ্যান চালক ও নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষজন যাতে সহজলভ্য মুল্যে মানসম্মত ইফতার সামগ্রী খেতে পারে, সেই চিন্তা চেতনায় জেলা পুলিশের নিজস্ব (বেতনের টাকা) তহবিল থেকে রমজান মাসজুড়ে ইফতার সামগ্রী সরবরাহ করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। না
মমাত্র মূল্য বা প্রতীকি বা টোকেন মূল্য ৫ টাকায় এই ইফতার সরবরাহ করা হবে। নগরীর বিভিন্নস্থানে প্রতিদিন মাসজুড়ে এই কার্যক্রম চলবে বলেও পুলিশ সুপার জানান। পুলিশ সুপার আরো বলেন, লকডাউন বাস্তবায়ন করতে গিয়ে দেখা গেছে, বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা নানা পেশার বিশেষ করে অল্প ও নিম্ন আয়ের মানুষজন ইফতার কিনতে গিয়ে হয়রানীসহ মারাত্বকভাবে তিগ্রস্থ হচ্ছে। পাশপাশি অধিকমূল্য দিয়েও মানসম্মত ইফতার পাচ্ছেনা। এই বাস্তব অভিজ্ঞতার থেকে জেলা পুলিশ ইফতার বিতরণের উদ্যোগ নিয়েছে। ৬২ টাকা মুল্যের ইফতার মাত্র ৫ টাকায় সরবরাহ করা হচ্ছে
। পুলিশ সুপার আরো বলেন, প্রতিটি ইফতারে ৫৭ টাকা ভর্তুতি দেয়া হচ্ছে। পুরোটাই ভর্তুকি দেয়া সম্ভব। ইফতার ফ্রি নিলাম, কেউ যাতে এমনটা মনে করতে না পারেন এমন ধারণা থেকেই প্রতিকী মূল্য নেয়া হচ্ছে। প্রতিদিন দুই আড়াইশত মানুষের মাঝে এই ইফতার সরবরাহ করা হবে। এছাড়া কারো সহায়তা পেলে হয়তবা আরো অধিক সংখ্যক মানুষের মাঝে খাবার দেয়া সম্ভব হবে।
সমাজের বিত্তশালীদের প্রতি আহবান জানিয়ে পুলিশ সুপার আরো বলেন, যার যার সামর্থ্য রয়েছে, তারা অসহায় মানুষদের হাতে খাবার তুলে দিন। প্রত্যেকে একজন মানুষের হাতেও যদি আপনি খাবার তুলে দিতে পারেন তাহলে অনেক মানুষ উপকার পাবে।
ইফতার সামগ্রীতে রয়েছে, মুড়ি, ছোলা, পিয়াজু, বেগুনি, শষা, খেজুর, আঙ্গুর, কলা ও জিলাপী পরিমাণমত দেয়া হবে।
উল্লেখ্য চৌকস, দ ও দায়িত্বশীল পুলিশ সুপার আহমার উজ্জামান করোনাকালের শুরু থেকেই অসহায়দের পাশে দাড়িয়ে ব্যাপক আলোচনায় আসেন। অসহায়, দুঃস্থ, ভাসমান, দিনমজুর, রিক্সা, ভ্যান চালক ও নিম্ন আয়ের মানুষজনসহ নতুন করে কর্মহীন ও বেকার হয়ে পড়া মানুষদের খুঁজে খুঁজে খাদ্য, ওষুধ, নগদ টাকা, পোষাক, ঈদ সামগ্রী বিতরণ করে হয়ে উঠেন মানবিক পুলিশ অফিসার। জেলা শহর সহ আশপাশের জেলায়ও প্রচারণা পায় ময়মনসিংহের এসপি আহমার উজ্জামান একজন মানবিক এসপি। তিনি অসহায়, খেটে খাওয়া মানুষদের পাশে সব সময় রয়েছেন। চলমান লকডাউন পরিস্থিতিতে অসহায়, নিম্ন আয় ও খেটে খাওয়া মানুষদের হাতে ৫ টাকায় মানসম্মত ও মজাদার ইফতার সামগ্রী তুলে দিয়ে আবারো মাবিকতার বহিপ্রকাশ ঘটিয়েছেন আহমার উজ্জামান।
ডিবির ওসি শাহ কামাল আকন্দের তত্বাবধানে অনুষ্ঠানে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ শাহজাহান মিয়া, জয়িতা শিল্পী, ফজলে রাব্বী, কোতোয়ালীর ওসি ফিরোজ তালুকদার, ট্রাফিক পুলিশ পরিদর্শক (প্রশাসন) সৈয়দ মাহবুবুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।