গৌরীপুর (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি :
নিখোঁজ অটোরিকশা চালক শাহীনুর ইসলামের (৪৮) লাশ মিললো ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে! তিনি ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার ডৌহাখলা ইউনিয়নের নন্দীগ্রামের আব্দুর রশিদের পুত্র। সোমবার (১২ এপ্রিল/২০২১) অটোরিকশা কর্মের জন্য বাড়ি থেকে বেড়িয়ে যান। শনিবার (১৭ এপ্রিল/২০২১) তার লাশের সন্ধান মিলে হাসপাতালের মর্গে।
নিখোঁজের ঘটনায় তার স্ত্রী মোছা. পারভীন আক্তার গৌরীপুর থানায় মঙ্গলবার (১৩ এপ্রিল/২০২১) সাধারণ ডাইরি (জিডি) করেন। জিডি নং ৪৭৬। গৌরীপুর থানার অফিসার ইনচার্জ খান আব্দুল হালিম সিদ্দিকী জানান, সাধারণ ডায়রীর পরপরেই সন্ধান চেয়ে প্রত্যেক থানায় বেতারবার্তা প্রেরণ করা হয়েছিলো। লাশের সন্ধান পাওয়ার পর ময়নাতদন্ত শেষে লাশ পরিবারের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে।
অপরদিকে ময়মনসিংহ জেলা গোয়েন্দা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ শাহ মো. কামাল আকন্দ জানান, শাহিনুর ইসলামের প্রকৃত নাম-ঠিকানা গোপন করে তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সোমবার (১২এপ্রিল/২১) বিকাল ৪টা ৩০মিনিটে ভর্তি করা হয়েছে। পরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার সকাল ৯টায় মারা যায়। হাসপাতালে কিশোরগঞ্জের ঠিকানা ও আব্দুস সালাম নামে ভুয়া নাম-ঠিকানা ব্যবহার করা হয়েছে। হত্যাকান্ডে রহস্য উদঘাটন ও জড়িতদের সনাক্ত করার কাজ চলছে।
গৌরীপুর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান জানান, শাহিনুর ইসলামকে ময়মনসিংহ হাসপাতালে কিশোরগঞ্জের কান্দিপাড়ার আবু তাহেরের পুত্র আব্দুস সালাম নামে ভুয়া নাম-ঠিকানা ব্যবহার করে ভর্তি করা হয়। ধারণা করা হচ্ছে, অজ্ঞান করেন অটোরিকশা ছিনতাই সিন্ডিকেট চক্র তাকে অতিরিক্ত অজ্ঞানের ওষুধ পান করানোর কারণেই মৃত্যু হয়েছে। ময়না তদন্ত রির্পোট ও তদন্তে হত্যাকা-ের রহস্য উদঘাটনের চেষ্টা চলছে।
এদিকে শনিবার মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে পরিবার ও স্বজনদের মাঝে চলছে শোকের মাতম। ভাই’র মৃত্যুতে বারবার মুর্চা যাচ্ছেন ছোট বোন তাসলিমা আক্তার নিলা। ছেলেকে হারিয়ে মা মোমেনা খাতুন অনেকের স্মৃতিশূন্য হয়ে পড়েছেন। পবিত্র কুরআন শরীফ তেলাওয়াত করে পুত্রের আত্মার মাগফেরাত ও শহীদি মৃত্যু বলে প্রলাপ বকছেন। ভাইয়ের হত্যাকান্ডের বিচার চাইলেন তার বোন তাসলিমা আক্তার নিলা।
তিনি বলেন, বসতঘরের মালামাল কেনার জন্য সেদিন সঙ্গে ২০হাজার টাকাও নিয়ে যান।
নিহতের স্ত্রী মোছা. পারভীন আক্তার জানান, সোমবার সকালেই স্বামীর সঙ্গে শেষ কথা হয়। তিনি কোন মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে না। প্রতিদিন ১০টার দিকে চলে আসলেও সেদিন আর ফিরে আসেনি। সারারাত অপেক্ষা ও আত্মীয়-স্বজনদের বাড়িতে খোঁজ-খবর নিয়ে তার কোন সন্ধান মিলেনি।
অবশেষে সকালে থানায় এসে সাধারণ ডায়রী করেন। তিনি বলেন, বসতঘরের অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করতে চেয়েছিলেন। সেই কাজ আর করে যেতে পারলেন না। হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটন ও জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক বিচারের দাবি জানান তিনি।