ময়মনসিংহে অসহায়দের ১০ টাকায় দুদিনের আহার বিক্রি শুরু করেছে জেলা পুলিশ

প্রকাশিত: ৬:১৭ অপরাহ্ণ, জুলাই ৭, ২০২১

স্টাফ রিপোর্টার :

”সবার রান্না ঘরে ভাতের গন্ধ ছুটুক” এ প্রতিপাদ্য নিয়ে ময়মনসিংহ জেলা পুলিশ দুঃস্থ/কর্মহীন মানুষের জন্য স্বপ মুল্যের দোকান ১০ টাকায় দু’দিনের আহার বিক্রি শুরু করেছে। বুধবার নগরীর টাউনহল মোড় সংলগ্ন পুলিশ অফিসার্স কাবমাঠে আনুষ্ঠানিকভাবে এ কার্যক্রম উদ্বোধন করেন ময়মনসিংহের মানবিক পুলিশ সুপার মোহাঃ আহমার উজ্জামান।

এ সময় পুলিশ সুপার বলেন, লকডাউনের বিধি নিষেধ প্রতিপালনে রাস্তায় বের হওয়া কর্মহীন দুস্থ মানুষজনকে আমরা ঘরে ফেরৎ পাঠাচ্ছি। পাশাপাশি সেই সব অনাহারী পরিবারে উদ্ভুত মানবিক বিষয়টিকেও গুরুত্ব দিচ্ছি। সেই ভাবনা থেকেই পুলিশের এই মানবিক উদ্যেগ। পুলিশের পরিদর্শক থেকে উর্ধতন কর্মকর্তারাদের স্বেচ্চা অনুদানের অর্থে এই কর্মসুচী হাতে নেওয়া হয়েছে। চলবে কঠোর লকডাউন শেষ না হওয়া পর্যন্ত।

পুলিশ সুপার আরো বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দায়িত্বশীলতার সাথে করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলা চেষ্ঠা করছেন। আমরা সরকারী কর্মচারী লকডাউন পরিস্থিতিতেও বেতন পাচ্ছি এবং ভাল আছি। আমাদেরও দায়িত্ব আছে। সেই দায়িত্ব থেকেই হকার, স্বল্প আয়ের মানুষজন এবং নতুন করে বেকার, কর্মহীন হয়ে পড়া ও অসহায়, দুঃস্থ ও নিরন্ন মানুষজনের পাশে দাড়াতে ”সবার রান্না ঘরে ভাতের গন্ধ ছুটুক” এমন উদ্যোগ নিয়ে ১০ টাকায় খাদ্য বিতরণ করা হচ্ছে। যাতে ময়মনসিংহ নগরীতে কেউ অনাহারে না থাকে।

পুলিশ সুপার আরো বলেন, প্রতিদিন দেড় দুই শতাধিক অসহায়, বেকার, কর্মহীন ও দুঃস্থ মানুষের মাঝে এই আহার বিক্রি অব্যাহত থাকবে। নগরীর বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে প্রতিদিন জেলা পুলিশ ঘুরে ঘুরে আহার বিক্রি করবে। এ জন্য জেলা পুলিশ আগে থেকে অসহায়, বেকার, কর্মহীন ও দুঃস্থদের তালিকা করবে।

পুলিশ সুপার আরো বলেন, লকডাউনের কারণে মানুষজন ঘর থেকে বের হতে না পেরে অনেকেই নতুন করে কর্মহীন হয়ে পড়েছে। জেলা পুলিশ লকডাউন বাস্তবায়নে মানুষকে নিজ নিজ ঘরে রাখতে ভুমিকা পালন করছে।

তিনি আরো বলেন, একটি পরিবারের দু’দিন চলবে সেই পরিমান খাদ্যপন্য দেওয়া হচ্ছে। সমাজের বিত্তবান কেউ পুলিশের এই উদ্যোগে সারা দিলে তাদেরকেও গ্রহণ করা হবে। বিতরনকৃত খাদ্যপন্যের মধ্যে ছিল, পাচ কেজি চাউল, এক কেজি ডাল, আধা লিটার সয়াবিন তৈল, আধা কেজি লবন, আলু দুই কেজি, পরিমানমত মশলা, পেয়াজ, রসুন ও কাচা মরিচ ।

উলেখ্য, এর আগে রমজানে অল্প আয়ের মানুষের মাঝে ৫ টাকায় প্রতিকী মুল্যে ইফতার সরবরাহ করে জেলা পুলিশ। করোনা সংক্রমণরোধে লকডাউন পরিস্থিতিতে রমজান মাসজুড়ে অসহায়, দুঃস্থ, ভাসমান, দিনমজুর, রিক্সা, ভ্যান চালক ও নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া মানুষ যাতে কমমুল্যে মানসম্মত ইফতার খেতে পারে, সেই চিন্তা চেতনায় জেলা পুলিশ নিজস্ব (বেতনের টাকা) তহবিল থেকে ইফতারি সরবরাহ করা হয়েছে। নামমাত্র মূল্য বা প্রতীকি বা টোকেন মূল্য ৫ টাকায় প্রতিদিন প্রায় তিন শতাধিক মানুষের মাঝে এই ইফতার সরবরাহ করা হয়। রমযানে মাসব্যাপী ৫ টাকায় ইফতার বিতরণ করে মানুষের মধ্যে খ্যাতি অর্জন করে জেলা পুলিশ।

 

এ সময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) খন্দকার ফজলে রাব্বী, আবু রায়হান, ফাল্গুনী নন্দী, আলাউদ্দিন, কোতোয়ালী মডেল থানার ওসি ফিরোজ তালুকদার, ডিবির ওসি শাহ কামাল আকন্দ, ট্রাফিক পুলিশ পরিদর্শক (প্রশাসন) সৈয়দ মাহবুবুর রহমানসহ অন্যান্য কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।