স্টাফ রিপোর্টার : ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশন সহ জেলার ১৩ উপজেলার ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে সকাল থেকে কেন্দ্রে কেন্দ্রে গণটিকাদান কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
২৫ বছরের উর্ধ্বে টিকা গ্রহিতাগণ সুশৃংখল ভাবে লাইনে দাড়িয়ে ভোটার আইডি কার্ডের মাধ্যমে টিকা গ্রহণ করছেন। এসময় বিভাগীয় কমিশনার, ডিআউজি, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপারসহ জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাগণ বিভিন্ন টিকা কেন্দ্র পরিদর্শণ করেছেন।
গণটিকার প্রথমদিনে ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশনের ৩৩টি ওয়ার্ডের ৬৬ টি বুথে শনিবার আনুষ্ঠানিকভাবে টিকা প্রদান কার্যক্রম উদ্বোধন করা হয়েছে। এর আগে সকালে প্রতিটি টিকাদান কেন্দ্রে (বেশির ভাগ স্কুল এবং কলেজ) ভ্যাকসিন সহকারে টিকাদান কর্মী, ডাটা এন্ট্রি অপারেটর, স্বেচ্ছাসেবকরা যথা সময়ে উপস্থিত হন।
প্রত্যেক টিকা গ্রহিতা যাতে সহজেই টিকাদান কেন্দ্র চিনতে পারেন সেই লে সিটি কর্পোরেশনের প থেকে প্রতি কেন্দ্রে ব্যানার ও স্বেচ্ছাসেবকদের জন্য টিকা নিন, সুস্থ থাকুন লিখা সম্বলিত টি শার্ট সরবরাহ করা হয়েছে। প্রতিটি কেন্দ্রে মাইকের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। সকল ধরণের সমস্যা নিরসনে প্রতি কেন্দ্রে সমন্বয়ের জন্য কর্মকর্তা, আনসার ও পুলিশ নিয়োগের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
সুষ্ঠভাবে টিকা সম্পন্নের জন্য এর আগে সকল পর্যায়ের প্রশিন সম্পন্ন করা হয়। টিকা পরবর্তী বিশেষ পরিস্থিতি মোকাবেলায় মেডিকেল টিম এবং এম্বুলেন্সের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। মেডিকেল বর্জ্য যথাসময়ে অপসারণে সিটি কর্পোরেশনের পরিচ্ছন্নতাকর্মী কাজ করে।
চাহিদা মাফিক টিকা সিভিল সার্জন অফিস থেকে সংগ্রহ করে সিটি কপোরেশন সংরণ করা হয়।
বিভাগীয় কমিশনার, ডিআইজি, পরিচালক( স্বাস্থ্য), জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, সিভিল সার্জনসহ সংশ্লিষ্টদের সাথে সার্বনিক যোগাযোগ ও সহযোগিতা নিয়ে সিটি কপোরেশেন এই টিকাদান কার্যক্রম পরিচালনা করছে। সিটি মেয়র ইকরামূল হক টিটু সার্বিক বিষয় মনিটরিং ও করণীয় বিষয়ে নির্দেশনা দেন।
সকাল ৯টা থেকে বেলা ৩ টা পর্যন্ত ২৫ উর্ধ্ব বয়সের নারী পুরুষের মাঝে এই টিকা প্রদান করা হয়। এ কার্যক্রম রবিবার ৮ ও সোমবার ৯ আগষ্ট পর্যন্ত চলার কথা রয়েছে। সিটি এলাাকায় প্রতিটি বুথে ৩শত করে প্রতিদিন ১৯ হাজার ৮শত জনকে টিকা প্রদান করা হয়। তিনদিনে ৫৯ হাজার ৪শতজনকে টিকা দেওয়ার প্রস্তুুতি নেয়া হয়েছে। সময় বাড়ার সাথে পাল্লা দিয়ে প্রতিটি টিকাদান কেন্দ্রে গ্রহিতার সংখ্যা হুমড়ি খেয়ে বাড়তে থাকে। প্রতিটি বুথে ৩শত করে টিকাদান করার কথা থাকলেও বেলা গড়িয়ে দুপুর হতে থাকলে কোন কোন বুথে হাজারেরও বেশি টিকা গ্রহিতার সংখ্যা দেখা যায় অনেক লাইনে।
টিকাদান প্রসঙ্গে মেয়র মোঃ ইকরামুল হক টিটু বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ বাস্তবায়নে আমরা বদ্ধপরিকর। ওয়ার্ড পর্যায়ে টিকাদান কর্মসূচিকে সফল করতে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করে যাচ্ছি। ইতোপূর্বে দেশে করোনা টিকাদানের শুরুতে সর্বাধিক মানুষের টিকাগ্রহণ নিশ্চিতে সফল হয়েছি। জনগণ সুন্দর পরিবেশে অত্যন্ত স্বাচ্ছন্দের সাথে টিকা গ্রহণ করতে পেরেছেন। ওয়ার্ড পর্যায়ে গণটিকা কার্যক্রমেও এর ব্যতিক্রম হবে না। ওয়ার্ড কাউন্সিলরবৃন্দ এবং কর্মকর্তা-কর্মচারিবৃন্দ অত্যান্ত আন্তরিকতার সাথে এ কাজে আত্মনিয়োগ করেছেন।
তিনি আরো বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশের মানুষ নিরাপদ। বহু উন্নত দেশের তুলনায় আমরা টিকাদান কার্যক্রমে এগিয়ে আছি। প্রধানমন্ত্রীর সুদৃঢ় নেতৃত্বে আজ গণটিকা কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারছি। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বেই সম্ভব দ্রুততম সময়ে দেশের সর্বাধিক মানুষকে করোনা টিকার আওতায় আনা।
ময়মনসিংহ বিভাগীয় কমিশনার শফিকুর রেজা বিশ্বাস চরনিলয়িা ইউনিয়নসহ বিভিন্ন টিকাদান কেন্দ্র পরিদর্শন করেন। জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এনামূল হক নগরীর মুকুল নিকেতন উচ্চ বিদ্যালয় টিকাদান কেন্দ্রসহ বিভিন্ন টিকাকেন্দ্র পরিদর্শন করেন। এছাড়া পুলিশ সুপার মোহাঃ আহমার উজ্জামান নগরীর বিভিন্ন টিকাদান কেন্দ্র পরিদর্শন করেন। এ সময় পুলিশ সুপার প্রতিটি কেন্দ্রের সার্বিক পরিস্থিতি খোজ খবর নেন এবং সকলকে টিকা নিতে আহবান করেন।
এদিকে সিভিল সার্জন ডাঃ নজরুল ইসলাম জানান, গত ২৪ ঘন্টায় ৪৬৬টি নমুনা পরীায় ১০৭ জনের দেহে করোনা শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ২৯.৩৯ শতাংশ। ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে গত ২৪ ঘন্টায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে করোনায় ৩ জন ও উপসর্গ নিয়ে ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে।