গৌরীপুর (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি :
যন্ত্রণার অবসান, খাইলে বাঁচে না; ঘ্রাণে ঘরে থাকে না! এক কাঠি আর এক লাটি বাড়িতে থাকলে আপনি শত্রুমুক্ত! এমন মনোমুগ্ধ কথায় মজমায় ভিড় জমে ময়মনসিংহের গৌরীপুরে।
১০টাকা মূল্যের শয়তানের লাঠি আর যাদুর কাঠি নামে অনুমোদনবিহীন বিষ হাতে তুলে দিয়ে প্রকাশ্যে চলছে প্রতারণা। ইঁদুর, তেলাপোকা, চিকা, টিকটিকিসহ বিভিন্ন প্রাণী হত্যার জন্য প্রকাশ্যে পলিথিনে মোড়ানে বিষ বিক্রি করে প্রতিদিনই শতশত মানুষকে প্রতারণা করছেন।
শুক্রবার এ দৃশ্য দেখা যায় শহরের মধ্যবাজার, পাটবাজার, কালিপুর মধ্যম তরফ ও উত্তর বাজারে।
পাটবাজারে শয়তানের লাঠি আর যাদু কাঠি বিক্রির সময় কথা হয় বিক্রেতা মোঃ মোশারফ হোসেনের সঙ্গে। তার বাড়ি নয়াগাঁ জেলার আত্রাই উপজেলার সাহেবগঞ্জে। তার বাবার নাম মৃত ইয়াসিন হোসেন।
তিনি নিজেই স্বীকার করেন এ বিষ বিক্রির সরকারি কোন অনুমোদন নেই। নেই কোন কোম্পানির নামও। বিষের বিষক্রিয়া সম্পর্কেও তিনি কিছু জানেন না। ‘শয়তানের লাঠি আর যাদুর কাঠি’ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মানুষকে আকর্ষণ করার জন্য এ নাম দেয়া হয়েছে।
তিনি আরো জানান, প্রতিদিন ৪/৫শ পিচ কাঠি আর লাঠি বিক্রি করছেন। প্রতিটির দাম ১০টাকা। ভ্যান ভাড়া ও দুর থেকে আসায় থাকা-খাওয়া বাদে যে টাকা পান, তা দিয়ে চলে দু’সন্তানের লেখাপাড়া।
এ দিকে প্রকাশ্যে এ বিষ বিক্রিকে বিপদজ্জনক বলে আখ্যায়িত করেছেন উপজেলা স্বাস্থ্য পরিদর্শক গৌতম কুমার সেন।
তিনি বলেন, স্বাস্থ্যবিধি না মেনে ও অনুমোদন ব্যতিত এ ধরনের বিষ বিক্রি সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ। উপজেলা কৃষি অফিসার লুৎফুন্নাহার বলেন, সরকারের অনুমোদিত প্রতিষ্ঠান ব্যতিত যে কোন ধরণের কীটনাশক বা বিষ বিক্রি নিষিদ্ধ। এ ধরণের বিষ ব্যবহারে পরিবেশের বিপর্যয় ঘটে।
স্বজন মেডিকেল টিম প্রধান ডাঃ একেএম মাহফুজুল হক বলেন, পলিথিনে মোড়ানো খোলা বিষ, কোম্পানীর নাম নাই, নেই ব্যবহার বিধি, সরকারেরও অনুমোদন নেই। এটা পরিবেশ, পরিবার ও শিশুদের জন্য মারাত্মক বিপদজ্জনক।
কাঠি আর লাঠি কিনতে আসা মইলাকান্দা ইউনিয়নের ষোলগাই গ্রামের ফজর আলী জানান, ফসল নষ্ট করে দিচ্ছে ইঁদুর তাই কিনেছি, কি হবে, না হবে; সেটা বুঝি নাই।
তবে তিনি স্বীকার করে বিষ সময়ই বিপদজ্জনক আর খোলা পলিথিনে বিষ মারাত্মক বিপদজ্জনক!