স্টাফ রিপোর্টার : ময়মনসিংহ সদরের চর হরিপুর গজারিয়া বিলের অবৈধ পুকুুরের পাড় কর্তন করে পানি নিস্কাশনের ব্যবস্থা করার দাবীতে ময়মনসিংহে সংবাদ সম্মেলন করেছে সদর উপজেলার চর হরিপুর, চর আলালপুর, চর বড়বিলা ও বাজিতপুরের গ্রামবাসি।
শনিবার ১৪ নভেম্বর সকালে ময়মনসিংহ প্রেসকাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান জেসমিন আরা পলি।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন অ্যাডভোকেট এমদাদুল হক মিল্লাত, মোফাজ্জল হোসেন, কামরুজ্জামান লিটন সরকার, বীর মুক্তিযুদ্ধা হাবিবুর রহমান, জালাল উদ্দিন, ইউপি সদস্য আব্দুল খালেক শফিসহ এলাকাবাসি।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, মমনসিংহের সদর উপজেলার চরঈশ্বরদিয়া চরহরিপুর মৌজার ৫৭২, ৫৭৩, ৯৪৩, ১২৪৫ দাগে প্রায় ৩৮ একর খাস জমি নিয়ে গজাড়িয়া বিল বিদ্যমান। যুগ যুগ ধরে বর্ষা মৌসুমে অতি বৃষ্টির সমস্ত পানি প্রবাহিত হয়ে আসছে।
কতিপয় অসাধু ভূমি কমর্কতার যোগসাজসে উমর আলী ব্যাপারী, তার ছেলে ফজলুর রহমান, খলিলুর রহমান আর কিছু ভুয়া ভূমিহীন সাজিয়ে মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার আগেই সাফকাওলা মূলে অবৈধ মালিক হয়ে গজারিয়া বিলে পাড় বেধে পুকুর নির্মাণ করে পানি নিষ্কাশনের সমস্ত পথ নষ্ট করে চর হরিপুর, চর আলালপুর, চর বড়বিলা ও বাজিতপুরসহ বিস্তৃর্ণ এলাকা জলাবদ্ধতা সৃষ্টি করে। ফলে হাজার হাজার একর জমির ফসল বিনষ্ট হয় ও এলাকাবাসির ভোগান্তির সৃষ্টি হয়।
এবার বর্ষাতেও কৃত্রিম জলাবদ্ধতার কারনে ১ হাজার একর জমির প্রায় ৫০ হাজার মণ ধান ও সবজি পানির নিচে ডুবে যায়। এতে সরাসরি ১৫ হাজার মানুষ তিগ্রস্থ হয়। ক্ষতিগ্রস্থ এলাকাবাসীদের নিয়ে গত ১১ অক্টোবর চর ঈশ্বরদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সামনে চরহরিপুর গ্রামে জলাবদ্ধতা নিরসণের দাবীতে হাজার হাজার লোকের মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
২৮ সেপ্টেম্বর অবৈধ বিলের পুকুরের পাড় কেটে পানি নিস্কাসনের দাবীতে জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছে এলাকাবাসী। সর্বশেষ ৪ নভেম্বর একই দাবীতে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে স্মারকলিপি দিয়েও কোন সুরাহা হচ্ছে না।
সংবাদ সম্মেলনে দাবী করা হয়, ১৯৯৯ সাল থেকে গজারিয়া বিল দখল করে ভুমি দস্যুরা কৃত্রিম পুকুর নির্মাণ করে পানি নিস্কাসনের পথ বন্ধ করে কৃত্রিম জলাবদ্ধতা তৈরি করছে। সেই সময় বিভিন্ন দৈনিকে জলাবদ্ধতার নিউজ ছাপা হলে বিলের পত্তন বাতিল করার জন্য জেলা প্রশাসনের কার্যালয়ে মফিজ উদ্দিন সরকার বাদী হয়ে দরখাস্ত দায়ের করলে সহকারী কমিশনার (ভুমি) বিগত ২১/০৪/১৯৯৯ তারিখে নোটিশ প্রদান করেন। উক্ত নোটিশ অমান্য করে পাড় তুলে পুকুর তৈরী করে পানি নিস্কাসন পথ বন্ধ করে দেয়। বিগত ২১/০৬/২০১০ তারিখ সহকারী কমিশনার অতিরিক্ত প্রশাসক (রাজস্ব) গজারিয়া বিলের অর্ন্তভুক্ত চর হরিপুর মৌজার জমি বিধি বর্হিভুতভাবে বন্দোবস্ত প্রদানের পেেিত তথ্য বিবরনি দাখিল প্রতিবেদন প্রদান করেন। এর পুর্বে বিগত ০১/০৮/১৯৯৯ তারিখ চর হরিপুর মৌজার বিলের বন্দোবস্তকৃত খাসজমি সরেজমিনে তদন্ত করার ল্েয উপজেলা কৃষি খাস জমি ব্যবস্থাপনা ও
বন্দোবস্তকৃত কমিটি এক কায্যবিবরনী লিপিবদ্ধ করেন যার প্রেেিত পুরোল্লিখিত প্রতিবেদন লিপিবদ্ধ হয়। এর প্রেেিত তৎকালীন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) এ সমস্ত খাস জমি ধনবান ব্যক্তিদের অধিকারে চলে যাওয়ায় তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের উদ্যোগ নিলে তখন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব)কে বিবাদী করে ১ম যুগ্ন জেলা আদালতে মিথ্যা দেওয়ানী মামলা দায়ের করেন যাতে সরকার কোন ব্যবস্থা না নিতে পারে। বর্তমানে ৩৮/২০০০ নং সেই মামলাটি বর্তমানে খারিজ হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে আরো বলেন, উমর আলী বেপারীদের ভুমিহীন সেজে ভোগ দখল করে মাছের খামার তৈরি করে বাধ দিয়ে পানি নিস্কাশনের পুরোনা খাল বন্ধ করার কারণে অবৈধ পত্তন বাতিল, পরোনা খালে যাতে পানি নিস্কাশন হতে পারে তার সকল বাধা অপসারণ করা, পানি নিস্কাশনের নামে মানুষের ব্যক্তিগত সম্পত্তি বিনষ্ট না করা, অবৈধভাবে নামে বেনামে মাছের খামার এর লিজ বালিত করা, খাস জমি ধনবান ব্যক্তিদের কাছ থেকে দখলমুক্ত করে পানি নিস্কাসনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা এবং সরকারি সম্পত্তি সরকারের নিকট ফেরত নেওয়ার আদেশ দেওয়ার আহবান জানান।
ক্ষতিগ্রস্থরা হুশিয়ারি দিয়ে জানায়, যদি সরকার ও সংশ্লিষ্ঠ কর্তৃপক্ষ কোন পদপে না নেয় তবে ব্যপকভাবে আন্দোলন করা হবে।