ত্রিশালে রকিব ওয়েল ফেয়ারের নতুন ঘর পেয়ে খুশি ফজিলা খাতুন

প্রকাশিত: ১১:২৪ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ২, ২০২০

ত্রিশাল (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি :
প্রায় ১৫ বছর আগে স্বামীকে হারান ফজিলা। তিন মেয়ে ও একজন প্রতিবন্ধী ছেলেকে রেখে মারা যান স্বামী। ভিটেমাটি ও সহায় সম্বলহীন পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিকে হারিয়ে গ্রামে গ্রামে ভিক্ষাবৃত্তি শুরু করেন তিনি।

একটি জরাজীর্ণ ঘরে পরিবারের পাঁচ সদস্যকে নিয়ে ভিক্ষাবৃত্তির উপার্জনে মানবেতর জীবন যাপন করে আসলেও জনপ্রতিনিধি ও বিত্তশালীরা কেউ এগিয়ে আসেনি। দ্বারে দ্বারে ঘুরেও তিন মেয়ে ও এক প্রতিবন্ধী ছেলেকে নিয়ে বসবাসে উপযোগি কোন ঘর পাননি ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার বইলর ইউনিয়নের চরপাড়া গ্রামের মৃত উমর আলীর ৬৫ বছর বয়সি স্ত্রী ফজিলা খাতুন।

অবশেষে ফজিলার অসহায়ত্বের কথা খবর পেয়ে এগিয়ে আসেন ত্রিশালের সেচ্ছাসেবী সামাজিক সংগঠন রকিব ওয়েল ওয়েল ফেয়ার ফাউন্ডেশন। ফজিলার জন্য নির্মাণ করেন দেন নতুন একটি ঘর। নতুন ঘর পেয়ে খুশিতে আত্মহারা তিনি।

জানা যায়, প্রায় ১৫ বছর আগে তিন মেয়ে ও একজন প্রতিবন্ধী ছেলেকে রেখে মারা যান ফজিলা খাতুনের স্বামী উমর আলী। স্বামীর মৃত্যুর পর তিনি প্রতিবন্ধি ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে গ্রামে গ্রামে ঘুরে ভিক্ষা করে কোন রকম জীবন যাপন করছিল। ভিক্ষাবৃত্তি করে সংসার চললেও মাথা গোঁজার ঠাঁই ছিলনা তার। ভিটেমাটি ও সহায় সম্বলহীন ওই নারী একটি জরাজীর্ণ ঘরে বসবাস করত। একটি ঘরের জন্য ফজিলা সমাজপতিদের দ্বারে দ্বারে ঘুরলেও পাননি একটি ঘর।

অবশেষে ফজিলার অসহায়ত্বের কথা খবর পেয়ে এগিয়ে আসেন ত্রিশালের সেচ্ছাসেবী সামাজিক সংগঠন রকিব ওয়েল ওয়েল ফেয়ার ফাউন্ডেশন। যাচাই বাছায়ে প্রাপ্যতা অনুযায়ী অগ্রাধীকার ভিত্তিতে দ্রুত একটি বসতঘর ফজিলা খাতুনকে করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় রকিব ওয়েল ওয়েল ফেয়ার ফাউন্ডেশন।

দ্রুত সময়ের মধ্যে ফজিলার জন্য নির্মাণ হয় একটি নতুন ঘর। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমানের মাধ্যমে তোলে দেয়া হয় ঘরের চাবি। নতুন ঘর পেয়ে খুশিতে আত্মহারা হন তিনি।
ফজিলা খাতুন জানান, সোয়ামি (স্বামী) মইরা যাইবার পড়ে, বহুত দুক্ক শোকে দিন রাইত কাডাইছি। নেম্বর-চেরমেন আর টেহা উলা বড়লোক গর বোগলে গেছি, এককান ঘর পাই নাই। অহন আর দুক্কু নাই। রকিবের ঘর পাইয়া বিরাট ভালা লাকতাছে।

রকিব ওয়েল ফেয়ার ফাউন্ডেশনের মিনহাজ জানান, আমাদের ফাউন্ডেশনের দরিদ্রদের জন্য গৃহ নির্মাণ প্রকল্পের এটি ৪ নম্বর প্রকল্প। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে প্রত্যেক সদস্যেরই অনেক অবদান। এভাবেই আমরা সমাজিক কর্মকান্ডে আরো দুর এগিয়ে যেতে চাই।
ইউএনও মোস্তাফিজুর রহমান জানান, নিঃসন্দেহে এটি একটি ভাল কাজ, এসকল কাজে সকলকে এগিয়ে আসা উচিত। সরকারের পাশাপাশি সেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলো এগিয়ে আসলে সমাজের অনেক উপকার হবে।