সরিষাবাড়ী (জামালপুর) প্রতিনিধি : জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে তারাকান্দি যমুনা সারকারখানা এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের দু’পরে ঘন্টাব্যাপী সংঘর্ষ, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, গুলিবর্ষণ ও ৩টি মটরসাইকেল পুড়ানোসহ সেলিম, নূরনবী, সুমন, আবু কালাম, ইউসুব এদের ৫টি দোকান ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে।
মঙ্গলবার (১৫ ডিসেম্বর) রাত ৮টার দিকে উপজেলার পোগলদিঘা ইউনিয়নের তারাকান্দি গেইটপাড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। দু’পরে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় সংঘর্ষে, গুলিবিদ্ধ উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন ও পুলিশ সদস্যসহ উভয়পরে প্রায় অর্ধশত আহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
এ ঘটনায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ কয়েকটি ফাঁকা গুলি ছুঁড়েছে। পরে তারাকান্দি তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশ অনেক চেষ্টা চালিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন আনে।
এ ব্যাপারে সরিষাবাড়ী উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম জানান, তারাকান্দি গেইটপাড় এলাকায় সরিষাবাড়ী উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুনের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা বিজয় দিবসে ফুল দেয়ার জন্য প্রস্ততি নিচ্ছিল। এ সময় স্থানীয় এমপির প্রতিনিধি সাখাওয়াতুল আলম মুকুলের নেতৃত্বে ৭০/৮০ জন নেতা-কর্মী তাদের উপর হামলা চালিয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে আহত করে।
এ খবর ছডিয়ে পড়লে দু’পরে লোকজন সংঘটিত হলে তাদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও রক্তয়ী সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষ চলাকালে সাখাওয়াতুল আলম মুকুল ও তার লোকজন আমাদের লোকজনকে উদ্দেশ্য করে কয়েকটি গুলি বর্ষণ করে।
আমরা যাতে বিজয় দিবস পালন করতে না পারি এ জন্য পরিকল্পিতভাবে এ ঘটনা ঘটিয়েছে। সংঘর্ষে উভয় পরে আহতরা হলেন, সরিষাবাড়ী উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন (২৬), ফাহিম (১৮), মিজানুর রহমান (২৫), হেলাল উদ্দিন (২৫), হাফিজুর রহমান (২৫), সাগর মিয়া (১৮) আব্দুল আজিজ (৪২), গাজিউর রহমান (৫৫), অন্তর (১৬), ইউসুফ আলী, জাহিদুল হাসান রনি (২১), উজ্জল মিয়া (৩৩) আজমত আলী (৩৬), সাইফুল ইসলাম (৩৩), বেলাল হোসেন (৪০), মিন্টু মিয়া (৩৫) সাজিদ হাসান (২১) জাকির হোসেন, আনোয়ার হোসেন (৫০), লাল চান (২৪), লিটন মিয়া (৩৫), ঠান্ডু মিয়া (৩২)। আহতদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং গুরুতর আহতদের জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে প্রেরন করা হয়েছে।
গুলিবিদ্ধ উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন, ঠান্ডু মিয়া, হাফিজুর রহমান, মিজানুর রহমান, স্বপন মিয়া ও আবুল হোসেনসহ ৬ জনকে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ব্যাপারে এমপির প্রতিনিধি সাখাওয়াত আলম মুকুল এর উপর আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর ভাষ্কর্য ভাংচুরের ঘটনায় আওনা ইউনিয়নে বিােভ মিছিল শেষে তারাকান্দিতে আসি। সেখানে ১৬ ডিসেম্বর পালন উপলে যুবলীগের তৈরী মঞ্চে আসলে রফিকুল ইসলামের লোকজন আমাদের উপর হামলা করে এবং বঙ্গবন্ধুর ছবি ও মঞ্চ ভাংচুর করে।
এখানে গুলিবর্ষণের কোনো ঘটনা ঘটেনি। তারাকান্দি পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ পরিদর্শক তরিকুল ইসলাম তালুকদার বলেন, স্থানীয় আওয়ামী লীগের দু’পরে মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়। গুলি বর্ষণ ও হতাহতের কোনো ঘটনা ঘটেনি। এ সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশও ফাঁকাগুলি করেনি। এ ঘটনায় এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
এ ব্যাপারে সরিষাবাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ্ব ছানোয়ার হোসেন বাদশা জানান, আওয়ামী লীগের দু’পক্ষের সর্মথকদের মধ্যে সংর্ঘষ হয়েছে। সরিষাবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ আবু মোঃ ফজলুল করীম জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনা হয়েছে। সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রনে আনতে তারাকান্দি পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের পরির্দশক তরিকুল ইসলাম তালুকদার ও পুলিশ সদস্য আব্দুস সালাম, সাইফুল ইসলামসহ ৩ জন আহত হয়েছে। এ ঘটনায় কোন অভিযোগ পাওয়া যায়নি।
অভিযোগ পেলে তদন্ত করে দোষীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। এ ব্যাপারে তথ্য প্রতিমন্ত্রী আলহাজ্ব ডাঃ মুরাদ হাসান এমপি বলেন, এটি একটি অনাকাংখিত ঘটনা। দলের মধ্যে বিশৃংখলা আমি কোন ভাবেই মেনে নেব না। আমি বিশৃংখলা চাই না। ঘটনাটি কিভাবে কেন ঘটেছেআমি তাও জানি না।