মো. আবুল কালাম আজাদ :
মোহনগঞ্জের উদ্দেশ্যে পাগলপ্রায় ছুটে চলার বিরতিলগ্নে ২৩ জানুয়ারি ময়মনসিংহের সার্কিট হাউসে তাঁর সাথে ক্ষণিকের দেখা। অস্বস্থি আর ব্যস্ততার ছাপ তাঁর চেহারায়। মানুষের অতি কাছে দ্রুত পৌঁছে যাওয়ার আকুতি দেখলাম তাঁর অভিব্যক্তিতে। ‘আমি ঘুমোতে পারিনা! ঘুমোতে পারিনা আর! আমার ঘুম-বিশ্রাম আর নিত্যদিনের কোন কাজ, আমার স্বাভাবিক জীবনাচার, আমার পরিবার, আমার পরিপার্শ্ব, আমার —- আমার কোনকিছুতেই স্বস্থি নেই! স্বস্থি নেই মানেই আমি প্রতিটিক্ষণ অস্বস্থিতে আচ্ছন্ন! আমার নেশা, সমাজ আর মানুষের জন্য কাজ করা।
আমার অস্বস্থি কীভাবে হাওরের মানুষের কল্যাণ সাধন করা যায়। কীভাবে পশ্চাৎপদ-আলোহীন-ভালোবাসাহীন আর অবহেলিত জনপদ আলোয় আলোয় ভালোবাসায় ভরিয়ে দেয়া যায় — এইইতো আমার অস্বস্থি!’ রাজধানী ঢাকা থেকে পাগলপ্রায় ছুটে আসা মানুষটি প্রতিটি মুহূর্তেই অস্বস্থি আর যন্ত্রণা কাতর সময় পাড় করছেন তাঁর দীর্ঘ কর্মজীবনের অবসরের পরও।
অথচ তিনি তাঁর অবসরের সময়গুলো শুয়ে-বয়ে-বেড়িয়ে পরিপূর্ণ স্বস্থিতে কাটাতে পারতেন। অবশ্য তিনি তা করছেননা। জগৎ-সংসারে যে গুটিকয়েক মানুষ নিজের স্বাদ-আহলাদ-আয়েশ আর বিলাসিতাকে উপো করেছেন তাঁরাই কেবল বেঁচে আছেন মরে গিয়েও। তি
নিই আমাদের তথা আলোহীন জনপদের ভালবাসার মানুষ সাজ্জাদুল হাসান যাকে এই গল্পের লেখক হাওর পাড়ের মানুষের ‘মানবিক অভিভাবক’ হিসেবে অভিহিত করেছেন। হ্যাঁ পাঠক, আমি বলছিলাম হাওর পাড়ের মানুষের মানবিক অভিভাবক সর্বপ্রিয় সাজ্জাদুল হাসান এবং তার ভাবনা ও স্বপ্নের কথা। যে মানুষটি নানা প্রতিকূলতাকে উপো করে মোহনগঞ্জের কাদামাখা আলপথ দিয়ে ছুটে চলেছেন সাধারণের কাছে, দশের কাছে ।
২৪ জানুয়ারি থেকেই তিনি ছুটে বেড়িয়েছেন তাঁর চিরচেনা মানুষের কাছে, স্বজনের কাছে। যেখানে তাঁর স্বপ্নেরা প্রাণ সঞ্চারের অপোয় অপেমান। আলোর মুখ দেখার অপোয় থাকা তথা প্রাণের সঞ্চার হতে চলছে তাঁর অনেকগুলো স্বপ্নের পরও এবার তিনি দেখেছেন আরও আরও নতুন স্বপ্ন। তথাকথিত বক্তব্য আর কথার ফুলঝুরি নয়। তাঁর স্বপ্ন আর কথামালাই মানুষের মধ্যে বিশ্বাস আর আশার আলো দেখায়। বাস্তব প্রতিফলন দেখার অপোয় মানুষ শুধু ক্ষণ গুণে। কাদামাখা আলপথ দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে এবার তিনি যে স্বপ্নগুলো বুনেছেন তার মধ্যে রয়েছে (ক) মোহনগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশনের দুপাশ আরও ৬ শত ফুট বড় হবে। রেললাইন হবে ৩ টি।
ঢাকা বিমানবন্দর স্টেশনের আদলে অত্যাধুনিক ডিজিটাল রেলওয়ে স্টেশন হবে মোহনগঞ্জ। (খ) মোহনগঞ্জ-চট্টগ্রাম রেল যোগাযোগের সম্ভ্যবতা যাচাই করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা নির্দেশনা প্রদান করেছেন যথাযথ কর্তৃপরে কাছে। (গ) এলজিইডি‘র তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ও সড়ক ডিজাইন সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণকে নিয়ে তিনি তেতুলিয়া থেকে গাগলাজুর পর্যন্ত রাস্তা পরিদর্শন করেছেন।
যথা শীঘ্রই হাজারো মানুষের আকাক্সার বাস্তবায়ন হবে। (ঘ) গাগলাজুরে একটি আধুনিক নৌবন্দর হবে, যেখানে প্লাটফর্ম ও উদ্ধারকারী দল ডুবুরী থাকব। সেইসাথে রাতে নৌপথে নিরাপদ চলাচলের জন্য উজ্জ্বল আলোর (অএঅ খরমঃ) ব্যবস্থা করা হবে। (ঙ) মোহনগঞ্জ রেল স্টেশন আধুনিকীকরণের পাশাপাশি রেলওয়ের সৌজন্যে একটি আধুনিক কাঁচা বাজার প্রতিষ্ঠিত হবে। (চ) মোহনগঞ্জের সুইপার কলোনিতে (মেথর পট্টি) সুইপারদের জন্য একটি ৫/৬ তলা বিল্ডিং তৈরির ব্যাপারে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। (ছ) এছাড়াও মোহনগঞ্জ পৌরসভা ও মোহনগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার ছোট বড় অনেক উন্নয়ন কর্মকান্ড শুরু হবে খুব শীঘ্রই।