প্রতারণা ও নির্যাতনের অভিযোগে নান্দাইলের এক যুবকের বিরুদ্ধে সৌদি ফেরত এক নারীর মামলা

প্রকাশিত: ৯:৩২ অপরাহ্ণ, মার্চ ১৪, ২০২১

নান্দাইল আঞ্চলিক অফিস :

প্রেমের ফাঁদ পেতে সৌদি প্রবাসী এক নারীকে বিয়ে করে প্রতারণা, অর্থ আত্মসাৎ সহ নির্যাতনের অভিযোগে ময়মনসিংহের নান্দাইলের মো. সোহাগ রানা নামে এক যুবকের বিরুদ্ধে আদালতে পৃথক দুইটি মামলা করেছেন এক ভুক্তভোগী নারী। সোহাগ রানার বাড়ি নান্দাইল উপজেলার দক্ষিণ জাহাঙ্গীরপুর গ্রামে। মামলায় অভিযুক্ত সোহাগ রানা ও তার বাবা মো. জজ মিয়া, মাতা মজিদা খাতুন সহ ৭ জনকে আসামি করা হয়েছে।

সৌদি আরবে চাকুরিকালীন বাংলাদেশী মোসা. নুরজাহান ও মো. সোহাগ রানার পরিচয় হয়। তারপর গভীর প্রেম। এক পর্যায়ে ২০২০ সালে ০৪ মে এফিডেভিট ও রেজিস্ট্রি কাবিন মূলে ইসলামি বিধিমতে সেখানে তাদের দুইজনের বিয়ে হয়।
বিযের পর তাদের দাম্পত্য জীবন ভালোই চলছিল।

এরমধ্যে স্বামী সোহাগ রানা তার দেশের বাড়িতে বিল্ডিং ঘর তৈরি ও অন্যান্য কাজের জন্যে নুরজাহানের কাছে হাওলাত
৩০ লাখ টাকা দাবি করেন। এতে সরল বিশ্বাসে নুরজাহান রাজি হন। তিনি বাংলাদেশে অবস্থানরত তার বাবা মো. নুরুল ইসলামের মাধ্যমে উক্ত ৩০ লাখ টাকা ২০২০ সালের ০৭ অক্টোবর শ্বশুর জজ মিয়ার কাছে নান্দাইলে তার বাড়িতে গিয়ে পৌছে দেন।

জানা যায়, টাঙ্গাইলের ভুয়াপুর উপজেলার মাইজবাড়ি গ্রামের
নুরজাহান ২০০৭ সাল থেকে সৌদি আরবে কাজের সন্ধানে যান । সেখানে একটি মাদ্রাসা ও একটি হাসপাতালে কাজ করতেন তিনি।

নুরজাহান মামলায় অভিযোগ করেন, চলতি বছরের ৮ জানুয়ারি তার স্বামী সোহাগ রানা সৌদি আরব থেকে ছুটি নিয়ে বাংলাদেশে চলে আসেন। তার কথা মতো নুরজাহান সৌদি কর্মস্থল থেকে ছুটি নিয়ে বিগত ৭ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় বিমান বন্দরে পৌছলে সেখান থেকে সোহাগ রানা তাকে গ্রহণ করে নান্দাইলের দক্ষিণ জাহাঙ্গীরপুর গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যান।

এর কয়েক দিন পর সোহাগ রানা ও তার পরিবারের লোকজন নুরজাহানের কাছে ১০ লাখ টাকা যৌতুক হিসেবে দাবি করেন। নুরজাহান বিষয়টি তার বাবা সহ পরিবারের লোকজনকে ফোনে জানালে তারা সোহাগের বাড়িতে এসে এক ঘরোয়া সালিশে বসেন। সেখানে পূর্বে ৩০ লাখ টাকা হাওলাত নেওয়ার কথা অস্বীকার করে সোহাগ ও তার বাবা জজ মিয়া। উল্টো ১০ লাখ টাকা যৌতুক দিতে অস্বীকার করায় নুরজাহানকে শারীরিক ভাবে মারধর ও নির্যাতন করা হয়। পরে নুরজাহানের পিতা তার মেয়েকে উদ্ধার করে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি স্থানীয় নান্দাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করেন।

পরে এ বিষয়ে সৌদি আরব ফেরত ওই গৃহবধূ নুরজাহান বাদী হয়ে ময়মনসিংহে বিজ্ঞ নারী ও শিশু নির্যাতন আদালত ও ময়মনসিংহ বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ৯ নং আমলী আদালতে পৃথক দুইটি মামলা দায়ের করেছেন। মামলা দুইটি বর্তমানে তদন্তাধীন।

মামলার বাদী মোসা. নুরজাহান বলেন, সহজে বিশ্বাস করে আমি জীবনের উপার্জিত সব অর্থ দিয়ে প্রতারিত ও নির্যাতিত। অসহায় অবস্থায় আমি আইনের আশ্রয় নিয়েছি। আশা করি আমি ন্যায় বিচার পাবো এবং অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হবে।