ময়মনসিংহ জেলা পুলিশের আজও ১০ টাকার দুইদিনের খাদ্যদ্রব্য বিক্রি

সবার রান্না ঘরে ভাতের গন্ধ ছুটুক

প্রকাশিত: ৪:২৩ অপরাহ্ণ, জুলাই ১০, ২০২১

স্টাফ রিপোর্টার : লকডাউন পরিস্থিতিতে বেকার ও কর্মহীনের পাশাপাশি ত্রাণ ও সরকারী সাহায্য প্রার্থীর সংখ্যা বেড়েই চলছে। লোকলজ্জা ছেড়ে ত্রাণ ও সরকারী বেসরকারী সাহায্যের পিছনে ছুটতে বাধ্য হচ্ছেন এই সকল পরিবারের সদস্যরা। এক সময় যারা সারাদিন নিজের শ্রম বিক্রি করে প্রতিদিনের রোজগারের টাকায় স্ত্রি-সন্তানদের জন্য ব্যাগ ভর্তি বাজার সওদা নিয়ে যেতেন তারাই এখন ত্রাণ বা সরকারী সাহায্যের জায়গাগুলোতে দু’বেলার আহারের জন্য হাজির হচ্ছেন। এমন দৃশ্য দেখা গেল শনিবার দুপুরে ময়মনসিংহ নগরীর আলমগীর মনসুর মিন্টু (মেমোরিয়াল) কলেজে। আবার অনেকেই দুদিনের আহার পেয়ে জেলা পুলিশের প্রতি কৃতজ্ঞতা ও সৃষ্টিকর্তার প্রতি শুকরিয়া আদায় করেছেন।

 

সবার রান্না ঘরে ভাতের গন্ধ ছুটুক” এ প্রতিপাদ্য নিয়ে জেলা পুলিশ টানা ৪র্থ দিনের মত দুঃস্থ/কর্মহীনদের জন্য স্বপ মুল্যের দোকান ১০ টাকায় দু’দিনের আহার বিক্রি করেছে শনিবার দুপুরে। নগরীর সিকেঘোষ রোডস্থ আলমগীর মনসুর মিন্টু (মেমোরিয়াল) কলেজে জেলা পুলিশ হোটেল শ্রমিকদের মাঝে প্রতিকী মুল্যে আহার বিক্রি করে। বিতরনকৃত খাদ্যপন্যের মধ্যে ছিল, পাচ কেজি চাল, এক কেজি ডাল, আধা লিটার সয়াবিন তেল, আধা কেজি লবন, দুই কেজি আলু, পরিমানমত মশলা, পেয়াজ, রসুন ও কাচা মরিচ ।

 

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফাল্গুনী নন্দী উপস্থিত থেকে দেড় শতাধিক হোটেল শ্রমিকদের মাঝে ১০ টাকায় দুদিনের আহার বিক্রি করেন। এ সময় তিনি বলেন, আমরা খোজ নিয়ে জানতে পেরেছি লকডাউনের বিধি নিষেধে খাবার হোটেল চালু রেখে পার্সেল করার নিয়ম রয়েছে। পার্সেল নিয়মে বিক্রি কম হওয়ায় শ্রমিকদের মুজুরী ঘাটতির কারণে হোটেল মালিকরা ময়মনসিংহের তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখেছে। এ অবস্থায় অন্যান্য পেশার মানুষের সাথে সাথে হোটেল শ্রমিকরাও বেকার হয়ে পড়েছে।

তিনি আরো বলেন, ময়মনসিংহের মানবিক পুলিশ সুপার মোহাঃ আহমার উজ্জামান জেলা পুলিশের আভ্যন্তরীণ সেচ্চা অনুদানের অর্থায়নে লকডাউন পরিস্থিতিতে নতুন করে বেকার ও কর্মহীন হয়ে পড়া মানুষদের পাশে দাড়িয়েছেন। সেই ভাবনা থেকেই জেলা পুলিশ সবার ঘরে রান্না ভাতের গন্ধ ছুটুক এ প্রতিপাদ্য নিয়ে ১০ টাকায় দুদিনের আহার বিক্রি করা হয়েছে। লকডাউন শেষ না হওয়া পর্যন্ত এই আহার বিক্রি চলমান থাকবে। এর আগে হকার, নরসুন্দর (নাপিত) বেদেদের মাঝে পর্যায়ক্রমে ১০ টাকার আহার বিক্রি করা হয়। যা দিয়ে একটি পরিবারের কমপক্ষে দু’দিন চলবে চলবে বলেও তিনি দাবি করেন।

১০ টাকায় দুদিনের আহার হাতে পেয়ে একাধিক হোটেল শ্রমিক বলেন, পার্সেল নিয়মে দোকান দোকান খোলার নিয়ম চালু আছে। দোকানে বেচা কেনা নেই। তাই হোটেল মালিকরা তাদের দোকান বন্ধ রেখেছে। কিন্তু আমাদের তো কাজ নেই। আমরা দিন আনি দিন খাই। এখন আমরা কোখায় যাব। এ অবস্থায় জেলা পুলিশ যে সাহায্য দিয়েছে তাতে আমাদের অনেকের ৪/৫ দিন চলে যাবে। আমরা পুলিশের প্রতি কৃতজ্ঞতা এবং সৃষ্টিকর্তার প্রতি শুকরিয়া জানাই।

এ সময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হাফিজুর রহমান, আলমগীর মনসুর মিন্টু কলেজের অধ্যক্ষ নিহার রঞ্জন রায়, ডিবির ওসি শাহ কামাল আকন্দ, পুলিশ পরিদর্শক ট্রাফিক (প্রশাসন) সৈয়দ মাহবুবুর রহমান, পুলিশ পরিদর্শক ফারুক আহম্মেদ, ময়মনসিংহ প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক বাবুল হোসেন সহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।