ময়মনসিংহে জেলা উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির সভা অনুষ্ঠিত
স্কুল সময়ে কোনো কোচিং সেন্টার চলতে না দেওয়ার সিদ্ধান্ত
স্টাফ রিপোর্টার : ময়মনসিংহ জেলা উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির সভা রবিবার ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এনামুল হকের সভাপতিত্বে তার সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় ময়মনসিংহ জেলার প্রায় ৬০টি সরকারি দপ্তরের চলমান উন্নয়ন কর্মকান্ড ও সেবা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা ও সিদ্ধান্ত গৃহীতহয়।
গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তগুলোর মধ্যে রয়েছে স্কুল চলাকালে কোনো ধরনের কোচিং সেন্টার চলতে না দেওয়া। সভায় জানানো হয় নগরীর বাউন্ডারি রোড ও নাহার রোডে যত্রতত্র মানহীন কোচিং সেন্টার গড়ে উঠেছে, যেখানে কোনো ধরনের স্বাস্থ্যবিধি না মেনেই কোচিং সেন্টারে ধারণ ক্ষমতার চেয়ে অধিক ছাত্র-ছাত্রী নিয়ে স্কুল সময়ে কোচিং পরিচালনা করা হচ্ছে। মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে এগুলোর ব্যাপারে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
সভায় সিভিল সার্জন জানান আগামী ২৭ আগস্ট থেকে সিটি কর্পোরেশন এলাকায় ৫-১২ বছর বয়সী শিক্ষার্থীদের করোনার টিকা দেওয়া শুরু হবে যা পর্যায়ক্রমে কমিউনিটি ক্লিনিক পর্যন্ত বিস্তৃত হবে। এসময় সরকারি নীতিমালা অনুসরণ না করে এবং লাইসেন্স বিহীন অবস্থায় চলমান ক্লিনিকগুলো দ্রুত বন্ধ করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
সভাপতি ময়মনসিংহ শহর রক্ষা বাধের উপর নির্মিত অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা এবং সেখানে কোনো ধরনের বিদ্যুৎ সংযোগ না দেওয়ার জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ড ও বিদ্যুৎ বিভাগকে নির্দেশনা প্রদান করেন।
সভায় বিদ্যুৎ বিভাগের পক্ষ থেকে জানানো হয় পিডিবির আওতাধীন শহর এলাকায় বিদ্যুতের দৈনিক চাহিদা ১৬৫ মেগাওয়াট এবং গ্রামীণ এলাকায় ১৩০ মেঘাওয়াট, চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম থাকায় পর্যায়ক্রমে ২-৩ ঘণ্টা লোডশেডিং করতে হচ্ছে। তবে অক্টোবরে রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র চালু হলে এই সংকট কমে যাবে মর্মে আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়।
খাদ্য বিভাগের পক্ষ থেকে জানানো হয় আগামী মাস থেকে ময়মনসিংহ জেলার প্রায় তিনলাখ পরিবারকে ১৫ টাকা কেজি দরে চাল সরবরাহ করা হবে।
সমাজসেবা অফিসের পক্ষ থেকে জানানো হয় জেলার সকল প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের ভাতার আওতায় আনার লক্ষ্যে ১০ আগস্ট থেকে নিবন্ধন শুরু হয়েছে যা আগামী ১০ অক্টোবর পর্যন্ত চলবে।
আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের পক্ষ থেকে জানানো হয় প্রতিদিন প্রায় সাড়ে ছয়শত আবেদন পড়ছে। দক্ষিণ কোরিয়াতে ৪৫ বছর বয়স পর্যন্ত কৃষক নেওয়া শুরু হতে যাচ্ছে, ফলে বিশাল জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে।
জেলা পরিসংখ্যান অফিসের পক্ষ থেকে জানানো হয় ময়মনসিংহ জেলার জনসংখ্যা বর্তমানে প্রায় ৫৯ লাখ (সম্প্রতি শেষ হওয়া জনশুমারী প্রতিবেদন অনুসারে) যার মধ্যেপুরুষ ২৯ লাখ এবং মহিলা ৩০ লাখ। এই জনগোষ্ঠীর ৪৫ লাখ ৪৫ হাজার শহরে এবং ১৩ লাখ ৫০ হাজার গ্রামে বাস করে এবং ময়মনসিংহ জেলার শিক্ষার হার ৭০.৪ শতাংশ।
সভাপতির বক্তৃতায় জেলা প্রশাসক বলেন, যে কোনো উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করার পূর্বে সেটার যথার্থতা ভালোভাবে যাচাই করতে হবে। জনগণের অর্থে বাস্তবায়িত কোনো প্রকল্প যেন জনকল্যাণে আসতে ব্যর্থ না হয়। তিনি বর্তমান বিশ্ব প্রেক্ষাপটে সবাইকে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সাশ্রয়ী হওয়ার আহ্বান জানান।
সভায় সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) পুলক কান্তি চক্রবর্তী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার খন্দকার ফজলে রাব্বি, ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশনের ভারপ্রাপ্ত সচিব অন্নপূর্না দেবনাথ, বিভাগীয় বন কর্মকর্তা এ কে এম রুহুল আমিন, ইসলামিক ফাউন্ডেশন ময়মনসিংহ এর পরিচালক মো. আজমল হক, আঞ্চলিক তথ্য অফিসের উপ প্রধান তথ্য অফিসার মোঃ মঈন উদ্দীন সহ কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।