জাতীয় অ্যাথলেটিক্সে গৌরীপুরের সুসমিতা দলীয় ইভেন্টে ২টি স্বর্ণ জয়

প্রকাশিত: ৭:৫৮ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ৬, ২০২২

মো. রইছ উদ্দিন, গৌরীপুর (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি :
সুসমিতা ঘোষ। জাতীয় অ্যাথলেটিক্সের দলীয় আসরে ২টি স্বর্ণ জয়। গ্রামের বাড়িতে চলছে উল্লাস। তার বাড়ি ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার রামগোপালপুরে। মাতা শিবানী ঘোষ আর বাবা সাধন ঘোষ। সুসমিতা বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর গর্বিত সদস্য হিসেবে এ খেলায় অংশ নেন। আরো অংশ নেয় বর্ষা খাতুন, লিবিয়া খাতুন ও মুন্নি কর্মকার। তিনি গৌরীপুর যুগান্তর স্বজন সমাবেশের সহকারী ক্রীড়া সম্পাদক। সুসমিতা রামগোপালপুরের স্কুল মাঠে হাঁটতে শিখা। ওই মাঠেই শুরু হয় দৌড়।


সুসমিতা দৈনিক স্বজনক বলেন, গেমসে্ একক স্বর্ণ জয় ছিলো মূল লক্ষ্য। শারীরিক সমস্যার জন্যে তা সম্ভব হয়নি। তবে দলীয় ২টি স্বর্ণ জয়ে, শুকরিয়া।
সুসমিতা ২০১৩ সালে জুনিয়র থেকে সিনিয়র হয়ে আসেন বাংলাদেশ গেমসের বড় মঞ্চে। প্রতিভার পুর্ন বিকাশে বদ্ধপরিকর হয়ে ট্র্যাকে আসেন। নিজের সাথে নিজের যুদ্ধে জয়ী হবার বাসনাকে বাস্তবে রূপদান করতে প্রতিশ্রুতিশীল এই অ্যাথলেট এই ট্র্যাক অ্যান ফিল্ড থেকে অর্জন করেন দুইটি স্বর্নপদক পাশপাশি জেতেন একটি ব্রোঞ্চ পদক। এরপর আরেক স্বর্নালী অধ্যায়ের শুরু, খেলাধুলায় দেশ সেবার পাশপাশি রণক্ষেত্রেও দেশ সেবার ব্রত নিয়ে ২০১৪ সালে যোগদেন বাংলাদেশ সেবাবাহিনীতে।

সেনাবাহিনীর পদক জয়ের যুদ্ধে নামেন ২০১৩ সালের ১৩তম জাতীয় সামার অ্যাথলেটিক্সে। জেতেন ৪০০ মিটার রিলেতে স্বর্ন, ১০০ মিটার প্রিন্টে ব্রোঞ্চ আর ১৬০০ মিটার রিলেতে জয় করেন রৌপ্য।
১৪ তম জাতীয় সামার অ্যাথলেটিক্সে ৪০০ মিটার স্প্রিন্টে জয় করেন ব্রোঞ্চ, সমান দুরত্বের রিলেতে পান রৌপ্য, এছাড়া ১৬০০ মিটার রিলেতেও জয় করেন আরেক রৌপ্য পদক। জাতীয় অ্যাথলেটিক্সেও ছিলো সমান পদচারণা, সেনাবাহিনীর হয়ে ৪১তম জাতীয় অ্যাথলেটিক্সে ১০০ মিটারে স্প্রিন্টে ব্রোঞ্চ, ২০০ মিটারে রৌপ্য, এছাড়া ৪০০ ও ১৬০০ মিটারেও জয় করেন রৌপ্য পদক। ৪২তম জাতীয় অ্যাথলেটিক্সেও তার হাত ধরে সেনাবাহিনীর ঘরে আসে দু’টি পদক, ২০০ মিটার স্প্রিন্টে ব্রোঞ্চ আর ৪০০ মিটার রিলেতে আসে রৌপ্য পদক। সব মিলিয়ে সেনাবাহিনীর হয়ে জাতীয় পর্যায়ে এ পর্যন্ত জিতেছেন ২৪টি পদক।

সুসমিতা হারিয়ে গেলে খোঁজে পাওয়া যেত রামগোপালপুর পি.জে.কে উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে। ছোট বেলা থেকেই খেলাধুলার প্রতি প্রবল ঝোক তাকে এগিয়ে নিয়েছে। স্কুল জীবনে উপহার আর সার্টিফিকেট সব যেন ছিলো ওর দখলে। সব খেলাধুলাতেই ছিলেন অপরাজিত। হারতে না শেখার হাতে খড়ি সেখান থেকেই, হারাতে শেখার প্রথম পাঠটা এখানেই পাওয়া।

ক্লাস সেভেন থেকেই জাতীয় পর্যায়ে উঠে আসার মিছিলে ছিলেন। স্কুল, কলেজ, উপজেলা, জেলা, উপঅঞ্চল, পদঅঞ্চল, বিভাগীয়, মহিলা ক্রীড়া সংস্থা, কর্মচারী কল্যাণবোর্ড, বিকেএসপি কাপ, জাতীয় জুনিয়র, সিনিয়র পর্যায়ে দাপিয়ে বেড়িয়েছেন স্বগর্বে। এ্যাথলেটিক্সের পাশাপাশি মাঠ মাতিয়েছেন ভলিবল, কাবাডি, ব্যাটমিন্টন এমনকি ফুটবলেও। ব্যাডমিন্টনে ২০১০ সালে শিরোপা জেতেন নিজ জেলা ময়মনসিংহের হয়ে।

২০১১ সালে মহিলা ক্রীড়া কমপ্লেক্সে ফুটবল প্রতিযোগিতায় নিজ দলকে এনে দেন রানার্সআপের সম্মাননা। ২০১২ সালে, ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের হয়ে ২টা লিগে দলকে এনে দেন রানার্স আপ ট্রফি। ক্রীড়া ক্ষেত্রে দুর্দান্ত সম্ভাবনাময় এই অ্যাথলেট ২০১১ সালে সুযোগ পান বিকেএসপিতে ৩ মাসের অ্যথালেটিক্স ট্রেনিংয়ের। এরপরই সুযোগ মেলে জাতীয় পর্যায়ে জুনিয়র অ্যাথলেটিক্স হিসেবে পথ চলার। ২০১২ সালে জাতীয় জুনিয়রে ১০০ মিটারে দ্বিতীয়, ২০০মিটার তৃতীয় স্থান অর্জন করে সবার নজরে আসেন।