দেশাত্ববোধক সঙ্গীতে দেশসেরা গৌরীপুরের রুদিতা

প্রকাশিত: ৭:০৫ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ২৫, ২০২২

গৌরীপুর (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি :
দেশাত্ববোধক সঙ্গীতে এবারও দেশসেরা হয়েছে লাবিবা ইসলাম রুদিতা। শনিবার (২৪ ডিসেম্বর/২০২২) বাংলাদেশ শিশু একাডেমিতে অনুষ্ঠিত জাতীয় শিশু পুরস্কার প্রতিযোগিতায় এ কৃতিত্ব অর্জন করেন। জাতীয় এ প্রতিযোগিতায় বিচারক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন টিভি’র উপ-মহাপরিচালক কামাল আহাম্মেদ, শেখ সাদী খান, কল্যাণী ঘোষ।
রুদিতা দেশের শীর্ষ জাতীয় দৈনিক যুগান্তর পত্রিকার দেশসেরা পাঠক সংগঠন গৌরীপুর যুগান্তর স্বজন সমাবেশের একজন নিয়মিত সদস্য। গৌরীপুর পৌরসভার পূর্বদাপুনিয়া খেলার মাঠ মহল্লার ব্যবসায়ী মো. শফিকুল ইসলাম লিটন ও গৃহিনী শাহনেওয়াজ পারভীন শিউলীর কন্যা।

এছাড়াও রুদিতা লোক সংগীত বিভাগে স্কুল, উপজেলা- জেলা আর বিভাগের দেড়লাখ প্রতিযোগির সঙ্গে লড়াই করে ২০১৯ সনে নিজেকে দেশসেরা লোক সঙ্গীত শিশু শিল্পী হিসাবে কৃতিত্ব অর্জন করে। ওই বছরের ১২জুন জাতীয় শিশু পুরস্কার প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি মহামান্য রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদ জাতীয় শিশু পুরস্কার স্বর্ণপদক, ক্রেস্ট ও সনদপত্র রুদিতার হাতে তুলে দেন।

রুদিতা ২০২২সনে গৌরীপুর পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ময়মনসিংহ শিক্ষাবোর্ডের অধিনে এসএসসি পরীক্ষায় ৪.২৮ পেয়ে উর্ত্তীণ হয়। তিনি শেখ লেবু স্মৃতি পৌর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে ৫ম শ্রেণিতে জিপিএ-৫ ও ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি লাভ করে। রুদিতার ছোট ভাই শাহরিয়ার ইসলাম তুর্জয় গৌরীপুর আরকে সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে ৯ম শ্রেণিতে অধ্যয়নরত।

রুদিতা সা-রে-গা-মা এর সঙ্গে প্রথম পরিচয় করিয়ে দেয় তার মামা মো. জুবায়ের হোসেন তালুকাদার তানিম। এরপরে তয় আর লয়ে’র হাতেখড়ি ঘটে গৌরীপুর সংগীত নিকেতনে। এ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক প্রদীপ সরকার রানা হারমোনিয়ামে হাতরাখার সাহস যোগান। প্রথম গানের সুর তুলে দেন প্রয়াত ওস্তাদ অঞ্জনা সরকার। এরপরে ভালো, আরো ভালো করার জন্য ছুটে চলে জেলা-বিভাগ আর রাজধানী শহর ঢাকায়।

রুদিতা ময়মনসিংহ শিল্পকলা একাডেমিতে সংগীতে ৪ বছরের কোর্স সম্পন্ন করে। স্নেহ আর দরদের সঙ্গে ওস্তাদ লুৎফর রহমান খোকন ও আনোয়ার হোসেন আনু সিঁড়িবেয়ে উপরে উঠার তাগিদ দেন রুদিতাকে। সিঁড়ির প্রতিটা ধাপে ধাপে ছিলো সহযোগিতা। তারপরে ভর্তি হয় বাংলাদেশ শিশু একাডেমিতে। সেখানেও ৩বছরের কোর্সে কৃতিত্বের সঙ্গে উত্তীর্ণ হয়। দেশবরেণ্য শিল্পী ফরিদা পারভীনের নিকট লালন সংগীতে দিননির্দেশনা নিচ্ছে রুদিতা। উচ্চাঙ্গ সংগীতে দেখভাল করছেন ওস্তাদ বিজন পোদ্দার। রুদিতা অগ্রযাত্রায় সহযোগিতার হাত বাড়ান নেত্রকোণার ওস্তাদ নিখিল চন্দ্র সরকার।

 

রুদিতা জানায়, আমার গ্রামের বাড়ি সহনাটী ইউনিয়নের গিধাউষা। নেত্রকোণা ও ময়মনসিংহ জেলার সীমান্ত আর ৩টি উপজেলার সীমানাঘেঁষে সবুজছায়ার আবরণেমাখা। সেই আবরণ অঙ্গে মেখে ছুটছি, শিখছি। পরিবারের সমর্থন ছাড়া এতোদূর পাড়ি দেয়া কখনও সম্ভব হতো না। চারপাশের সবারও রয়েছে সহযোগিতা।

রুদিতার বাবা মো. শফিকুল ইসলাম লিটন জানান, আসলে মেয়ের অর্জনে আমরা গর্বিত। লিটনের মেয়ের স্থলে আমি এখন ‘রুদিতার বাবা’ হিসাবে পরিচিত। সঙ্গীতাঙ্গনে এ পরিচয়েই সবাই ডাকে, সত্যিই অনুভূতি, অন্যরকম, যা ভাষায় বুঝানো যাবে না। তিনি আরো বলেন, রুদিতা এ অগ্রযাত্রা অসংখ্য মানুষ সহযোগিতা করেছেন ইন্দ্র মোহন রাজবংশীসহ সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।