প্রতারক প্রেমিক পলাতক : কে নেবে সন্তানের দায়িত্ব

প্রকাশিত: ৭:৩২ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ৬, ২০২১

ত্রিশাল (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি :
প্রথমে প্রেম। তারপর বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে কিশোরীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তোলে প্রেমিক। তাদের অবৈধ মেলামেশায় অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে কিশোরী। স্থানীয়ভাবে দেনদরবার আর মামলার মাধ্যমে স্বীকৃতি পাওয়ার আগেই পৃথিবীতে আলোর মুখ দেখে এক ফুটফুটে ছেলে সন্তান।

কিশোরীটি অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার পরপরই বাড়ি থেকে পালিয়েছে প্রতারক প্রেমিক। যদিও পুলিশ তাকে খোঁজছে, কিন্তু ভুমিষ্ট হওয়া সন্তানের অনাগত ভবিষ্যৎ নিয়ে দুঃশ্চিতায় কিশোরীর পরিবার। কে নেবে ওই কিশোরীর সন্তানের দায়িত্ব? ঘটনাটি ঘটেছে ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার কাঁঠাল ইউনিয়নের বনপাথালিয়া গ্রামে।


উপজেলার কাঁঠাল ইউনিয়নের বনপাথালিয়া গ্রামের রফিকুল ইসলাম। পেশায় তিনি একজন অটোচালক। তার একমাত্র মেয়েটি অষ্টম শ্রেণিতে পড়াশুনা করত স্থানীয় দরি কাঁঠাল উচ্চ বিদ্যালয়ে। ওই কিশোরী একদিন পাশের বাড়ির আবদুল লতিফের ছেলে আবু হাসান শাহরিয়ার সুমন নামে এক প্রতারক প্রেমিকের প্রেমের ফাঁদে পড়ে।

অবুঝ ওই কিশোরীকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে প্রতারক প্রেমিক কেড়ে নেয় তার নারীসত্তা। দুই বছরের প্রেমে শারীরিক সম্পর্কও গড়ে উঠে। কিছু বুঝে উঠার আগেই অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন কিশোরীটি।

অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ার বিষয়টি তার প্রেমিক সুমনকে অবগত করে বিয়ের জন্য চাপও সৃষ্টি করে ওই কিশোরী। গত ২৫ সেপ্টেম্বর শেষবারের মতো যৌনমিলনের পর প্রেমের সম্পর্কটি অস্বীকার করে প্রতারক প্রেমিক। উপায়হীন হয়ে ঘটে যাওয়া বিষয়ে তার পরিবারকে জানায় কিশোরী।

কিশোরীর পিতা ইউপি চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন কামালসহ স্থানীয়দেরকে বিষয়টি অবগত করেন। দেন-দরবারের মাধ্যমে বিয়ের প্রস্তাব দিলে তা প্রত্যাখ্যান করে প্রতারক প্রেমিক ও তার পরিবার। গত ৬ অক্টোবর ওই কিশোরী বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণের অভিযোগে ত্রিশাল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। পুলিশ ওই প্রতারক প্রেমিক সুমনকে হন্যে হয়ে খোঁজলেও দীর্ঘ সময়েও গ্রেফতার হয়নি সে।
এদিকে গত ১৬ জানুয়ারি ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগে পুত্র সন্তানের জন্ম দেয় ওই কিশোরী। কোল জুড়ে আসা ফুটফুটে সেই সন্তান নিয়ে বিপাকে তার পরিবার। একমাত্র মেয়ের সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটনার উপযুক্ত সমাধান চেয়ে দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন রফিকুল দম্পত্তি।

কিশোরীর বাবা রফিকুল ইসলাম জানায়, একটি তাজা প্রাণ পেটের মধ্যে হত্যার মত জগন্য কাজটি করতে পারিনি। যদি পারতাম, তবে ভুমিষ্ঠ হওয়া শিশুটির অনাগত ভবিষ্যতের দুঃশ্চিন্তা আমাকে করতে হতো না।
সুমনের বড় ভাই সিরাজুল ইসলাম বলেন, জমিজমা বা অন্য কোন ঘটনায় ওই পরিবারের সঙ্গে পূর্ব শত্রুতা নেই। আমার ভাইয়ের সঙ্গে ওই মেয়ের প্রেমের সম্পর্ক হয়নি। জিদ করে আমার ভাইয়ের ওপর দোষ চাপাচ্ছে।
ওসি মাহমুদুল ইসলাম জানান, বিভিন্ন সোর্সের মাধ্যমে আসামিকে গ্রেফতারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি আমরা।