কেন্দুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সিজার অপারেশন চালু হওয়ায় জনমনে উচ্ছ্বাস

প্রকাশিত: ৬:৩১ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ৩, ২০২১
কেন্দুয়া ( নেত্রকোনা) প্রতিনিধি :
কেন্দুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি প্রতিষ্ঠার ৫৩ বছর পর প্রথম একজন প্রস্তুতি মায়ের সিজার অপারেশন হয়েছে।
সিজার অপারেশন চালু হওয়ার খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে জনমনে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করতে দেখা যায়।
বৃহস্পতিবার (২ ডিসেম্বর) বিকাল সাড়ে ৪ টার দিকে উপজেলার কান্দিউড়া ইউনিয়নের জালালপুর গ্রামের মাজহারুল ইসলামের স্ত্রী ফরিদা খাতুনের সিজার অপারেশনের মাধ্যমে একটি ফুটফুটে ছেলে সন্তান জন্ম দেন।
 সিজার অপারেশনের মধ্য দিয়ে এ হাসপাতালে আরও একটি সেবা চালু হওয়ায় হাসি ফুটেছে চিকিৎসক ও নার্সসহ উপজেলাবাসীর মুখে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়,
উপজেলার কান্দিউড়া ইউনিয়নের জালালপুর গ্রামের মাজহারুল ইসলামের স্ত্রী ফরিদা খাতুন (৩০) স্বাভাবিক প্রসবে জটিলতা দেখা দেওয়ায়
বৃহস্পতিবার সকালের উপজেলা স্বাস্থ্য
কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। পরে কর্তৃপক্ষ উদ্যোগ নিয়ে তার সিজারিয়ান অপারেশনের ব্যবস্থা করেন। এতে তার ফুটফুটে একটি ছেলে সন্তানের জন্ম হয়। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ এবাদুর রহমানের
নেতৃত্বে অপারেশনে
ডাঃ শাহীনা সুলতানা,ডাঃ নিজাম উদ্দিন,ডাঃ খন্দকার নুসরাত জাহান তন্নী,নার্স জাকিয়া আক্তার,আসমা আক্তার,সাবিনা আক্তার অংশ গ্রহণ করেন। সিজার কার্যক্রম বাস্তবায়ন কাজে সার্বিক সহযোগিতা করেন মামুনি এম এন সি এস পি ডাসকো ফাউন্ডেশনের উপজেলা কো-অডিনেটর মোঃ রুস্তম আহম্মদ।
হাসপাতাল সূত্র জানায়, ১৯৬২ সালে ৩১ শর্যা বিশিষ্ট কেন্দুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রতিষ্ঠা হয়। ২০০৬ কমপ্লেক্সটিকে ৫০ শর্যায় উন্নতিকরণ করা হলেও নানান জটিলতায় অপারেশন থিয়েটার চালু করা সম্ভব হয়নি।
এ কারণে উপজেলার প্রসূতিদের জেলা সদর হাসপাতাল ও ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ বিভিন্ন বেসরকারি ক্লিনিকে যেতে হতো।
এতে প্রসূতি মায়ের পরিবার নানা ভাবে ভোগান্তির শিকার হতেন। সিজার অপারেশন চালুর জন্য এলাকাবাসী দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়ে আসছিল। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক বিষয়ক অসীম কুমার উকিল এমপি নির্বাচিত হওয়ার পরপরই হাসপাতালটিতে সেবার মান বৃদ্ধি পেতে থাকে। এমপি অসীম কুমার উকিলের প্রচষ্টায় রোগ নির্ণয়ের জন্য জিনক্সপাট মেশিন ও ডিজিটাল এক্সরে মেশিন স্থাপন করা হয়েছে। প্রসূতিদের সিজারিয়ান অপারেশন চালুর মাধ্যমে হাসপাতালের আরো একটি সেবার দ্বার উন্মোচন হলো। খবর পেয়ে হাসপাতালে ছুটে যান ইউএনও মোঃ মঈন উদ্দিন খন্দকার। এসময় তিনি প্রসূতি মা ও চিকিৎসকদের ফুলের শুভেচ্ছা জানান।
প্রসূতির স্বামী মাজহারুল ইসলাম বলেন, ‘স্ত্রীর প্রসবে জটিলতা দেখা দেওয়ায় সবাই বেসরকারি ক্লিনিকে সিজার করার কথা বলেছিলেন। কিন্তু আর্থিক সমস্যার কারণে আমি তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাই। সব কিছুই ভালোভাবে সম্পন্ন হয়েছে। আমার স্ত্রী ও নবজাতক ছেলে ভালো আছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. এবাদুল রহমান জানান, প্রসূতির স্বজনদের সম্মতি নিয়েই তারা সিজারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। হাসপাতালে  বাচ্চা ও মা ভাল আছে। আর ৫৩ বছর পর প্রথম অপারেশন করতে পেরে খুশি আমরাও। এমপি মহোদয় ও সিভিল সার্জন মহোদয়ের  সার্বিক প্রচেষ্টায় সফল হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ  মঈন উদ্দিন খন্দকার জানান,
সরকারি হাসপাতালে প্রশিক্ষিত ডাক্তার-নার্সের মাধ্যমে বিনা খরচে সিজার করাতে পেরে ওই প্রসূতির পরিবার খুব খুশি। এরধারা অব্যাহত থাকলে এ উপজেলার রোগীদের আর দুর্ভোগ পোহাতে হবে না। যেতে হবে না প্রাইভেট ক্লিনিকে, লাগবে না বাড়তি খরচও।