ছাত্রী মেসে আগুন নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় হল চালুর দাবিতে ভিসির বাংলোর সামনে শিক্ষার্থীদের অবস্থান কর্মসূচী

প্রকাশিত: ৭:৪৯ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ১, ২০২২

ত্রিশাল (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি :
শনিবার ভোররাতে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন সুফিয়া আজিজ ভিলা নামে একটি ছাত্রী মেসে অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় মেসের ছয়টি রুম পুড়ে ছাই হয়ে যায়। চরম ক্ষতির মুখে পড়েন ১২ শিক্ষার্থী। নবনির্মিত হল চালুর দাবিতে সকাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয় ভিসির বাংলোর সামনে অবস্থান নিয়ে অনশনে যান শিক্ষার্থীরা। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের আশ্বাসে বিকেল চারটার দিকে কর্মসূচী প্রত্যাহার করেন শিক্ষার্থীরা।

শনিবার ভোররাত সাড়ে চারটার দিকে বৈদ্যতিক সর্ট সার্কিটে কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন সুফিয়া আজিজ ভিলা ছাত্রী মেসে আগুন লাগে। আগুনের লেলিহান শিখা দেখে ঘুম ভাঙ্গে শিক্ষার্থীদের। তাদের আত্মচিৎকারে ছুটে আসে আশেপাশে মানুষ। ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট ও স্থানীয়দের প্রচেষ্টায় ঘন্টাখানেক পরে নিয়ন্ত্রনে আসে আগুন। অগ্নিকান্ডে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১২ শিক্ষার্থীর ল্যাপটপ, আসবাবপত্রসহ পুড়ে ছাই হয় শিক্ষাসামগ্রী। বিকেলে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. সৌমিত্র শেখর দে। এসময় ক্ষতিগ্রস্থদের সহায়তার আশ্বাসও প্রদান করেন তিনি।

ছাত্রী মেসে অগ্নিকান্ডের ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয়ে নবনির্মিত হল দুটি খুলে দেয়ার দাবিতে শনিবার সকাল আটটা থেকে ভিসি বাংলোর সামনে অবস্থান নিয়ে আমরন অনশনে যান শিক্ষার্থীরা। আন্দোলন অব্যাহত থাকে বিকেল চারটা পর্যন্ত। পরে বাংলোর সামনে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য। তিনি অসমাপ্ত কাজ শেষ করে দ্রুত সময়ের মধ্যে হল খুলে দেয়ার আশ্বাস দিলে অনশন ভাঙ্গেন শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, পাচঁ বছর আগে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল দুটোর কাজ শুরু হয়। কাজ সম্পন্নের বছর দুয়েক পেড়িয়ে গেলেও খুলে দেয়া হচ্ছেনা হলগুলো। করোনার পর মেস মালিকরাও ভাড়া বাড়িয়ে দিয়েছে। আমরা নানা সমস্যায় ভুগছি। এনিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কোন মাথা ব্যথা নেই। শনিবার ভোররাতে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন সুফিয়া আজিজ ভিলা নামে একটি ছাত্রী মেসে অগ্নিকান্ডে চরম ক্ষতির মুখে পড়েছে ১২ জন শিক্ষার্থী। তাই নবনির্মিত হল চালুর দাবিতে সকাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয় ভিসির বাংলোর সামনে অবস্থান নিয়ে আমরা আমরন অনশনে নামি ।

বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের প্রভোস্ট নুসরাত শারমিন তানিয়া বলেন, গ্যাসসহ কিছু সমস্যা এখনো সমাধান হয়নি। আমি দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে শিক্ষার্থীদের জন্য হল খুলে দেয়ার জন্য সার্বিক চেষ্টা করে যাচ্ছি। সমস্যাগুলো সমাধান করে অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে হল খুলে দেয়া হবে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের প্রভোষ্ট মাসুম হাওলাদার বলেন, ইতিমধ্যে শিক্ষার্থীদের হলে উঠার সুযোগ করে দেয়ার জন্য আবেদন সংগ্রহ করেছি। যাছাই বাছাই করে প্রাথমিক পর্যায়ে বরাদ্ধকৃত সিটের অর্ধেক শিক্ষার্থীদের তুলে দেয়া হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. সৌমিত্র শেখর বলেন, আমি নতুন যোগদান করেছি। হলের সমস্যাগুলো চিহ্নিত করেছি। কিছু অসমাপ্ত কাজ এখনো বাকি রয়েছে। সংশ্লিষ্টদের গাফিলতি আছে কিনা তাও খতিয়ে দেখছি। দ্রুত সমস্যাগুলো সমাধানের নির্দেশনা দিয়েছি। আগামি তিন সপ্তাহের মধ্যে হলগুলোকে শিক্ষার্থীদের ব্যবহারের উপযোগী করে তুলে তাদের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হবে।