নান্দাইলে পাটের বাম্পার ফলনে কৃষকের মুখে হাসির ঝিলিক

প্রকাশিত: ৯:৪৫ অপরাহ্ণ, জুলাই ৩১, ২০২২

শাহ্ আলম ভূঁইয়া, নিজস্ব প্রতিবেদক, নান্দাইল থেকে:

পাটের বাম্পার ফলন হওয়ায় ময়মনসিংহের নান্দাইলের কৃষকেরা এখন সোনালি আঁশের স্বপ্ন দেখছেন। আর কয়েকদিন পরেই কাটতে শুরু করবেন সোনালী স্বপ্নের পাট। অল্প খরচে কম সময়ে বেশি লাভের আশায় উপজেলার কৃষকদের ধান চাষের পাশাপাশি পাট চাষের আগ্রহ বৃদ্ধি পেয়েছে।

অনুকূল আবহাওয়া ও সময়মত পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাতের কারণে পাটের ফলন ভালো হয়েছে। গত কয়েক বছর যাবৎ পাটের বাজার মূল্য ভালো পাওয়ায় চাষিরা উন্নত জাতের পাট চাষের দিকে মনোযোগ দিচ্ছে। নিবিড় পরিচর্যা আর কৃষি অফিসের পরামর্শের কারণে পাটের তেমন কোনো রোগবালাই নেই।

চলতি মৌসুমে নান্দাইলে বিভিন্ন গ্রাম ও প্রত্যন্ত চরাঞ্চলের জমিতে লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও ব্যাপকভাবে সোনালী আঁশের আবাদ হয়েছে। দেশে সার,বীজ ও অন্যান্য আনুষঙ্গিক খরচ কম ও অনুকূল আবহাওয়া থাকায় সোনালী আঁশের ফলন অধিক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। দেশের হাট-বাজারে পাটের দাম অধিক ও কম খরচে পাটের অধিক ফলন হওয়ায় সোনালী আঁশের সুদিন ফিরে আসবে বলে মনে করেন স্থানীয় পাট চাষীরা এবং আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন তারা।

কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে,চলতি মৌসুমে উপজেলার ১৩টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় বিভিন্ন গ্রাম ও চরাঞ্চলের সমতল ও অসমতল জমিতে ১ হাজার ৫৫৫ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে। তারমধ্যে দেশি ২০০ হেঃ, তোষা-১৫০ হেঃ, কেনাফ- ১২০০ হেঃ এবং মেসতা জাতীয় পাট আবাদ হয়েছে ৫ হেঃ জমিতে।

গত বছর আবাদ হয়েছিল ১১৯৫ হেক্টর জমিতে। গত বছরের চেয়ে এবার ৩৬০ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ বেশি হয়েছে।

সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, কৃষকের মাঠে মাঠে চোখ জুড়ানো সবুজের সমারোহ। সবুজ পাতার সাথে দোল খাচ্ছে মাঠের পর মাঠ।

পাট চাষিদের সাথে কথা বলে জানা যায়, প্রতি বিঘা জমিতে চাষ, সেচ, রাসায়নিক সার প্রয়োগ, পাট কাটা, শুকানোসহ খরচ হবে ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা। গত বছরের তুলনায় এবার ফলন ও দাম বেশি হওয়ায় অন্য ফসলের তুলনায় লাভ হবে ৫/৬ গুণ। গত বছর বিঘাপ্রতি ৭/৮ মণ পাট পাওয়া গেছে। কিন্তু এবার ফলন ভালো হওয়ায় বিঘাপ্রতি ১০/১২ মণ পাট পাওয়া যাবে। ফলন ভালো পেয়ে চাষিদের মুখে হাসির ঝিলিক দেখা দিয়েছে।

উপজেলার লক্ষিপুর গ্রামের পাট চাষী আঃ কাদির, রশিদ, মালেক, শহীদ, শামছ উদ্দিন, হাসিম উদ্দিন, চরউত্তরবন্দ গ্রামের জামাল উদ্দিন,অন্যান্য কৃষি ফসলের তুলনায় পাটের আবাদে খরচ কম হয়। পাটের বাজার দামও বেশি। তাই আমরা এই বছর অধিক জমিতে পাটের আবাদ করেছি।

উপজেলা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা আমিনুল হক বলেন, পাটের দাম সন্তোষজনক অবস্থা বিরাজ করায় উপজেলায় পাটের আবাদ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে । পাট চাষে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকের।

নান্দাইল উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মোহাম্মদ আনিসুজ্জামান বলেন, আমরা কৃষকদের বিভিন্ন ধরনের পরামর্শ, প্রশিক্ষণ ও মাঠ পর্যায়ে দেখাশোনা করায় ফলন ভালো হয়েছে। এছাড়া সরকারি বিভিন্ন প্রণোদনা ও ভর্তুকী কৃষকদের মাঝে পৌঁছে দেওয়ায় তারা আরও বেশি উদ্ভুদ্ধ হয়েছে। বর্তমানে বাজারে পাটের চাহিদা ও মূল্য বৃদ্ধির কারণে পাট চাষ দিন দিন বাড়ছে।