গৗরীপুরে চুরির অপবাদে যুবককে ধরে এনে গণপিটুনি ॥ গ্রেফতার-২

প্রকাশিত: ১০:২১ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ১৪, ২০২০

গৌরীপুর (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি :
ময়মনসিংহের গৌরীপুরে চুরির অপবাদে যুবককে গণপিটুনি দেয়ার অভিযোগে ২জনকে গ্রেফতার করে মঙ্গলবার (১৩ অক্টোবর/২০২০) বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করেছে পুলিশ।

উপজেলার মাওহা ইউনিয়নের ভুটিয়ারকোনা এলাকা থেকে মাজহারুল ইসলাম শুভ্র (৩০) নামে এক যুবকক ধরে এনে চুরির অপবাদে গণপিটুনি দেয়। এ ঘটনা ঘটে রোববার।

মারধোরের একপর্যায়ে তাকে অচিন্তপুর ইউনিয়ন পরিষদের ভিতরে নিয়ে আটকে রাখে। খবর পেয়ে গৌরীপুর থানার পুলিশ ওইদিন সন্ধ্যায় তাকে উদ্ধার করে।

মঙ্গলবার (১৩ অক্টোবর/২০২০) মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেন গৌরীপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ বোরহান উদ্দিন। তিনি জানান, গ্রেফতারকৃত ২জন আসামীকে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। অন্যদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

এলাকাবাসী জানান, রোববার সকাল ১১টার দিকে আবুল মিয়ার নেতৃত্বে এলাকার জামাই মাজহারুল ইসলামকে ধরে নিয়ে যায়। ওইদিন রাত ৯টায় পুলিশ তাকে উদ্ধার করে। সোমবার (১২ অক্টোবর/২০২০) শুভ্র’র শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে তাকে দ্রুত ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

সোমবার (১২ অক্টোবর/২০২০) রাতে পুত্রকে নির্যাতনের ঘটনায় বিচার চেয়ে গিয়াস উদ্দিনের স্ত্রী পারুল আক্তার গৌরীপুর থানায় মামলা দায়ের করেন।
শুভ্র’র স্ত্রী হোসনে আরা জানান, তার স্বামীর বাড়ি নেত্রকোণা সদরের ডুলিগাতী গ্রামে। তিনি গৌরীপুর উপজেলার ভূটিয়ারকোনা গ্রামের জহর উদ্দিনের কন্যা। স্বামী আর সন্তানদের নিয়ে তার খালাতো বোন জাহেরা খাতুনের বাড়ি অচিন্তপুরে বেড়াতে আসে।

রোববার সকাল ১১টার দিকে তিনি স্বামীর বাড়ি যাচ্ছিলেন আর তার স্বামী শ^শুড়বাড়ি ভুটিয়ারকোনায় গিয়েছিলো। সেখান থেকে জনৈক আবুল মিয়া ১০হাজার টাকা পাওনা আছে বলে ভূটিয়ারকোনা শ^শুড় বাড়িতে যাওয়ার রাস্তা থেকে ধরে নিয়ে আসে।

অচিন্তপুর ইউনিয়নের শাহগঞ্জ বাজারের বিভিন্ন স্থানে চুরির অপবাদ দিয়ে গণপিটুনি দেয়। আবুল তার নিকট কোন টাকা পায় না, বরং তার স্বামীর নিকট থাকা ৩হাজার টাকা ওরা ছিনিয়ে নিয়ে গেছে। আমার স্বামীরকে মারধর করে সারা শরীর রক্তাক্ত করেছে।

শোনেছি মৃত ভেবে রাস্তায় ফেলে রেখে ছিলো। জ্ঞান ফিরলে আবারও মধ্যযুগীয় বর্বরতা চালায়। পারুল আক্তার জানান, তার ছেলে নিদোর্ষ; চুরির অপবাদ দিয়ে যারা নির্যাতন করেছে আমি তাদের বিচার চাই।

মামলার তদন্তকারী অফিসার মাইনুল রেজা জানান, রাত ৯টার দিকে চোর আটকের খবর পেয়ে তাকে অচিন্তপুর ইউনিয়ন পরিষদ থেকে নিয়ে আসি। রাতেই শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে গৌরীপুর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সকালে ডাক্তারের পরামর্শে উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
গৌরীপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) মোহাম্মদ কামাল হোসেন জানান, ঘটনাস্থল থেকে ৫জনকে আটক করা হয়ে ছিলো।

জিজ্ঞাসাবাদ ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সাক্ষ্য অনুযায়ী নির্দোষ ৩জনকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। অপর দু’জন ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয় তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়েছে।