গৌরীপুরে পৌর মেয়র রফিকুল ইসলামকে লক্ষ্য করে গুলি ও এমপি’র গাড়ি বহরে হামলার পাল্টাপাল্টি অভিযোগ

প্রকাশিত: ১১:৩৩ অপরাহ্ণ, মার্চ ৮, ২০২১

গৌরীপুর (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি :
ময়মনসিংহের গৌরীপুর পৌরসভার নবনির্বাচিত হ্যাট্টিক বিজয়ী পৌর মেয়র সৈয়দ রফিকুল ইসলামকে হত্যার উদ্দেশ্যে পূর্বপরিকল্পিতভাবে গুলিবর্ষণের অভিযোগ করেছেন সংবাদ সম্মেলন পৌর মেয়র সৈয়দ রফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, বিগত নির্বাচনে পরাজিত করতে না পারায় আমি রাজনৈতিক প্রতিহিংসার স্বীকার। নির্বাচনের পূর্বেও আমাকে একটি হত্যা মামলায় আসামী করা হয়েছিলো।

তিনি বলেন, ঐতিহাসিক ৭মার্চের অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু চত্বরে পুষ্পমাল্য অর্পণ শেষে কার্যালয়ে ফেরে আসি। কার্যালয় থেকে বাসায় আসার মুর্হূতে ভবনের গেইটে পাকা রাস্তায় আসতেই হত্যার উদ্দেশ্যে রোববার (৭মার্চ/২০২১) দুপুর ১টার দিকে গুলি বর্ষণ করা হয়েছে। বীর মুক্তিযোদ্ধা নাজিম উদ্দিন আহমেদ এমপি’র পুত্র তানজির আহমেদ রাজিবের নির্দেশে এ গুলি চালানো হয়। আমি শুনেছি, রাজিব বলছে, ‘এই মেয়র চলে যাচ্ছে গুলি কর, গুলি কর’। এই কথা বলার পরে প্রথমে সহনাটী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান দুলাল আহাম্মেদ গুলি চালায়, এরপর গুলি করে শোয়েব মুনশী। আমাকে বাঁচাতে এসে পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি দেলোয়ার হোসেন দিলু (৩৫) ও যুবলীগ কর্মী আল আমিন (৩১) আহত হয়।


অপরদিকে সন্ধ্যায় ময়মনসিংহ প্রেসকাবে জাতীয় সদস্য সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা নাজিম উদ্দিন আহমেদ এক সংবাদ সম্মেলন ডেকেছেন। সেখানে তিনি বলেন, ঐতিহাসিক ৭মার্চের অনুষ্ঠানে অংশ নিতে গৌরীপুর আসার পথে গৌরীপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় পৌর মেয়রের নেতৃত্বে এমপি’র গাড়ী বহরে হামলা চালানো হয়েছে। হামলায় প্রায় ৮/১০জন আহত হয়েছে ও ৮টি মোটর সাইকেল ভাংচুর করা হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে গৌরীপুর থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুল হালিম সিদ্দিকী জানান, ঘটনার আগে পরে কেউ গুলাগুলি শব্দ শোনেনি। আমরাও গুলিবর্ষণের কোন খবর পাইনি। দু’পক্ষের মাঝে সংঘর্ষ হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত (সন্ধ্যা ৭টা ৩০মিনিট) কেউ মামলা দেয়নি।
এদিকে সংবাদ সম্মেলন পৌর মেয়র সৈয়দ রফিকুল ইসলাম আরো বলেন, পুলিশের উপস্থিতিতে তার ওপর হামলা চালানো হয়েছে। পুলিশ এমপি’র পুত্র রাজিব বাহিনীকে মদদ দিয়েছে। এ কারণে গৌরীপুর থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুল হালিম সিদ্দিকীর প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছি।

অপরদিকে এমপি’র পুত্র তানজির আহমেদ রাজিব জানান, গুলি করার বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা অভিযোগ। আমরা বঙ্গবন্ধু চত্বরে যাওয়ার সময় রেললাইল ক্রসিং অতিক্রম করার পরেই এলোপাতাড়িভাবে আমাদের ওপর পাথর নিক্ষেপ করা হয়েছে। আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালিয়ে উল্টে মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে সত্যকে আড়াল করার চেষ্টা চালাচ্ছে।

পৌর মেয়র সৈয়দ রফিকুল ইসলামকে হত্যার উদ্দেশ্যে গুলিবর্ষণের ঘটনার প্রতিবাদে গৌরীপুর পৌরসভা পরিষদের কাউন্সিলর, কর্মকর্তা-কর্মচারী, পৌর যুবলীগ ও দলীয় নেতাকর্মীরা শহরে বিক্ষোভ মিছিল বের করে। বিক্ষোভ মিছিলটি পৌর মেয়রের বাসার কার্যালয়ে সামনে গিয়ে শেষ হয়।

সেখানে প্রতিবাদ সমাবেশের জড়িতদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান পৌর যুবলীগের সভাপতি মেহেদি হাসান মিথুন। পৌর মেয়রের বাসায় অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন নবনির্বাচিত কাউন্সিলর দিলুয়ারা আক্তার দিলু, রোজিনা আক্তার চৌধুরী মিতু, সালেহা আক্তার, সাধারণ ওয়ার্ডে নির্বাচিত কাউন্সিলর দেলোয়ার হোসেন বাচ্চু, মোঃ মাসুদ মিয়া রতন, জিয়াউর রহমান জিয়া, মোঃ এমরান মুনশী, মো. নাজিম উদ্দিন, সাদেকুর রহমান সাদেক, আরিফুল ইসলাম ভূঞা এনাম, সাবেক কাউন্সিলর দেওয়ান মাসুদুর রহমান খান সুজন, শিউলী চৌধুরী প্রমুখ।
এদিকে রাত ৯টার দিকে পৌর মেয়র সৈয়দ রফিকুল ইসলাম সশরীরে উপস্থিত হয়ে গৌরীপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। এ সময় পৌরসভার কাউন্সিলর ও দলীয় নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।