ঈশ্বরগঞ্জে ফসলের মাঠে প্রকৃতির প্রতিশোধ : কৃষকের বুক ফাটা আর্তনাদ

প্রকাশিত: ৯:৫০ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ৭, ২০২১

সাইফুল ইসলাম তালুকদার, ঈশ্বরগঞ্জ (ময়মনসিংহ) সংবাদদাতা :
ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া ধূলিঝড় ও গরম বাতাসে বোর ফসলের ব্যাপক তি সাধিত হয়েছে। গরম বাতাসের প্রভাবে উপজেলার ১১টি ইউনিয়নে প্রায় ৫শ হেক্টর বোর ধানের শীষ শুকিয়ে সাদা হয়ে গেছে।

উপজেলা কৃষি অফিস মাঠ পর্যায়ে জরিপ চালিয়ে তির পরিমাণ নির্ধারন করেছে ২শ হেক্টর। কিন্তু মাঠ পর্যায়ে চাষিদের দেয়া তথ্য মতে এ তির পরিমাণ ৫শ হেক্টর ছাড়িয়ে যেতে পারে।

গরম হাওয়া প্রবাহের আগেও ফসলের মাঠে সাদা ফুলের রেনু সম্বলিত থোকা থোকা ধানের শীষ বাতাসে দোল খাচ্ছিল। ঘন্টাব্যাপী বয়ে যাওয়া গরম বাতাসের প্রবাহে সেই সোনার ফসলের মাঠ এখন বিরান ভূমিতে পরিনত হয়েছে। এ যেন ফসলের মাঠে প্রকৃতির প্রতিশোধ। স্বপ্নে ঘেরা সোনার ফসল হারা মাঠে এখন চলছে কৃষকের বুক ফাটা আর্তনাদ।

উপজেলার জাটিয়া ইউনিয়নের নিজতুলন্দর গ্রামের চাষী আবুল মিয়া, নুরুল আমিন, সোহাগী ইউনিয়নের সাহেব নগর গ্রামের চাষী আব্দুর রাশিদ, তারুন্দিয়া ইউনিয়নের চরজিতর গ্রামের চাষি ফখর উদ্দিন জানান, ৪এপ্রিল রোববার বিকেল ৫টার দিকে আকাশের দনি পশ্চিম কোণে কালো মেঘ জমে হালকা বজ্রবৃষ্টি সহ শুরু হয় ধূলিঝড় ও গরম বাতাসের প্রবাহ।

চাষিরা জানান, থোর থেকে বের হওয়া সাদা ফুলের রেনু সম্বলিত ধানের শীষগুলো মাঠে দোলতে দেখা গেছে। ঝড়ের পরদিন সূর্য উঠার সাথে সাথে চাষিরা দেখতে পান ধানের শীষগুলো শুকিয়ে সাদা হয়ে গেছে। উপজেলার সর্বত্র বোর ফসলের ভয়াবহ তিতে শত শত চাষী দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাধন কুমার গুহ মজুমদার উপজেলার তিগ্রস্থ বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করে তিনি প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেন, মাঠ পর্যায়ে পিকুলিয়ার টাইপের তি সাধিত হয়েছে। এই বৈরী গরম হাওয়ায় ব্রি ধান-২৮, ২৬, ও ১১জাতের ধানের ব্যপক তি সাধিত হয়েছে। সময় যতোই বয়ে যাচ্ছে ততই বাড়ছে তির পরিমাণ। অসহায়ের মত চেয়ে থাকা ছাড়া কিছুই করার নেই। এ যেন প্রকৃতির কাছে চাষিদের নির্মম পরাজয়।
এব্যাপারে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক আব্দুল মাজেদ জানান, এটি একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ। এর উপর কারো নিয়ন্ত্রণ নেই। ধানের তির সবচেয়ে স্পর্স কাতর সময় হচ্ছে ফায়ারিং পিরিয়ড। এই সময়টাতে দুর্যোগপূর্ণ হাওয়া প্রবাহিত হওয়ায় এই ব্যাপক তি সাধিত হয়েছে। তিনি বলেন সরকার যদি তিগ্রস্থ কৃষকের পূর্নবাসনের পদপে গ্রহণ করেন। তাহলে কৃষি বিভাগ তা বাস্তবায়নে যথাযত ব্যবস্থা নিবে।