ময়মনসিংহের ধর্ষণ মামলা উঠিয়ে না নেওয়ায় ধর্ষিতার উপর হামলা

হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে বাবা ও মেয়ে

প্রকাশিত: ৪:৪৫ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ২৪, ২০২২

স্টাফ রিপোর্টার : ময়মনসিংহের পাড়াইলে ধর্ষণ মামলা তুলে না নেওয়ায় বাদী ও তার বাবাকে কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করেছে বিবাদীর লোকজন। বাদী ও বাদীর বাবা ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে।

এব্যাপারে ময়মনসিংহ কোতোয়ালী থানায় মোঃ রুবেল মিয়া পিতা- মোঃ নূর হোসেন, মোঃ রায়হান মিয়া পিতা-মৃতঃ আজগর আলী, লাল মিয়া মোঃ ছাইফুল ইসলাম উভয় পিতা-মৃত আবুল কাশেম, মোঃ জাহাঙ্গীর মিয়া পিতা- মৃত তালেব আলী, মোঃ মেহেদী হাসান পিতা- আবুল হাশেম, আবুল হাশেম পিতা- মৃত মেহের আলী, সর্বসাং পাড়াইল, সর্ব থানা- কোতোয়ালী, জেলা- ময়মনসিংহ এদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।

মামলা সুত্রে জানা যায়,বিনীত নিবেদন এই যে, মামলার এজাহারের ১নং আসামী মোঃ রুবেল মিয়ায় পুত্র আশিকুর রহমান আশিক অত্র অভিযোগের বাদী শাহাবুদ্দিন এর মেয়েকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। অভিযোগের শাহাবুদ্দিন এর মেয়ে বাদী হইয়া কোতোয়ালী মডেল থানায়একটি মামলা দায়ের করেন যাহার মামলা নং- ৫ং(০৬) ২০, জি আর ৫০৮/২০ ধারা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ১(১)। নারী নির্যাতনের অভিযোগের ১নং আসামীরপুত্র আশিকুর রহমান আশিক জেল হাজতে আটক থাকায় উক্ত আসামীর পিতা, ভাই ও আত্মীয়-স্বজনগণ বাদী ও স্বাক্ষী শিরিনা খাতুনের উপর ক্ষিপ্ত হইয়া খুন-জখমের চেষ্টা করিয়া আসিতে থাকে এবং মামলা উঠাইয়া নেওয়ার জন্য চাপ প্রয়োজ করিয়া আসিতে থাকে। উক্ত ধর্ষণের মামলায় গত ১৯/০৪/২০১২ইং তারিখে স্বাক্ষীর জন্য দিন ধার্য করা হয়।

 

উক্ত মামলার বাদী শাহাবুদ্দিনের মেয়ে এবং বাদী যাহাতে ঘটনার তারিখে স্বাক্ষী দিতে না পারি সেই কারণে শাহাবুদ্দিন ও তার মেয়েকে দুনিয়া থেকে চিরতরে বিদায় করে দেয়ার জন্য আসামীরা যড়যন্ত্র করতে থাকে। পরে গত ১৯/০৪/২০২২ তারিখ বাদী ও বাদীর মেয়ে দিনের বেলায় ধর্ষণের স্বাক্ষী দেওয়ার জন্য ময়মনসিংহ কোর্টে আইনজীবির সাথে পরামর্শ করিয়া এবং ময়মনসিংহ শহরে তাহাদের নিজস্ব কাজকর্ম শেষ করিয়া উক্ত তারিখ রাত অনুমান ০৯.৪৫ ঘটিকায়নিজ বাড়ীর উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়। একই তারিখ রাত অনুমান ১০.৩০ ঘটিকার সময় পাড়াইল ভাটিগাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দক্ষিণ পাশের কাঁচা রাস্তায় পৌঁছামাত্রই সেখানে পূর্ব হইতে উৎপেতে থাকা আসামীরা তাদের হাতে থাকা রামদা, দা, লোহার রড, চাকু বাশেঁর লাঠিসোটা ইত্যাদি নিয়া মামলার বাদী সহ বাদীর মেয়েকে পথরোধ করিয়া উপরোক্ত ০১নং আসামী আমার বাদীর মেয়েকে তাহার ছেলের বিরুদ্ধে করা ধর্ষন মামলা তুলিয়া নেওয়ার জন্য চাপ প্রয়োজ করিলে বাদীর মেয়ে ধর্ষণ মামলা উঠাইয়া নিতে অঙ্গীকার করে ।

 

এতে ক্ষীপ্তহয়ে ১নং আসামী তাহার হাতে থাকা দাও দিয়া বাদীল মেয়েকে খুন করার উদ্দেশ্যে তাহার মাথায়কুপ দিয়া গুরুতর রক্তাক্ত কাটা জখম করে। এই সময় মামলা বাদী মোঃ শাহাবুদ্দিন তার মেয়েকে বাঁচানোর জন্য আগাইয়া গেলে আসামী রায়হান তাহার হাতে থাকা দা দিয়া খুন করার উদ্দেশ্যে মোঃ শাহাবুদ্দিনের মাথায় কূপ মারিয়া গুরুতর রক্তাক্ত কাটা জথম করে। আসামী লাল মিয়া তাহার হাতে থাকা দা দিয়া মোঃ শাহাবুদ্দিনকে খুন করার উদ্দেশ্যে কূপ মারিলে উক্ত কূপ মোঃ শাহাবুদ্দিনের বাম হাত দিয়া ফিরাইলে বাম হাতের তালুতে লাগিয়া রক্তাক্ত কাটা জখম হয়।

আসামী মোঃ জাহাঙ্গীর তাহার হাতে থাকা ধারালো চাকু দ্বারা খুন করার উদ্দেশ্যে মোঃ শাহাবুদ্দিনের মেয়েকে পেটে আঘাত করিলে মোঃ শাহাবুদ্দিনের মেয়ে ডান হাত দিয়া ফিরাইলে তাহার ডান হাতের কব্জির উপরে লাগিয়া কাটা রক্তাক্ত জখম হয়। আসামী ছাইফুল মোঃ শাহাবুদ্দিনকে খুন করার উদ্দেশ্যে শাহাবুদ্দিনকে গলায় দুই হাত দিয়া চাপিয়া ধরিয়া শ্বাসরুদ্ধ করিয়া হত্যার চেষ্টা করে এবং আসামী মেহেদী শাহাবুদ্দিননের মেয়ের ভলপেটে লাথি মারিয়া আহত করে এবং আসামী আবুল হাশেম বাশেঁর লাঠি দিয়া শাহাবুদ্দিনকে এলোপাথারিভাবে বাইরাইয়া শরীরের বিভিন্ন স্থানে নীলা-ফোলা জখম করে। শাহাবুদ্দিন ও তার মেয়ের ডাক-চিৎকারে আশ-পাশের লোকজন ঘটনাস্থলে আগাইয়া আসিতে থাকিলে আসামীরা শাহাবুদ্দিন ও মেয়েকে মামলা তুলিয়া না নিলে সময় সুযোগমত পাইলে খুন করিয়া লাশ গুম করিয়া ফেলিবে মর্মে হুমকী প্রদান করে।

পরবর্তীতে স্থানীয় লোকজনদের সহায়তায় শাহাবুদ্দিনকে সহ তার মেয়েকে দ্রুত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলে হাসপাতালে নিয়া গেলে হাসপাতালের কর্তব্যরত ডাক্তার শাহাবুদ্দিননের মেয়ের হাসপাতালের ১০ নং ওয়ার্ড এবং শাহাবুদ্দিনকে হাসপাতালের ০৭নং ওয়ার্ডে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করেন।

বর্তমানে শাহাবুদ্দিন ও তার মেয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। আসামীরা যে কোন সময় আবার হামলা করতে পারে বলে ভুক্তভুগি ও তার পরিবার নিরাপত্তাহীনতার রয়েছে।

মামলার বাদী শাহাবুদ্দিন দ্রুত আসামীদেরকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার জন্য আইন প্রয়োগ কারী সংস্থার প্রতি জোরদাবী জানিয়েছেন।