ত্রিশালে ঝুকির্পূন বেইলি ব্রিজের পাটাতন ভেঙ্গে যান চলাচল বন্ধ

প্রকাশিত: ৩:৪৪ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২৩, ২০২০

মতিউর রহমান সেলিম, ত্রিশাল (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি
ভারি যানবাহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা সত্বেও তিন যুগ আগে ময়মনসিংহের ত্রিশাল-ফুলবাড়ীয়া সড়কের ত্রিশালের পোড়াবাড়ী বাজারে খিরু নদীর উপর নির্মিত স্টিলের বেইলি ব্রিজটির পাটাতন ভেঙ্গে খৈলভর্তি একটি ট্রাক পারাপারের সময় ব্রিজের একপ্রান্তে আটকে যায়। বুধবার বিকেলে ওই ঘটনার পর পরই বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে দুই উপজেলার মানুষ ও সব ধরনের যান চলাচলে। এতে ব্যাপক ভোগান্তির সৃষ্টি হয়।
ত্রিশাল সদর হতে মঠবাড়ী ইউনিয়নের পোড়াবাড়ী বাজার হয়ে উপজেলার মোক্ষপুর ইউনিয়ন সহ ফুলবাড়ীয়া উপজেলার দক্ষিনাঞ্চলসহ টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলায় যাতায়াতে গুরুত্ব বহন করে পোড়াবাড়ী বাজারের খিরু নদীর উপর নির্মিত স্টিলের বেইলি ব্রিজটি। ১৯৮২ সালে ২৪২ ফুট দৈঘ্য ও ১৪ ফুট প্রস্থ ওই বেইলি ব্রিজটি খিরু নদীর উপর নির্মাণ করা হয়। নির্মাণের ১০-১২ বছর যেতে না যেতেই ব্রিজের অনেকগুলো পাটাতনে মরিচা পড়ে ভাঙ্গতে শুরু করে। ভারী যানবাহন চলাচলের সময় পাটাতন ভেঙ্গে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে বেশ কয়েকবার। ঝুঁকিপূর্ণ ব্রিজটির ভেঙ্গে যাওয়া পাটাতন দীর্ঘদিন জোড়াতালি দিয়ে চালানোর ফলে প্রায়ই ঘটতো দুর্ঘটনা। আহতের সংখ্যাও অনেক। বিকল্প কোন ব্যবস্থা না থাকায় ঝুঁকিপূর্ণ ব্রিজ দিয়ে চলাচল করতে হয় দুপারের সাধারণ মানুষ ও শিক্ষার্থীদের। এনিয়ে একাধিকবার দৈনিক স্বজনে সংবাদ প্রকাশিতও হয়েছে।
এরপর উপজেলা প্রশাসন ওই ব্রিজ দিয়ে ভারি যানবাহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করে সাইনবোর্ড ও লাল নিশানা টানিয়ে দিলেও নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে প্রতিদিন চলাচল করছে ভারি যানবাহন। বুধবার বিকেলে একটি খৈলভর্তি ট্রাক ওই ব্রিজ পারাপারের সময় পাটাতন ভেঙ্গে পিছনের চাকা দেবে একপ্রান্তে ট্রাকটি আটকে যায়। এরপর থেকে সব ধরনের যানসহ বন্ধ হয়ে গেছে মানুষের পায়ে হেটে চলাচলের পথ। এতে দুর্ভোগ ও ভোগান্তিতে পড়েছে ত্রিশাল-ফুলবাড়িয়া উপজেলার দুই পাড়ের মানুষ।
মঠবাড়িসহ আশপাশের কয়েকটি ইউনিয়নে সহ¯্রাধিক মাছের ফিসারি থাকায় প্রতিদিন শতশত মাছ ও খাদ্য সামগ্রী বহন করা ট্রাক চলাচল করে ওই ব্রিজ দিয়ে। এছাড়া অন্য যানবাহন তো আছেই। পাটাতন ভেঙ্গে ট্রাক আটকে যাওয়ায় বেকায়দায় পড়েছে দু-পাড়ের ব্যবসায়ি ও সাধারন মানুষ।
স্থানীয়রা জানায়, জীবনের ঝুকি নিয়েই আমরা চলাচল করি এই ব্রিজ দিয়ে। এখন ব্রিজটি ছাড়া দুপারের কয়েক হাজার মানুষের জীবন যাত্রা স্থবির হয়ে যাবে। বছর বছর সংস্কারের পরিবর্তে দ্রুত নতুন একটি ব্রিজ নির্মানের দাবি জানান স্থানীয় এলাকাবাসী।
দুর্ঘটনার ঘটনার পরপরই উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল মতিন সরকার, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান ও প্রকৌশলী মনিরুজ্জামান ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান।
উপজেলা প্রকৌশলী মনিরুজ্জামান জানান, ইতিমধ্যে ওই ব্রিজটি মেরামতের জন্য ২৫ লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়ে টেন্ডার আহবান করা হয়েছে। আশা করি আগামি মাসের শুরুর দিকে কাজ শুরু করা যাবে।
ইউএনও মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, উপজেলা প্রকৌশলীর সঙ্গে কথা বলে মেরামতের বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছি। তবে সাময়িকভাবে মানুষ চলাচলের উপযোগী করার জন্য দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।