ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে চলাচলে উপযোগী করা না হলে ১৫ জানুয়ারী থেকে পরিবহন বন্ধের ঘোষণা

ময়মনসিংহে সংবাদ সম্মেলনে জিলা মটর মটর মালিক সমিতি

প্রকাশিত: ৪:০৫ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ২, ২০২২

স্টাফ রিপোর্টার : ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের গাজীপুর থেকে উত্তরা পর্যন্ত রাস্তা চলাচল উপযোগী করা না হলে আগামী ১৫ জানুয়ারী থেকে পরিবহন যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ করে দেয়া হবে। ময়মনসিংহ প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এ আলিটমেটাম দিয়েছেন ময়মনসিংহ জিলা মটর মটর মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দ।
গাজীপুরের সালনা থেকে টঙ্গী পর্যন্ত ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে স্লথ গতির উন্নয়নে জনদুর্ভোগ নিরসনে অবিলম্বে দৃশ্যমান উদ্যোগ গ্রহণের দাবিতে ময়মনসিংহ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রি ও ময়মনসিংহ জিলা মটর মালিক সমিতির যৌথ আয়োজনে ময়মনসিংহ প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে রবিবার দুপুরে তিনি এ ঘোষণা দেন।
ময়মনসিংহ জিলা মটর মটর মালিক সমিতির সভাপতি কেন্দ্রীয় পরিবহন মালিক সমিতির সহ সভাপতি মমতাজ উদ্দিন মন্তা সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে মমতাজ উদ্দিন মন্তা লিখিত বক্তব্য এসব কথা জানান।

ময়মনসিংহ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি ও এফবিসিসিআইয়ের সহ সভাপতি আমিনুল হক শামীম(সিআইপি) সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, আমলাতান্ত্রিক জটিলতা এবং ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের গাফিলতির কারণে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক এখন মহাদুর্ভোগ। ৩০ মিনিটের পথ কখনো কখনো ৫ ঘন্টারও বেশি সময় লাগে। এই দুর্ভোগ থেকে মুক্তি পেতে এই অঞ্চলের মানুষের গণদাবি হয়ে উঠেছে, পরিবহন মালিকের স্বার্থের দাবির সাথে জনদাবি পুরণে ব্যবসায়ী সংগঠনযুক্ত হয়েছে। এই রাস্তাই আমাদের দুঃখের কারণ, ময়মনসিংহ থেকে জরুরী প্রয়োজনে একজন রোগী নিয়ে ঢাকায় পৌছতে পৌছতে অনেকেই মারা যাচ্ছে। কর্মক্ষেত্রে ঢাকা যেতে মানুষের ৪/৫ ঘন্টায় সময় নষ্ট হচ্ছে।

আমিনুল হক শামীম আরো বলেন এই রাস্তাটির উন্নয়নে ৩ বছর মেয়াদ হলেও তা এখন ৬ বছর চলছে। ৬ বছরে মাত্র ৬৩ ভাগ হয়েছে। ২ হাজার ৩৭ কোটি টাকার উন্নয়ন ব্যয় এখন ৪ হাজার কোটি টাকায় পৌছেছে। তিনি আরো বলেন, আমরা রাতারাতি উন্নয়ন চাইনা, চলাচল উপযোগী চাই। দুর্ভোগ সৃষ্টিকারী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের গাফিলতির কারণে সৃষ্ট জনদুর্ভোগের হাত থেকে এই অঞ্চলের মানুষকে মুক্তি দিতে প্রয়োজনে কার্যাদেশ বাতিল করে নতুন ঠিকাদার নিয়োগ দেয়া হইক।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে মমতাজ উদ্দিন মন্তা  বলেন, জাতির জনকের কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে উন্নয়নশীল দেশগুলোর সাথে পাল্লা দিয়ে দেশ উন্নয়নের শিখরে পৌছে যাচ্ছে। পদ্মা সেতুর মত দুঃসাহসিক প্রকল্প নিজস্ব অর্থায়নে এগিয়ে চলছে। এত উন্নয়নের মাঝেও বৃহত্তর ময়মনসিংহের (ময়মনসিংহ, জামালপুর, নেত্রকোণা, শেরপুর ও কিশোরগঞ্জ) একমাত্র চলাচলের রাস্তা ঢাকা- ময়মনসিংহ মহাসড়ক এই অঞ্চলের মানুষের জন্য মহাদুর্ভোগ। ময়মনসিংহ থেকে গাজীপুরের সালনা পর্যন্ত সোয়া ঘন্টা সময় লাগলেও মাত্র ৩০ মিনিটের পথ সালনা থেকে উত্তরা পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার পথ যেতে থেকে ৫ ঘন্টা পর্যন্ত সময় লাগে। এই রাস্তার কাজ ঢিলেঢালা এগুচ্ছে। খানাখন্দের কারণে গাড়ি চলাচলে অসহনীয় সমস্যা।

 

ময়মনসিংহ জিলা মটর মটর মালিক সমিতির সভাপতি মমতাজ উদ্দিন মন্তা লিখিত বক্তব্যে বলেন, ঢাকা- ময়মনসিংহ হাইওয়েতে প্রতি মিনিটে ৭টি গাড়ি চলে। যা ঘন্টায় ৪২০ এবং ২৪ ঘন্টায় ১০ হাজার ৮০টি। এ সব যানবাহন চলাচলে রাস্তা খারাপের কারণে স্বাভাবিকের চেয়ে প্রতিটি গাড়িতে ২০ লিটার বেশি তেল লাগে। এতে করে ১০ হাজার ৮০টি গাড়িতে ২ লাখ এক হাজার ৬শত লিটার তেল অপচয় হচ্ছে। যা অর্থের হিসাবে ৮০ টাকা লিটার হিসাবে প্রতিদিন এক কোটি ৬১ লাখ ২৮ হাজার টাকা। তেল বাবদ এই টাকা মালিকদের আয় থেকে নষ্ট হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, শুধু তেল খাতে নয়, গাড়ির টায়ার, যন্ত্রাংশ মেরামতসহ বিভিন্ন খরচ আরো অনেকগুনে বেড়ে যাচ্ছে। এতে পরিবহন শিল্পের মালিকগণ মারাত্বকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। অনেকে মালিকগণ গাড়ির কিস্তি পরিশোধে হিমশিম খাচ্ছে পাশাপাশি রাস্তাটির এই বেহাল অবস্থার কারণে রোগী পরিবহনে এম্বোল্যান্স, আমদানি রপ্তানিসহ শিল্প প্রতিষ্ঠানের কাচামাল বহনে বাধা, শিল্প প্রতিষ্ঠানের ক্ষতি ও দ্রব্যমুল্যের উর্দ্বগতি ক্রমেই বেড়ে চলছে।

সংবাদ সম্মেলনে এছাড়া জিলা মটর মালিক সমিতির মহাসচিব মাহবুবুর রহমান, সম্পাদক সোমনাথ সাহা, শ্যামল দত্ত ও ময়মনসিংহ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সহ সভাপতি শংকর সাহা উপস্থিত ছিলেন।