কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে অনিদ্রিষ্টকালের জন্য বিভাগে তালা ঝুঁলিয়ে দিলেন বিক্ষুব্দ শিক্ষার্থীরা

শিক্ষার্থীকে যৌন নিপীড়নের ঘটনায়

প্রকাশিত: ১০:১৪ অপরাহ্ণ, মার্চ ৬, ২০২৪

ত্রিশাল (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি :
শুধু ওই এক শিক্ষার্থীই নন জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষক সাজন সাহার বিরুদ্ধে এবার একাধিক শিক্ষার্থী যৌন নিপীড়নের শিকারের ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে। যৌন নিপীড়ক ওই শিক্ষককে বহিষ্কারের দাবিতে আজ বুধবার আন্দোলনে নামেন বিক্ষুব্দ শিক্ষার্থীরা। বিচার নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত অনিদ্রিষ্টকালের জন্য বিভাগের প্রধান ফটকে তালা ঝুঁলিয়ে দেয় আন্দোলনকারী বিক্ষুব্দ শিক্ষার্থীরা।
কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সাজন সাহার বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের অভিযোগে গত রোববার ওই বিভাগের ৪র্থবর্ষের ভোক্তভোগি এক শিক্ষার্থী, তাকে মধ্যরাতে চা পানের দাওয়াতসহ একাধিক অনৈতিক প্রস্তাবের বেশকিছু স্ক্রিনশট ফেইসবুকে পোস্ট করেন। শিক্ষকের এমন কান্ডে ফুঁসে উঠেন, ওই বিভাগসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। সোমবার বিক্ষুব্দ শিক্ষার্থীরা প্রশাসনিক ভবন অবরোধ করে অবস্থান ও গণস্বাক্ষর কর্মসূচি পালন করেন। ওই ঘটনার বিচার ও বহিষ্কার চেয়ে গত মঙ্গলবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন ওই শিক্ষার্থী। এরপর একে এক মুখ খুলেন যৌন হয়রানির শিকার ৩০ এর অধিক নারী শিক্ষার্থী।
শিক্ষক সাজন সাহার যৌন নিপীড়নের ঘটনাটি মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান রেজওয়ান আহমেদ শুভ্রকে অবগত করেছিলেন ওই ভুক্তভোগি শিক্ষার্থী। কিন্তু মেলেনি কোন প্রতিকার।
একাধিক শিক্ষার্থী যৌন নিপীড়নের শিকারের ঘটনায় ওই শিক্ষকসহ বিভাগীয় প্রধানের বহিষ্কারের দাবিতে বুধবার সকাল থেকে আন্দোলনে নামেন বিক্ষুব্দ শিক্ষার্থীরা। মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগ ঘেরাও করে দীর্ঘসময় অবরুদ্ধ করে রাখেন বিভাগীয় প্রধান রেজওয়ান আহমেদ শুভ্রকে। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সঞ্জয় কুমার মুখার্জীসহ প্রশাসনিক কর্মকর্তারা তাকে নিরাপদে নিয়ে আসেন।
দুপুরের দিকে বিচার নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত অনিদ্রিষ্টকালের জন্য বিভাগের প্রধান ফটকে তালা ঝুঁলিয়ে দেয় আন্দোলনকারী বিক্ষুব্দ শিক্ষার্থীরা। এসময় বিক্ষুব্দ শিক্ষার্থীরা শিক্ষক সাজন সাহা ও বিভাগীয় প্রধান রেজওয়ান আহমেদ শুভ্র’র নাম ফলক খুলে তাতে আগুন ধরিয়ে দেন। পরে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। মিছিলটি ক্যাম্পাসের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিন করে প্রশাসনিক ভবনের সামনে গিয়ে শেষ হয়। বিচার নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
এ ব্যাপারে রেজওয়ান আহমেদ শুভ্র বলেন, ওই শিক্ষার্থীর শুধু মৌখিক অভিযোগের প্রেক্ষিতে, তার যেনো কোন ক্ষতি না হয়, সেজন্য তার ইন্টার্নশিপ-ই চেঞ্জ করে দেই। তাহলে ব্যবস্থা নিলাম না কিভাবে ? তিনি আরো বলেন, অনেকের রাগ-ক্ষোভ রয়েছে আমার প্রতি। সেই রাগ-ক্ষোভে আমাকেও ঘটনার সঙ্গে জড়ানো হচ্ছে। আমিও চাই যৌন নিপীড়কের শাস্তি হোক।