নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক কনফারেন্স শুরু

প্রকাশিত: ৯:২২ অপরাহ্ণ, জুন ৫, ২০২৩

নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় সংবাদদাতা, ত্রিশাল: জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ‌‌2nd International Conference on Technology, Business and Justice towards smart Bangladesh’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক কনফারেন্স শুরু হয়েছে। নেপাল-মালয়শিয়া ও জাপান থেকে আগত বরেণ্য শিক্ষাবিদ-গবেষকদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণ।


সোমবার (৫ জুন) সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরিতে কনফারেন্সের প্রথম অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়। উদ্বোধনী অধিবেশনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মাননীয় শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী এম.পি.। সভাপতিত্ব করেন কনফারেন্সের প্রধান পৃষ্ঠপোষক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. সৌমিত্র শেখর। বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন প্রফেসর ড. দুর্গাদাস ভট্টাচার্য, বিজ্ঞান ও প্রকৌশল অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. উজ্জ্বল কুমার প্রধান, ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মো. রিয়াদ হাসান, রেজিস্ট্রার কৃষিবিদ ড. মো. হুমায়ুন কবীর। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জাপানের ইউনিভার্সিটি অব হাইয়োগোর ড. সিয়োজি কোবাসি, ইউনিভার্সিটি টেকনোলজি মারা মালয়শিয়ার ড. হারটিনি সারিপান ও নেপালের কাঠমান্ডু ইউনিভার্সিটির ড. বিনোদ কৃষ্ণ শ্রেষ্ঠা। স্বাগত বক্তব্য দেন কনফারেন্স আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক প্রফেসর ড. তুষার কান্তি সাহা।
অনুষ্ঠানে অংশ নিতে মাননীয় শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী এম.পি. ক্যাম্পাসে পৌঁছুলে তাকে স্বাগত জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. সৌমিত্র শেখরসহ অন্যরা। এরপর প্রশাসনিক ভবনের সামনের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের প্রতিকৃতিতে ফুলেল শ্রদ্ধা নিবেদন করেন শিক্ষা উপমন্ত্রী। এসময় মাননীয় উপাচার্য প্রফেসর ড. সৌমিত্র শেখরসহ অন্যান্য অতিথিরা উপস্থিত ছিলেন। এরপর শিক্ষা উপমন্ত্রীসহ আমন্ত্রিত অতিথিরা উদ্বোধনী অধিবেশনে যোগদেন।
উদ্বোধনী অধিবেশনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্তর্জাতিক মানের সেমিনার, কনফারেন্স, কনভোকেশন-এ জাতীয় অনুষ্ঠানগুলো হবে কেননা এর মধ্যদিয়ে শিক্ষক,শিক্ষার্থীসহ সকলের এক ধরনের মানসিক পরিবর্তন হয়। যা স্মার্ট বাংলাদেশে স্মার্ট ফিউচারের যে স্মার্ট সিটিজেনের চিন্তার বিষয়গুলো সেগুলোকে আরো বেগবান করবে।
তিনি আরও বলেন, গতানুগতিকতার বাইরে গিয়ে ভিন্ন চিন্তা, সমাধানকেন্দ্রিক চিন্তা, সামষ্টিক চিন্তা এবং শিক্ষার্থীদেরকে নানান বিষয়ের উপর দক্ষ করে তোলা, সফ্ট স্কিলগুলোকে উন্নতি করা সে বিষয়গুলো এধরনের সম্মেলনের মধ্যদিয়ে অর্জন করা যায়, যাতে সকলেই উৎসাহিত হয়। এরমধ্যদিয়ে শিক্ষার্থীদের পরিবর্তন, বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবর্তন, সামগ্রিকভাবে দেশের পরিবর্তন হবে। তাই এ ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করায় নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে আমি সাধুবাদ জানাই।
বক্তব্যে উপমন্ত্রী পড়া লেখার পাশাপাশি নতুন নতুন ধারণা ও জ্ঞান সৃষ্টির লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষার্থী ও গবেষকদের প্রতি আহ্বান জানান।
সভাপতির বক্তব্যে উপাচার্য ড. সৌমিত্র শেখর বলেন, বিশ্বের নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মতো আমরা আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়কে একটি গবেষণামনস্ক বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। এমন একটা পরিবেশ চাই যেখানে জ্ঞানের চর্চা হবে, গবেষণা হবে। সে লক্ষ্য নিয়ে আমরা শিক্ষা, গবেষণা ও উন্নয়ন এই তিনকে মোটো ধরে সামনে এগিয়ে যাচ্ছি।
তিনি আরও বলেন, নতুন জ্ঞান সৃষ্টির প্রতি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের এই অগ্রযাত্রা আগামীতেও অব্যাহত থাকবে। শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও গবেষকদের জন্য প্রতিবছর এ ধরনের আন্তর্জাতিক কনফারেন্স আয়োজনের উদ্যোগ নেওয়া হবে।
কনফারেন্স সম্পর্কে মন্তব্য করতে গিয়ে বিদেশী অতিথিরা বলেন, এ ধরনের কনফারেন্সের মধ্যদিয়ে যে জ্ঞানের সৃষ্টি হয় তা আমাদের সমাজ ও মানব জীবনের বিশাল প্রভাব রেখে থাকে। অত্যন্ত সুষ্ঠু ও সুশৃঙ্খল পরিবেশে আন্তর্জাতিক এই কনফারেন্স আয়োজনের মধ্যদিয়ে নজরুল বিশ^বিদ্যালয় তাদের সক্ষমতার স্বাক্ষর রেখেছে।
উদ্বোধনী অধিবেশনের পর কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার, ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদ ভবনে ও বিজ্ঞান অনুষদ ভবনে প্যারালাল সেশনগুলো পরিচালিত হয়। যেখানে দেশ বিদেশের গবেষকরা তাদের গবেষণা প্রকল্পগুলো উপস্থাপন করেন। এবারের কনফারেন্সে ১৮৩ টি জমা পড়া গবেষণা প্রস্তাবের সারাংশের মধ্যে যাচাই বাছাই করে ৯২টি গবেষণা সারাংশ কনফারেন্সে উপস্থাপনের জন্য নির্বাচিত করা হয়েছে। যা দুইদিন ব্যাপী আয়োজিত কনফারেন্সে বিভিন্ন প্যারালাল সেশনে উপস্থাপন করা হবে। এছাড়া কনফারেন্স শেষে প্রতিটি অনুষদের জন্য দুটি করে বেস্ট পেপার অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হবে।